বাঁ দিক থেকে গোঘাটের বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক, সুশান্ত ঘোষ ও রবীন্দ্রনাথ মাইতি। —ফাইল চিত্র।
রাজ্য জুড়ে শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছে বিরোধী দল বিজেপি। কোথাও আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভোট লুট, কোথাও ছাপ্পা, কোথাও আবার মারধোর করে পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার মতো অভিযোগ করেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু পাল্টা বিজেপির তিন বিধায়কের বিরুদ্ধে ভোটের দিন এলাকায় সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছে তৃণমূলও।
অভিযুক্ত বিধায়করা হলেন, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর থেকে নির্বাচিত বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি, হুগলির খানাকূলের বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ ও গোঘাটের বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক। যদিও পাল্টা বিজেপি বিধায়কেরা একযোগে এই অভিযোগ খণ্ডন করেছেন। ভোটের দিন সকালেই ভগবানপুর বিধানসভায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দু’পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে এলাকায় সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলেন। তৃণমূল অভিযোগ করে, ভগবানপুর-২ ব্লকের অধীন বরোজ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সিআরপিএফের মদতে একের পর এক বুথ লুট করে এলাকায় সন্ত্রাসের পরিস্থিতি কায়েম করেছে বিজেপি। সঙ্গে এক যুবককে রবীন্দ্রনাথ মারধোর করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়।
জবাবে বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘তৃণমূল রাজনৈতিক দল নয়, সন্ত্রাসবাদী দল। এই তৃণমূল পরিচালিত সরকার আসলে তালিবানি কায়দার সরকার। যাঁরা অভিযোগ করছেন তাঁদের অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই। ভোটের দিন বেলা বাড়তেই ওদের সন্ত্রাস বাড়ছিল। আমরা বিজেপি কর্মীরা যখন রুখে দাঁড়াই, তখন একজন নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিকে দিয়ে একটি ভিডিয়ো করে প্রকাশ করা হয়। আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে ওই ভিডিয়োতে।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত বলেই আমরা মনে করি। কারণ ৩৫৫ ধারা প্রয়োগ করা না হলে এই রাজ্যকে আর বাঁচানো যাবে না।’’
হুগলী জেলার দুই বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে আবার সন্ত্রাসের অভিযোগ এনেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন। তাঁর দাবি ছিল, ‘‘আমি নিজে আরামবাগ শহরে বিজেপির হাতে তৃণমূল কর্মীদের আক্রান্ত হতে দেখেছি। আমাদের ন’জন কর্মীর অবস্থা বেশ খারাপ, এক জনের তো আবার চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক ও সুশান্ত ঘোষ পরিকল্পিত ভাবে এই সন্ত্রাস করেছেন।’’
জবাবে গোঘাটের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘তৃণমূলের এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। ভোটের দিন যে ভাবে আমাদের আটকানোর চক্রান্ত করা হয়েছে তা নিন্দনীয়। আমি পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীর এজেন্ট ছিলাম। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করিয়ে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলের গুন্ডারা আমাকে আটকে রেখেছিল।’’ উল্লেখ্য, গোঘাট পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি প্রার্থী অশ্বিনী দে-র নির্বাচনী এজেন্ট হয়েছিলেন বিধায়ক। এই নির্বাচনে আবার বিশ্বনাথের স্ত্রী মিঠুমায়া কারক সাওড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ নম্বর আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ এনেছিল তৃণমূল। যদিও বিধায়ক সেই অভিযোগও অস্বীকার করেছেন।
অভিযুক্ত আরও এক বিধায়ক সুশান্ত বলেন, ‘‘আমি বা আমরা কাউকে মেরেছি যদি এমন কোনও প্রমাণ বা ভিডিয়ো থাকে তা যেন তৃণমূল তৃণমূল জনসমক্ষে প্রকাশ করে। মিথ্যে কথা বলে বেশিদিন চালানো যায় না। পুলিশ প্রশাসনকে ঠুঁটো জগন্নাথ বানিয়ে খানাকুল জুড়ে সন্ত্রাস করেছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। আর ৯৫ শতাংশ বুথে লাঠি হাতে একজন করে পুলিশ ছিল। কেন শান্তিপূর্ণ ভোট করতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহার করা হল না, আগে রাজ্য সরকার ও তৃণমূল সেই জবাব দিক’’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy