রাজ্যসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট মিটতে না মিটতেই রাজ্যসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল শাসক-বিরোধী দু’পক্ষই। শনিবার শেষ হয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব। রবিবার থেকেই তৃণমূল এবং বিজেপি শুরু করে দিচ্ছে রাজ্যসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে রাজ্যসভা নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব। পঞ্চায়েত ভোটের ব্যস্ততার কারণে এই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারেনি তৃণমূল-বিজেপি দু’পক্ষই। কিন্তু ভোট মিটে যাওয়ার পরের দিন রবিবার হওয়া সত্ত্বেও বিধানসভায় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল পরিষদীয় দল। রবিবার দলের বিধায়কদের একাংশকে প্রস্তাবক হিসাবে মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছে। যাঁরা রবিবার আসতে পারবেন না, তাঁদের ১২ জুলাই, বুধবার বিধানসভায় এসে মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করে যেতে হবে। বিধানসভা সূত্রে খবর, ওই দিনই তৃণমূল প্রার্থীরা নিজেদের মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। মনোনয়নপত্র তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং বিধানসভার উপ মুখ্য সচেতক তাপস রায়কে। তাঁরাই বিধায়কদের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে মনোনয়নপত্র দাখিল করার কাজ সম্পন্ন করবেন।
অন্য দিকে, বিজেপির তরফে মনোনয়নপত্র তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল গত সপ্তাহ থেকেই। কিন্তু তাতে প্রস্তাবক হিসাবে গেরুয়া শিবিরের বিধায়কদের স্বাক্ষর পর্ব শুরু হবে সোমবার থেকে। ইতিমধ্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দফতর থেকে বিজেপি বিধায়কদের বার্তা পাঠানো হয়েছে। বিজেপি পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, সোমবার সকাল থেকে বিজেপি বিধায়কেরা বিধানসভা এসে মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক হিসাবে স্বাক্ষর করবেন। সোমবার মনোনয়নপত্র তৈরির জন্য বিধানসভায় আসতে পারেন শুভেন্দুও। প্রাথমিক ভাবে তারা মনোনয়নপত্র তৈরির যাবতীয় কাজ সেরে ফেলতে চাইছে। দিল্লি থেকে প্রার্থীর নাম ঘোষণা হলেই যাতে বিজেপির রাজ্যসভা প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে পারে— সেই প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে। বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, সোমবারই গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে পারেন। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ঘোষণার ওপর। ১১ জুলাই পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল ঘোষণার কারণে বিজেপি বিধায়করা নিজেদের বিধানসভায় থাকতে চাইছেন। তাই তাঁরা চান দ্রুত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে সোমবারে যাতে দল মনোনয়ন জমা দেওয়ার সুযোগ করে দেয়।
আগামী অগস্ট মাসে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৬টি রাজ্যসভার আসন খালি হচ্ছে। আর পদত্যাগ করায় আরও একটি রাজ্যসভা আসনে উপনির্বাচন হবে। সাধারণ রাজ্যসভা নির্বাচনে তৃণমূলের পাঁচটি আসনে জয় নিশ্চিত, উপনির্বাচনে তাদের প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনাও প্রায় নিশ্চিত বলেই ধরে নেওয়া যায়। তৃণমূলের পক্ষে মেয়াদ শেষ হচ্ছে রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন, রাজ্যসভার উপদল নেতা সুখেন্দুশেখর রায়, দোলা সেন, সুস্মিতা দেব ও শান্তা ছেত্রীর। আর প্রবীণ কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের মেয়াদও শেষ হচ্ছে এই অগস্টেই। যে হেতু পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বর্তমানে কংগ্রেসের কোনও বিধায়ক নেই, তাই প্রদীপ ভট্টাচার্যের আর দ্বিতীয় বারের জন্য রাজ্যসভায় যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বদলে বিজেপি এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গ থেকে কোনও রাজ্যসভার সাংসদ পাবে। তৃণমূলের তরফে মোট ছয’টি মনোনয়নপত্র তৈরি হওয়ার কথা। পাঁচটি রাজ্যসভার সাধারণ নির্বাচনের জন্য, অন্যটি লুইজিনোহ ফেলিরোর ছেড়ে দেওয়া আসনের উপনির্বাচনের জন্য। অতিরিক্ত কোনও মনোনয়ন জমা না পড়লে রাজ্যসভা নির্বাচনে ভোট হবে না। ত্রুটিমুক্ত মনোনয়ন জমা দিলেই স্ক্রুটিনি পর্বের পরেই প্রার্থীদের জয়ী বলে ঘোষণা করে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy