Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Adenovirus

অ্যাডিনোভাইরাসের বলি আরও ৩ শিশু, তবে কমছে সঙ্কটাপন্নের সংখ্যা, গরমেই কি কাবু ভাইরাস?

শিশু রোগ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যে সমস্ত বাচ্চা ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে, তারা ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে। তবে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন শিশুদের মধ্যে এখনও মৃত্যু ঘটছে।

picture of a child.

অসুস্থ শিশুকে নিয়ে হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৩ ০৬:০৪
Share: Save:

গরম পড়তে শুরু করেছে। তাতেই ভাইরাস সংক্রমণের দাপট কমার আশা দেখছেন চিকিৎসকেরাও। তবে আপাতত রাজ্যে জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে অসুখে শিশু মৃত্যুর ঘটনা অব্যাহত। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত শুধু বি সি রায় শিশু হাসপাতালে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।

শিশু রোগ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যে সমস্ত বাচ্চা ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে, তারা ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে। তবে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন শিশুদের মধ্যে এখনও মৃত্যু ঘটছে। শহরের এক চিকিৎসকের কথায়, “নতুন করে সঙ্কটাপন্ন রোগী আসার সংখ্যা কমেছে। তাই, আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলেই আশা করছি। তত দিনে ক্রিটিক্যাল কেয়ারের রোগীর সংখ্যাও কমবে। তাতে মৃত্যুও কমবে।” বেসরকারি সূত্রের খবর, গত ১ জানুয়ারি থেকে এ দিন পর্যন্ত শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে (অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন) রাজ্যে মৃত শিশুর সংখ্যা ৮২। তাদের মধ্যে কয়েক জন অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ শুধু অ্যাডিনোর জন্য হচ্ছে তেমন নয়। যে কোনও ভাইরাস সংক্রমণেই তা হতে পারে। তাই সকলেই যে অ্যাডিনোতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে, তেমনটা বলা ঠিক নয়। আবার, বেশ কয়েক জনের মারাত্মক আনুষঙ্গিক অসুস্থতাও (কোমর্বিডিটি) ছিল।”

শুক্রবার রাতে বি সি রায় হাসপাতালে মৃত্যু হয় বিরাটীর গৌরীপুরের বাসিন্দা ৬ মাসের এক শিশুর। সূত্রের খবর, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ভেন্টিলেশনে ছিল শিশুটি। তবে ভাইরাল প্যানেল পরীক্ষায় সে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানা যায়নি। ওই দিন মৃত্যুর পরে ডেথ সার্টিফিকেটে কারণ হিসাবে ‘সিভিয়র নিউমোনিয়া’র কথা লেখা হয়েছে। এর পরে এ দিন সকালে কল্যাণীর ১১ মাসের এক শিশুপুত্রের মৃত্যু হয়। তার পরে হাতিয়ারার বাসিন্দা দুই বছরের এক শিশুকন্যার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সে ভর্তি হয়েছিল। এ দিন সকালে বি সি রায় শিশু হাসপাতাল পরিদর্শনে যান স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী। তিনি বলেন, “প্রতি দিনই সামগ্রিক পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে।”

গরমের প্রকোপ বাড়তে শুরু করায় রোগীর সংখ্যা কমলেও, শিশুদের দিকে কড়া নজর রাখার কথা বলছেন চিকিৎসকেরা। ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের প্রধান চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি বলেন, “হাসপাতালের বহির্বিভাগেও ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী কমেছে। হাসপাতালে ভর্তিও কিছুটা কমেছে। তবে মনে রাখতে হবে, যারা ভেন্টিলেশনে বা ক্রিটিক্যাল কেয়ারে ছিল, তাদের আগামী এক বছর খুব কড়া নজরে ও সাবধানে রাখতে হবে।” কাশি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমলেও, একটু বড় বাচ্চাদের একাংশের মধ্যে টানা তিন-চার দিন তীব্র জ্বরের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। কলকাতা মেডিক্যালের শিশু রোগ চিকিৎসক দিব্যেন্দু রায়চৌধুরীর কথায়, “ওই সব ক্ষেত্রে শুধু জ্বরটাই থাকছে। কোনও কাশি বা সর্দি থাকছে না। তবে হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছে না। তাই, এই সময় জ্বর বা অন্য যে কোনও উপসর্গ দেখা গেলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Adenovirus Death child
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy