Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Duttapukur Blast

শীর্ষস্তরের নির্দেশ কেন উপেক্ষা, প্রশ্ন

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দত্তপুকুর থানার অন্তর্গত ওই বাজি কারখানার কোনও লাইসেন্স ছিল না। পুলিশকে সে সব জানালেও তাতে আমল দেওয়া হয়নি।

duttapukur blast

বিস্ফোরণের পর দত্তপুকুরের সেই বাড়ি। যার ভিতরে চলত বাজি বানানোর কাজ। —ফাইল চিত্র।

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৩ ০৫:৫৪
Share: Save:

বেআইনি বাজি কারখানায় লাগাম টানতে প্রশাসনের শীর্ষ মহল প্রকাশ্যে একাধিক বার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাজ্যে বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধের কোনও নামগন্ধ নেই। দত্তপুকুর-কাণ্ড ফের সেটাই প্রমাণ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি প্রশাসনের শীর্ষ স্তরের নির্দেশ পুলিশের নিচুতলা মানছে না? কেউ কেউ অবশ্য এ প্রশ্ন তুলছেন যে, শীর্ষ মহল নির্দেশ দিলেও প্রকারান্তরে বাজি কারখানার পিছনে কি এমন বড় কোনও মদত রয়েছে যে স্থানীয় থানা সেখানে হস্তক্ষেপ করছে না।

প্রশাসনের খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার বাজি কারখানার বিস্ফোরণের পরে রাজ্য প্রশাসনের একটি দল তামিলনাড়ুর শিবকাশীতে গিয়েছিল এবং সেখানে কী ভাবে বাজি কারখানা চলে তা দেখে এসে রিপোর্ট দিয়েছিল। তার পরবর্তী কালে মুখ্যসচিব সব জেলাশাসক এবং এসপিকে নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে আদর্শ কর্মপদ্ধতি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিজ়িয়র) তৈরি করা হয়। এ-ও বলা হয়েছিল যে, জনবসতি থেকে নির্দিষ্ট দূরে কারখানা করতে হবে এবং স্থানীয় বিডিও, থানার ওসি সেখানে পরিদর্শন করবেন। দত্তপুকুরের ঘটনার পরে দেখা গিয়েছে, আদর্শ কর্মপদ্ধতি খাতায় রয়ে গিয়েছে। কাজে তার কোনও প্রতিফলন নেই।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দত্তপুকুর থানার অন্তর্গত ওই বাজি কারখানার কোনও লাইসেন্স ছিল না। পুলিশকে সে সব জানালেও তাতে আমল দেওয়া হয়নি। পুলিশকর্তাদের অনেকেই বলছেন, এর থেকেই পরিষ্কার যে, থানার অগোচরে ওই কারখানা হয়নি। বরং জেনেবুঝেই উপরমহলের নির্দেশ অগ্রাহ্য করেছে থানা। পুলিশের মতো বাহিনীতে এই প্রবণতা ভয়ঙ্কর বলেও মনে করছেন তাঁরা। পুলিশকর্তাদের অনেকেই অবশ্য মেনে নিচ্ছেন যে, নিচুতলার এই ধরনের মনোভাবের পিছনে রাজনৈতিক সংশ্রব দায়ী। বহু ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সূত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তাদের আমল দিতে চান না ইনস্পেক্টর কিংবা ডিএসপি পদের অফিসারেরা। বহু ক্ষেত্রে এই বাজি কারখানার পিছনেও রাজনৈতিক মদত থাকে। তার ফলেই থানার পরোক্ষ মদতে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। এক প্রবীণ পুলিশকর্তা বলছেন, ‘‘দত্তপুকুর কিংবা এগরার মতো ঘটনায় জেলার এসপি-ও দায় এড়াতে পারেন না।’’

পুলিশ সূত্রের অন্য অংশের অবশ্য দাবি, এগরার ঘটনার মতো দত্তপুকুর থানা বেআইনি বাজি কারখানার বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছিল। তার পরেই আচমকা তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই নির্দেশ জেলা পুলিশের কোনও কর্তা দিয়েছিলেন কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা উচিত। ইনস্পেক্টর পদের এক অফিসার বলেন, ‘‘থানার ওসি আচমকা কেন অভিযান বন্ধ করে দিল, তা দেখার দায়িত্ব তো পদস্থ কর্তাদের। তাঁরা কিছুই তো করেননি। তা হলে কি তাঁদের কেউ অভিযান বন্ধ করতে বলেছিলেন?’’

অন্য বিষয়গুলি:

Duttapukur Blast Duttapukur Firecrackers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy