‘অবৈধ নির্মাণের’ প্রতিবাদ করতে গিয়ে মার খেলেন তৃণমূলের কাউন্সিলর এবং তাঁর ছেলে। যাঁর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ, তিনি বিজেপি সমর্থক বলেই দাবি। রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের তাম্রলিপ্ত পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। তমলুক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ‘নিগৃহীত’ কাউন্সিলর। পাল্টা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন অভিযুক্তও। তাঁর দাবি, পুরসভা থেকে জায়গা লিজ় নিয়ে দোকান বানাচ্ছিলেন তিনি। সেই নির্মাণ ভাঙা পড়ায় তিনি প্রতিবাদ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি জমি দখল করে মহাদেব মণ্ডল নামে এক চা বিক্রেতা দোকান বানাচ্ছেন, এই খবর পেয়েই নিজের ছেলেকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অলোক সাঁতরার। অভিযোগ, কাউন্সিলর দোকান তৈরিতে বাধা দেওয়ায় মহাদেব এবং তাঁর পরিবার দলবল এনে কাউন্সিলার ও তাঁর ছেলের উপর চড়াও হন। তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয়। এর পরেই ওই কাউন্সিলর ও তাঁর ছেলে তমলুক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অলোক বলেন, ‘‘অবৈধ নির্মাণের কাজে বাধা দিতে যাওয়ায় আমার উপরে হামলা চালানো হয়। বাড়ির মেয়েদের এগিয়ে দেওয়া হয় আমাদের উপর হামলা করার জন্য। আমরা অসহায় হয়ে মার খেয়েছি। আমার ছেলেকে বেধড়ক মারধর করেছে। আমার জামাকাপড় ছিঁড়ে দিয়েছে। আমি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ জানানোর পর পুলিশ গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে এ ভাবে দিনের আলোয় পুরসভার জায়গা জবরদখল করা হচ্ছে কোন সাহসে, তা ভেবেই অবাক হচ্ছি আমরা।’’
খবর পেয়েই তাম্রলিপ্ত পুরসভার চেয়ারম্যান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে ‘অবৈধ নির্মাণ’ কাজ বন্ধ করে দেন। যদিও মহাদেবের ছেলে গৌতম মণ্ডলের দাবি, ‘‘আমার চায়ের দোকানের জন্য পুরসভা থেকে পাঁচ বছরের জন্য জমি লিজ় নিয়েছি। সেই জায়গার পাশে একটি বসার জায়গা বানাচ্ছিলাম। আজ কাজ চলাকালীন আচমকা কাউন্সিলর ও তাঁর ছেলে এসে কাজের জায়গায় জল ঢেলে দেয়। আমার মা বাধা দিতে গেলে তাঁকে মারধর করা হয়। নির্মাণ কাজটিকেও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমরা এই ঘটনার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাচ্ছি।”
পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলার শবরী চক্রবর্তীর মতে, ‘‘অবৈধ নির্মাণ যদি কেউ করে থাকেন, তার রাজনৈতিক পরিচয় কোনও ভাবেই প্রাধান্য পাবে না। সেই নির্মাণ কাজে বাধা দেওয়ায় এক জন কাউন্সিলারের উপর হামলা চালানোর ঘটনাকে সমর্থন করতে পারছি না। যে দলেরই সমর্থক হোন না কেন, এ ভাবে অবৈধ নির্মাণের পাশাপাশি কাউন্সিলারের উপর হামলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’