সোমবার দিনভর বালির বস্তা ফেলে জল আটকানোর চেষ্টা চলল দুর্গাপুর ব্যারাজে। ছবি: বিকাশ মশান
তিন দিন পার। দুর্গাপুর ব্যারাজের ক্ষতিগ্রস্ত লকগেট সারাইয়ের কাজে হাত পড়ল না সোমবারেও। কারণ, ব্যারাজের সমস্ত জল বার করা যায়নি। ফলে, দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) কর্মী-আধিকারিকেরা গেটটি সারানোর জন্য যন্ত্রপাতি নিয়ে তৈরি থাকলেও, কাজ শুরু করতে পারেননি। এরই মধ্যে দুর্গাপুর শহরে জলের সঙ্কট তৈরি হচ্ছে বলে দাবি বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের। জলাভাবের প্রভাব পড়ছে লাগোয়া জেলা বাঁকুড়াতেও।
পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে এ দিন ডিএসপি-র দায়িত্বপ্রাপ্ত সিইও এমভি কামালকর বলেন, ‘‘যত তাড়াতাড়ি সমস্যা মেটে, সে জন্য যা করার, তা করবে ডিএসপি।’’ জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘জল সরবরাহের জন্য সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে। আরও দু’-তিন দিন যদি এই পরিস্থিতি চলে, সে কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’
শনিবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ ব্যারাজের ৩১ নম্বর লকগেট বেঁকে জল বেরোতে শুরু করে। মেরামতির জন্য আরও পাঁচটি গেট খুলে ব্যারাজের সব জল বার করে দেওয়া শুরু হয়। ক্ষতিগ্রস্ত গেটের কাছে পৌঁছতে এবং জলের প্রবাহ অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে শনিবার রাত থেকে বালির বস্তা ফেলা শুরু হয়। রবিবার সারা দিন সে কাজ চলেছে। সেচ দফতরের কর্তারা আশা করছিলেন, সোমবার সকালের
মধ্যে তা শেষ করা যাবে। কিন্তু রাত পর্যন্ত তা হয়নি।
সেচ দফতর সূত্রের দাবি, সমস্যা বেড়েছে জলের স্রোত ও গেটের সামনে নদীখাতের গভীরতার কারণে। জলের প্রধান খাতটি বইছে ৩১ নম্বর ও তার আশপাশের গেটগুলি দিয়েই। এই অংশটি নদীর মাঝের অংশের চেয়ে নিচু। চার পাশে বালির বাঁধ দেওয়ায় জলের স্রোত বাড়ছে। তাতে বালির বস্তা সরে গিয়ে কাজের গতি কমছে। সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় সিংহ জানান, বাঁধ দেওয়া শেষ হলে, গেট মেরামত শুরু করা যাবে। লকগেটটি সারাতে পুরু ইস্পাতের চাদর, ঝালাইয়ের যন্ত্র-সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন ডিএসপি-র ইঞ্জিনিয়ার, প্রযুক্তিবিদ ও কর্মীরা। কিন্তু রাত পর্যন্ত তাঁরা কাজে হাতদিতে পারেননি।
কাজে যত সময় লাগছে, জল নিয়ে তত আশঙ্কা বাড়ছে দুর্গাপুরে। এ দিন জলাভাবের অভিযোগে শহরের কোথাও কাউন্সিলরের স্বামীকে ঘিরে বিক্ষোভ, কোথাও পুরসভার পাঠানো ট্যাঙ্কার বা পাউচের জল নিতে করোনা-বিধি ভেঙে হুড়োহুড়ির মতো ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি এলাকায় জল একেবারেই পৌঁছয়নি বলেও অভিযোগ। প্রভাব পড়তে শুরু করেছে শিল্প ক্ষেত্রে। ইতিমধ্যে জলাভাবে বাঁকুড়ার মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট বন্ধ করা হয়েছে। দুর্গাপুর শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, যা জল মজুত রয়েছে, তাতে সোমবার রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক থাকবে। শহরের মেয়র দিলীপ অগস্তির অবশ্য আশ্বাস, বিদ্যুৎ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy