চলছে রথ সাজানোর প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র
করোনা আবহে এ বার আর রাজপথে বেরোবে না মায়াপুর ইসকনের জগন্নাথের রথ। তার বদলে ইসকনে চন্দ্রোদয় মন্দিরের উঁচু পাঁচিল ঘেরা চত্বরের ভিতরেই রথ টানা হবে। সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার রথযাত্রা কমে দাঁড়াচ্ছে সিকি মাইল। সাধারণ ভক্ত-পর্যটকেরা প্রবেশের সুযোগ পাবেন না। তবে ইউটিউব চ্যানেল মারফত তা সম্প্রচার করা হবে বলে ইসকন সূত্রে জানানো হয়েছে।
ইসকনের জগন্নাথের আপন বাড়ি রাজাপুর মন্দির থেকে মায়াপুরে মাসির বাড়ি পর্যন্ত রথ টানার রীতি। প্রতি বছরই সেখানে চন্দ্রোদয় মন্দির লাগোয়া গঙ্গার পাড়ে শ্রীকুঞ্জে তৈরি হয় চোখ ধাঁধানো অস্থায়ী গুণ্ডিচা মন্দির। সাত দিন ধরে বসে রথের মেলা। হাজার হাজার মানুষের ভিড় হয়। কিন্তু সেই রথযাত্রা ঘিরে দেশ-বিদেশের মানুষের উন্মাদনা এ বছর স্থগিতই থাকছে। চন্দ্রোদয় মন্দির চত্বরে ভক্ত সাধারণের প্রবেশের সুযোগ এ বার থাকছে না। সম্প্রতি রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী মাহেশের রথযাত্রাও স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। খোদ পুরীর জগ্ননাথের রথ হাতি টানবে নাকি যন্ত্র তা নিয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
ইসকন মায়াপুরের রথযাত্রা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অলয়গোবিন্দ দাস বলেন, “আমাদের রথযাত্রা সাধারণত যে ভাবে হয়, এ বারে তার কিছুই হবে না। প্রতি বার যে তিনটি রথে জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রা দেবী রাজাপুর থেকে মায়াপুর আসেন এ বারও তাতেই চড়বেন। তবে লকডাউনের শুরু থেকেই বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ। মন্দিরের ভিতরে যে সেবায়েত বা পুরোহিতেরা আছেন, কেবল তাঁরাই থাকবেন। প্রতি রথে থাকবেন পঁচিশ জন করে। তাঁদের মধ্যেই পুজো, কীর্তন, রথটানার দায়িত্ব ভাগ করা থাকবে।”
অন্য বার ইসকনের রথের প্রস্তুতি শুরু হয় অক্ষয় তৃতীয়ায়। স্নানযাত্রায় হয় উৎসবের নান্দীমুখ। রাজাপুর জগন্নাথ মন্দিরের স্নানযাত্রায় বিশেষ পুজোর পরে হাজার দশেক মানুষ প্রসাদ পান। এ বার সে সব কিছু হয়নি। স্নানযাত্রা হয়েছে মায়াপুর ইসকনের ভূমি দফতরের ছাদে নমো-নমো করে। মূল মন্দির সেখানে গিয়েছিলেন হাতে-গোনা কয়েক জন। সেই একই ছাদে মণ্ডপ করে এ বার জগন্নাথের গুণ্ডিচা মন্দির তৈরি করা হচ্ছে। উল্টোরথ পর্যন্ত বিগ্রহ সেখানেই থাকবে।
করোনা সতর্কতা বজায় রেখে বেলুড় মঠ এবং দক্ষিণেশ্বর মন্দির সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হলেও মায়াপুর মন্দিরে ভক্ত-পর্যটকেরা কবে ফের ঢুকতে পারবেন, তা-ও এখনও স্পষ্ট নয়। মায়াপুর ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রমেশ দাসের মতে, “সাধারণের প্রবেশের জন্য অবস্থা এখনও অনুকূল নয়। সংক্রমণ প্রতি দিন বাড়ছে। তা ছাড়া গণ পরিবহণও অধিকাংশ বন্ধ, মানুষ আসতেও পারবে না।”
তবে অলয়গোবিন্দের দাবি, “অন্য বারের থেকে এ বার কিন্তু ঢের বেশি মানুষ ইসকনের রথযাত্রা দেখবেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল মায়াপুর টিভির মাধ্যমে। ওতে স্নানযাত্রা দেখেছেন সাড়ে চার লক্ষ মানুষ। রথে সংখ্যাটা আরও বহু গুণ বেড়ে যাবে বলেই আমাদের ধারণা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy