—প্রতীকী ছবি।
দলের সংখ্যালঘু মহিলা মোর্চার এক নেত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে এ বার তেড়েফুঁড়ে ময়দানে নামল বিজেপি। ঘটনার প্রতিবাদে, বিধানসভায় লাগাতার অবস্থানের ডাক দিয়েছে তারা। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী গত ২৫ জুন ঘটে যাওয়া ওই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শুক্রবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, মহিলা কমিশন ও সংখ্যালঘু কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি অবিলম্বে তদন্তকারী দল পাঠানোর অনুরোধ করেছেন। ঘটনার রিপোর্ট পেতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে সাত সদস্যের দল তৈরি করেছেন। আজ, শনিবার ওই দলের ‘নির্যাতিতার’ সঙ্গে কথা বলতে কোচবিহারে পৌঁছনোর কথা। দলে রয়েছেন জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়, বিধায়ক মালতী রাভা, শিখা চট্টোপাধ্যায়, বিজেপির মহিলা মোর্চার সভাপতি ফাল্গুনী পাত্র, বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেত্রী মাফুজা খাতুন, শশী অগ্নিহোত্রী। তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাজ্য সভাপতিকে রিপোর্ট দেবেন। জাতীয় মহিলা কমিশনও ওই বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। তবে জেলা, রাজ্য পুলিশ এবং তৃণমূলের দাবি, ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।
কোচবিহারের মাথাভাঙা ২ ব্লকে মঙ্গলবারের ওই ঘটনা বৃহস্পতিবার জানাজানি হয়। তবে সে দিন পুলিশ জানিয়েছিল, পারিবারিক বিবাদের ঘটনার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এ দিন সকালে রাজ্য পুলিশ ও কোচবিহার পুলিশের তরফে সমাজমাধ্যমে লিখিত ভাবে দাবি করা হয়েছে, ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। প্রতিবেশীদের মধ্যে গন্ডগোল হয়েছিল সেখানে। চার জন মহিলার সঙ্গে বচসার সময়ে নিগৃহীতার কাপড় ছিঁড়ে যায়। পুলিশ তিন জনকে ধরেছে। যদিও বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেছেন, ‘‘তৃণমূল যা বলে দেয়, পুলিশ তাই করে। সবাই জানে, বিজেপি করার জন্য ওই পরিবারকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। ওই দিন বাড়ি থেকে বেরোতেই হামলা হয়।’’
পুলিশ আরও দাবি করেছে, গোপনে ওই মহিলার বিবস্ত্র অবস্থায় থাকা ছবি তুলে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ওই ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
সংখ্যালঘু মোর্চার কোচবিহার জেলা কমিটির সদস্যা ওই মহিলার অভিযোগ, বিজেপি করার জন্যই তাঁর উপরে হামলা হয়েছে। দলের তরফে মোবাইলে এ দিন ওই মহিলার সঙ্গে কথা বলেন শুভেন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পাল এবং প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল। মহিলা অভিযোগ করেন, ৪ জুন, ভোট গণনার দিন থেকে তাঁকে হুমকি দেওয়া শুরু করে তৃণমূলের লোকেরা। আতঙ্কে তাঁরা ঘর থেকে বেরোনো বন্ধ করে দেন। তাঁর স্বামী বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন। ২৫ জুন মহিলা বাড়ি থেকে বেরোন। সে সময়েই তাঁর উপরে হামলা হয়। ‘বিজেপি কেন করিস’ এমনই প্রশ্ন তুলে তাঁকে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়। স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজনে এক আত্মীয়ের মোবাইল রেখেছিলেন নিজের কাছে। তাঁর উপরে যখন অত্যাচার চলছিল, সে সময় ‘নিগৃহীতার’ ছোট ছেলে ওই মোবাইলে ছবি তোলে। সে ছবি (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) সমাজমাধ্যমে ছড়ায়। ওই মহিলা বলেন, ‘‘যে আত্নীয়ের ফোন নিয়েছিলাম, তাঁকে পুলিশ ধরেছে। ফোন আটকে রেখেছে। দোষীদের ছেড়ে নির্দোষদের উপরে অত্যাচার করা হচ্ছে।’’
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক অবশ্য বলেন, ‘‘বিজেপি মিথ্যে অভিযোগ করছে। ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।’’ ওই নেত্রীকে মারধরে অভিযুক্ত এক মহিলাও দাবি করেন, ‘‘আমরা প্রতিবেশী ও আত্মীয়। অনেক দিন ধরে আমাদের মধ্যে পারিবারিক বিবাদ ছিল। ওই দিন (২৫ জুন) আমি ও আমার এক দিদি নদীর চরে ঘাস কাটতে গিয়েছিলাম। সেখানে ওই মহিলা দিদিকে কটূক্তি করেন। তা নিয়ে ধস্তাধস্তি হয়। নিজেই নিজের কাপড় ছিঁড়ে এমন অভিযোগ করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy