জেলাগুলিতে সভানেত্রী পদেও ব্যাপক রদবদল করা হল। — ফাইল ছবি।
সাংগঠনিক জেলাগুলির সভাপতি এবং চেয়ারম্যান পদে আগেই বদল এনেছিল তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এ বার ওই জেলাগুলিতে সভানেত্রী পদেও ব্যাপক রদবদল করা হল। প্রকাশিত তালিকায় দেখা যাচ্ছে, বিধায়ক বা সাংসদের পরিবর্তে আস্থা রাখা হয়েছে নতুনদের উপর। প্রায় ৩০টিরও বেশি সাংগঠনিক জেলার দায়িত্বে নতুন মুখ আনা হয়েছে।
তবে সাধারণ ভাবে শাখা সংগঠন থেকে ভবিষ্যতের ‘নেত্রী’ তৈরি হওয়ার দৃষ্টান্ত খুব বেশি দেখা যায় না। যেটুকু যা উদাহরণ আছে, তা-ও বামপন্থী দলে। অবামপন্থী দলে যাঁরা নেত্রী হয়েছেন— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সুষমা স্বরাজ, নির্মলা সীতারামন, জয়ললিতা, মায়াবতী অথবা হালের মহুয়া মৈত্র, কেউই তাঁদের দলের মহিলা শাখার প্রধান ছিলেন না। সাম্প্রতিক কালে শশী পাঁজার মতো যাঁরা রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছেন, তাঁরাও দলের মহিলা সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন না। সরাসরিই রাজনীতিতে এসেছেন এবং ভোটে দাঁড়িয়ে জিতেছেন। সেই সূত্রেই এই প্রশ্ন উঠেছে যে, মহিলা শাখা সংগঠন বা জেলার দায়িত্বে মহিলাদের আনা হলেও পরবর্তী কালে কেন তাঁদের ‘বৃহত্তর’ ক্ষেত্রে দায়িত্ব দেওয়া যাচ্ছে না। তা হলে কি মহিলাদের ওই পদগুলি শুধুমাত্র ‘আলঙ্কারিক’?
তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য তা মানতে রাজি নন। তাঁদের মতে, আগের চেয়ে অনেক বেশি মহিলাকে দায়িত্বে আনা হয়েছে। এটি তাঁদের ভবিষ্যতে বৃহত্তর দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তৈরি করার প্রক্রিয়ারই অঙ্গ। এক নেতার কথায়, ‘‘এঁদের মধ্যে অনেককেই ভবিষ্যতে দায়িত্বশীল পদের জন্য বিবেচনা করা হবে। সেই কারণেই তাঁদের প্রাথমিক ভাবে জেলার দায়িত্বে আনা হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, এতদিন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দলের বিধায়ক বা সাংসদদেরই জেলা সভানেত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হত। কিন্তু এ বার তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত মাত্র তিন জন প্রতিনিধিকেই ওই পদ দেওয়া হয়েছে। সাঁকরাইলের বিধায়ক প্রিয়া পাল হয়েছেন হাওড়া গ্রামীণের সভাপতি। দক্ষিণ কলকাতার সাংগঠনিক সভানেত্রীর পদে দ্বিতীয় বার বসানো হয়েছে কলকাতার ৯১ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বরো কমিটির চেয়ারপার্সন চৈতালি চট্টোপাধ্যায়কে। হাওড়া সদরের সভাপতি হয়েছেন নন্দিতা চৌধুরী। তিনি হাওড়া দক্ষিণের বিধায়ক প্রয়াত সাংসদ অম্বিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ে।
মহিলা শাখা সংগঠন ছাড়াও উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের ও মালদহের পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটির নাম ঘোষণা করেছেন তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্ব। মালদহের ১৮টি ব্লকের মূল সংগঠনের পাশাপাশি যুব, মহিলা ও শ্রমিক সংগঠনের সভাপতিদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের ১২টি ব্লকের মূল সংগঠনের পাশাপাশি শাখা সংগঠনের ব্লক স্তরের পদাধিকারীদেরও নাম ঘোষণা করেছে দল। উত্তর দিনাজপুরেও ১৪টি ব্লকে পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দার্জিলিং জেলায় সর্ব স্তরের পদাধিকারীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, আগামী দিনে আরও ২৯টি জেলা ও ব্লক সংগঠনের পদাধিকারীর নাম ঘোষণা করা হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসে বিভিন্ন জেলার তৃণমূল নেতৃত্বর সঙ্গে ধারাবাহিক ভাবে বৈঠক করছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকের পরেই ব্লক কমিটির নাম ঘোষিত হয়েছে। এ বার একে একে রাজ্যের সব সাংগঠনিক পদাধিকারীর নাম ঘোষণা করা হবে। তার পরেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নতুন নিযুক্ত পদাধিকারীদের বার্তা দেওয়া হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy