(বাঁ দিকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসুস্থতাকে ‘ব্যঙ্গ’ করে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, এমনই অভিযোগ তুলে শুক্রবার পথে নামছে তৃণমৃল। পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরির সভা থেকে করা শুভেন্দুর একটি বক্তব্যকেই হাতিয়ার করেছে বাংলার শাসকদল। শুক্রবার সেই খেজুরিতেই প্রতিবাদ মিছিল এবং সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঘাসফুল শিবির। তৃণমূলের দাবি, এক জন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে শুভেন্দুকে।
শুক্রবার ভোটের প্রচারে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত খেজুরিতে একটি জনসভায় যোগ দেন শুভেন্দু। সেই কেন্দ্রে এ বার বিজেপি প্রার্থী করেছে শুভেন্দুর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীকে। তাঁর সমর্থনে আয়োজিত এক জনসভা থেকে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘মাথা ঘুরছে, লো প্রেসার, ধপ ধপ করে পড়ে যাচ্ছে। পড়া শুরু হয়েছে উপর থেকে, নীচ অবধিও পড়া শুরু হবে।’’ যদিও শুভেন্দু সভা থেকে সরাসরি কারও নাম নেননি। তবে তৃণমূলের দাবি, অসুস্থ মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করতে গিয়েই কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু।
বিরোধী দলনেতার ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের প্রতিবাদে সমালোচনা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। সেই সঙ্গে শনিবার প্রতিবাদ মিছিল এবং সভার আয়োজন করা হয়েছে খেজুরিতে। বিকেলের এই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি ছাড়াও এই কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকার কথা কাঁথির তৃণমূল প্রার্থী উত্তম বারিকেরও। ঘাসফুল শিবিরের দাবি, শুভেন্দুকে তাঁর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর চোট পাওয়ার পর পরই তাঁর সুস্থতা কামনা করে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও মমতার সুস্থতা কামনা করেছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতার ওই মর্মে কোনও পোস্ট এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত দেখা যায়নি।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল বলেন, ‘‘দল আমাকে খেজুরির কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।’’ তার পরই শুভেন্দু এবং বিজেপিকে নিশানা করে কুণাল বলেন, ‘‘আমরা মানুষের উন্নয়নের কথা বলি। ওরা যত বুঝতে পারছে ওদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, তত এই ধরনের আক্রমণ করছে। মুখ্যমন্ত্রী পড়ে গিয়েছেন, কপাল থেকে রক্ত পড়ছে। সেটাকে ‘লো প্রেসার’ বলে কটাক্ষ করছে। বয়স কারও থেমে থাকে না। বয়স নিয়ে কটাক্ষ করবেন না। এই বয়সে মুখ্যমন্ত্রী সক্রিয় গতিশীল আপনার দলে ক’জন আছে? সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ ধরনের মন্তব্য করছে।’’ কুণাল বিষয়টিকে ‘নিন্দনীয়’ বলেও মন্তব্য করেছেন।
কুণাল ছাড়াও অন্য তৃণমূল নেতানেত্রীরাও শুভেন্দুকে আক্রমণ করেছেন। রাজ্যের মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘আমি একটা ভিডিয়ো দেখলাম যেখানে শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রীকে যে ভাবে আক্রমণ করেছেন, এক জন মহিলা হিসাবে ধিক্কার জানাই। অসুস্থ মানুষকে নিয়ে এমন মন্তব্য করা মানবিকতা বোধের অভাব। মহিলাদের সম্মান করতে জানেন না শুভেন্দু।’’ তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ও শুভেন্দুর মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের বাড়িতেই পড়ে গিয়ে কপালে এবং নাকে চোট পান মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময়ে তাঁর বাড়িতেই ছিলেন অভিষেক। উত্তরবঙ্গ সফর সেরে কালীঘাটে গিয়েছিলেন তিনি। অভিষেকই নিজের গাড়িতে মমতাকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই মমতার ক্ষতস্থানে সেলাই করে ড্রেসিং করে দেন চিকিৎসকেরা। বর্তমানে তিনি চিকিৎসকদের পরামর্শে কালীঘাটের বাড়িতে বিশ্রামে আছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy