Advertisement
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Tigress Zeenat

ছাগলের টোপেও কাবু হল না জ়িনত! ঝাড়খণ্ড ঘুরে নিজেই ফিরছে ওড়িশায়, হাঁফ ছেড়ে বাঁচল ঝাড়গ্রাম

এ যাত্রায় রেহাই পেতে চলেছে ঝাড়গ্রাম! ওড়িশা থেকে বেরিয়ে আসা প্রাপ্তবয়স্ক বাঘিনী ‘জ়িনত’ ঝাড়খণ্ডের জঙ্গল ঘুরে শেষ পর্যন্ত আর ঝাড়গ্রামের দিকে পা বাড়াল না। তার অভিমুখ এখন ওড়িশার দিকেই। তেমনই খবর বন দফতর সূত্রে।

ওড়িশায় ফিরে যাচ্ছে বাঘিনি ‘জ়িনত’।

ওড়িশায় ফিরে যাচ্ছে বাঘিনি ‘জ়িনত’। —প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:৩৭
Share: Save:

এ যাত্রায় রেহাই পেতে চলেছে ঝাড়গ্রাম! ওড়িশা থেকে বেরিয়ে আসা প্রাপ্তবয়স্ক বাঘিনী ‘জ়িনত’ ঝাড়খণ্ডের জঙ্গল ঘুরে শেষ পর্যন্ত আর ঝাড়গ্রামের দিকে পা বাড়াল না। তার অভিমুখ এখন ওড়িশার দিকেই। তেমনই খবর বন দফতর সূত্রে।

বছর সাতেক আগে একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার লালগড়ের জঙ্গলে ঢুকে পড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল গোটা ঝাড়গ্রামে। পরে একদল শিকারির বল্লম আর টাঙ্গির ঘায়ে প্রাণ গিয়েছিল ওড়িশার সিমলিপালের জঙ্গল থেকে আসা সেই বাঘটির। ওড়িশা থেকে সম্প্রতি জ়িনতও ঝাড়খণ্ডের জঙ্গলে হাজির হওয়ায় সেই পুরনো আতঙ্ক ফিরে এসেছিল ঝাড়গ্রামের ঝাড়খণ্ড সীমানায়। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, জ়িনত হয়তো ঘুরতে ঘুরতে ঝাড়গ্রামের জঙ্গলে ঢুকে পড়বে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হচ্ছে না বলেই খবর বন দফতর সূত্রে। ওই সূত্র জানিয়েছে, ঝাড়গ্রাম সীমান্ত থেকে ক্রমেই বাড়ছে জ়িনতের দূরত্ব। জ়িনতের গলায় রেডিয়ো কলার থাকায় জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে তার গতিবিধিতে নজর রাখা হচ্ছে। শনিবার রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর, এ রাজ্যের সীমান্ত থেকে সে ১৮-২০ কিলোমিটার দূরে। ফলে আপাতত হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন ঝাড়গ্রামবাসী।

বন দফতর সূত্রে খবর, জ়িনত সিমলিপালের ব্যাঘ্র প্রকল্পের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকেই এসেছে। অনুমান, সিমলিপাল থেকে গুরবান্দা হয়ে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডে পৌঁছে গিয়েছে সে। কয়েক দিন ধরে তাকে জামশেদপুর বন বিভাগের চাকুলিয়া রেঞ্জের জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতেও দেখা গিয়েছে। এলাকায় কিছু গবাদি প্রাণীর দেহাবশেষ দেখে অনুমান, বাঘের হানাতেই তারা মারা পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তে কড়া প্রহরা বসানো হয়েছিল রাজ্য বন দফতরের তরফে। রাত জেগে পাহারা দিচ্ছিলেন বনকর্মীরা। বন দফতর সূত্রে খবর, সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্মীরাও জ়িনতকে কাবু করার চেষ্টা করেছিলেন। কখনও ছাগলের টোপ দিয়ে, কখনও গভীর জঙ্গলে খাঁচা বসিয়ে, কখনও আবার মহিষ গাছে বেঁধে বাঘিনীকে বন্দি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সব কিছুতেই তাঁরা ব্যর্থ। এখন দেখা যাচ্ছে, জ়িনত নিজেই ফিরে যাচ্ছে ওড়িশার দিকে।

বন দফতর সূত্রে খবর, গত ১৫ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের তাডোবা-আন্ধারি ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে তিন বছরের জ়িনতকে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে (টাইগার রিজ়ার্ভ, সংক্ষেপে বা এসটিআর) আনা হয়েছিল। কয়েক দিন ঘেরাটোপে রেখে পর্যবেক্ষণের পরে রেডিয়ো কলার পরিয়ে ২৪ নভেম্বর তাকে সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল। তার পরেই ঝাড়খণ্ডের দিকে হাঁটা দেয় জ়িনত।

যদিও বাঘের এ ভাবে ভিন্‌রাজ্যের জঙ্গলে বিচরণ করা অস্বাভাবিক নয় বলেই জানাচ্ছেন প্রাণী বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের বক্তব্য, নতুন জায়গায় ছাড়া হলে বাঘ বা বাঘিনী সাধারণত নিজের বিচরণক্ষেত্র চিহ্নিত করে নেয়। এমন এলাকা, যেখানে পর্যাপ্ত শিকার ও পানীয় জল পাওয়া যাবে। এ জন্য দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে তারা। তার পর ৩০-৪০ কিলোমিটার বৃত্তাকারে নিজের এলাকা তৈরি করে নেয়। অনুমান, এ ক্ষেত্রেও তেমনই ঘটছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Jharkhand Tiger
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy