ভাদু শেখ। ফাইল চিত্র।
প্রথমে দাদা। বছর ঘুরতেই খুন হলেন ভাই! রামপুরহাটের বগটুইয়ে তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখের খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত যারা, তাদের অনেকে তাঁর দাদার খুনেও অভিযুক্ত!
মুরগির ব্যবসা থেকে ছোট গাড়ির চালক। কখনও আবার থানার পুলিশের গাড়ি চালক। পরে, নিজেই গাড়ি ব্যবসায়ী। পুলিশের সঙ্গে ‘পরিচিতি’তে পাথর, বালি খাদানের গাড়ি থেকে টোলের দেখভাল করা। তারও পরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে ২০১৮তে জয়ী হয়ে রামপুরহাট শহর ঘেঁষা বড়শাল পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান হন ভাদু শেখ। বগটুই গ্রামের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা, বছর আটত্রিশের ভাদুর এই উত্থান ও প্রতিপত্তিই তাঁর এক সময়ের সঙ্গীদের ‘হিংসা’র কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলে দাবি তাঁর পরিবারের।
একদা সঙ্গীদের এই হিংসার আগুনেই আগে দাদা বাবর ও সোমবার ভাদুকে খুন হতে হয় বলে অভিযোগ ভাদুর স্ত্রী কেবিলা বিবির। তিনি বলেন, ‘‘আমার ভাশুরকে যারা খুন করেছে, তারাই আমার স্বামীকেও খুন করেছে। ভাসুর খুনের আসামিদের পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। আমার স্বামীর খুনের আসামিদেরও গ্রেফতার করতে পারবে না। তাই আমি চাই, আমার স্বামীর খুনের তদন্ত সিবিআই করুক।’’ ভাদুর খুনের পরে আতঙ্কে মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেই গ্রাম ছেড়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা।
গ্রামের বাড়িতে বাবা, মা, অন্য ভাইয়েরা থাকলেও বগটুই মোড়ে নিজস্ব পাকা দালানের বাড়িতে স্ত্রী ও দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে ভাদু থাকতেন। রামপুরহাট শহরেও তাঁর প্রভাব ছিল। সাম্প্রতিক রামপুরহাট পুরসভা নির্বাচনে বিরোধী দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার, প্রার্থীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়ার মতো অভিযোগ ভাদুর বিরুদ্ধে উঠেছে।
ভাদুর বাবা, পেশায় আমিন মারফত শেখ বলেন, ‘‘আট ছেলে-মেয়ে আমার। ছয় ছেলের মধ্যে ভাদু পঞ্চম। খুব বেশি লেখাপড়া শেখেনি। ছোট থেকেই নানা ব্যবসা করত। ব্যবসা করার সময় লটারিতে মোটা টাকা পেয়েছিল। ওর ব্যবসার উন্নতি এবং প্রভাব প্রতিপত্তিতে হিংসা করত পলাশ শেখ, সোনা শেখ, পাশের গ্রামের চন্দনকুণ্ঠার নিউটনেরা।’’
পরিজন জানান, ভাদুর ব্যবসা অনেকটাই দেখভাল করতেন তাঁর দাদা বাবর। তাঁদের অভিযোগ, ব্যবসার ক্ষতি করার জন্য বছরখানেক আগে বাবরকে খুন করা হয়। মারফত বলেন, ‘‘সেই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের প্রথমে গ্রেফতার করতে পারেনি। পরে কয়েক জন আদালতে আত্মসমর্পণ করলেও তারা জামিন পেয়ে যায়। তখন থেকেই ভাদুরও প্রাণ সংশয় ছিল।’’ এর পরে ভাদুর ব্যবসার অংশীদার বাপি মণ্ডলকেও খুন করা হয় দাবি করেন ভাদুর পরিবারের সদস্যেরা। ভাদুর আর এক ভাই জাহাঙ্গির শেখ বলেন, ‘‘রবিবার রাতেই পলাশ শেখরা ভাগ্নের ফোনে ভাদু-সহ আরও অনেককে খুন করার হুমকি দেয়। তার পরেই এই ঘটনা।’’ ভাদু শেখ খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত হানিফ শেখ নামে রামপুরহাট ভাঁড়শালা পাড়ার এক যুবককে গ্রেফতার হয়েছে। ভাদুর দাদা বিকির আলি সোনা শেখ, পলাশ শেখ, সফি শেখ, নিউটন শেখ-সহ ১০ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সোনার বাড়ি থেকেই মঙ্গলবার উদ্ধার হয়েছে সাত জনের দগ্ধ দেহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy