লাভলি মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলি মৈত্রকে তাঁর সাম্প্রতিক একটি মন্তব্যের জন্য সতর্ক করলেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। সোমবার আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে সোনারপুরে একটি অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন লাভলি। সেখানেই তিনি বিরোধীদের উদ্দেশে ‘বদলা নেওয়ার’ হুঁশিয়ারি দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই দলের বিধায়ককে তাঁর মন্তব্যের বিষয়ে সতর্ক করলেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তৃণমূল সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
ওই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বিধায়ক লাভলির কর্মপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে গত কয়েক মাস ধরেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে একাধিক অভিযোগ জানাচ্ছিলেন সোনারপুরের তৃণমূল কর্মীরা। এই বিষয়েও লাভলিকে সতর্ক হতে বলেছে দল। সোমবার সোনারপুরের আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে হওয়া অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে লাভলি বলেছিলেন, “বদল তো ২০১১-তে হয়েছিল। ২০২৪-এ বদলা হবে।” এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে যদি আঙুল কেউ তোলে, সেই আঙুল কী ভাবে নামাতে হয়, আমরা খুব ভাল ভাবে জানি।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এবং সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে লাভলি এ-ও দাবি করেন যে, বদলা না নেওয়ার কারণেই তাঁরা এখনও ঘুরে বেড়ান। মঙ্গলবার লাভলির মন্তব্যের বিরুদ্ধে সোনারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সায়ন।
লাভলির এই মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব হয় বিরোধী দলগুলি। মুখ্যমন্ত্রীর ‘ফোঁস’ পরামর্শের ফলশ্রুতিতেই শাসকদলের জনপ্রতিনিধিরা এই ধরনের মন্তব্য করছেন কি না, সেই প্রশ্নও তোলেন বিজেপি এবং সিপিএমের নেতারা। প্রসঙ্গত, আরজি কর-কাণ্ডের আবহে দলের একাধিক নেতা-কর্মীর ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ মন্তব্য নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে রাজ্যের শাসকদলকে। সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের তৃণমূল নেতা অতীশ সরকার ‘মা-বোনেদের ছবি বিকৃত করে টাঙানোর’ হুঁশিয়ারি দিয়ে বিতর্কে জড়ান। ‘মা-বোনেদের সম্মান, আমাদের সম্মান’ লেখা ব্যানারের সামনে দাঁড়িয়েই তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমরা যদি ফোঁস করি, আপনার বাড়ির মা-বোনদের কুৎসা রটিয়ে যদি দরজায় টাঙিয়ে দিয়ে আসি, তা হলে সেই পোস্টার খুলতে পারবেন না। ওই দিন আর বেশি দূরে নেই। আমি এখানে দায়িত্ব নিয়ে বলে গেলাম।’’
তবে এই ধরনের মন্তব্য দল যে বরদাস্ত করবে না, তার ইঙ্গিত দিয়ে সোমবারই অতীশকে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। এ বার সতর্ক করা হল বদলার হুমকি দিয়ে বিতর্কে জড়ানো বিধায়ক লাভলিকে। উল্লেখ্য, মেয়ো রোডে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সমাবেশ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘যে আপনাকে রোজ কামড়াচ্ছে, তাকে কামড়াবেন না। কিন্তু ফোঁস তো করতে পারেন।’’ বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, এই মন্তব্যই তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের কুমন্তব্য করতে প্ররোচনা দিচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy