বৌবাজারে মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেসের সভা থেকে তৃণমূলকে আক্রমণ অধীর চৌধুরীর। নিজস্ব চিত্র।
লটারিকে কেন্দ্র করে বাংলায় আরও একটা দুর্নীতি হয়েছে বলে এ বার সরব হলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের লটারি এবং শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের যোগসূত্রের অভিযোগ প্রথম প্রকাশ্যে এনেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। লটারি থেকে তৃণমূলের একাধিক নেতা কী ভাবে পুরস্কার জিতে টাকা পেয়েছেন, তা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আতস কাচের তলায় এসেছে। এ বার অধীরের দাবি, লটারি-চক্রের পূর্ণ তদন্ত হলে আরও এক প্রস্ত আর্থিক দুর্নীতি ধরা পড়বে। একই সুর সিপিএমেরও। শাসক তৃণমূল অবশ্য পাল্টা বলছে, লটারি কে কিনবেন আর কে পাবেন, সে সব সরকার ঠিক করে না!
বিধান ভবনে শুক্রবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, ‘‘লটারি খেলতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন বাংলার মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষ। অন্য দিকে তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা কোটি কোটি টাকার লটারি পুরস্কার পাচ্ছেন!’’ অধীরের বক্তব্য, ‘‘এই লটারিগুলোর মালিক কে? কত টাকা আয় হচ্ছে? এ সমস্ত তথ্য সামনে এলে দেখা যাবে যে, বাংলায় এই লটারিকে কেন্দ্র করে আরও এক ভয়ঙ্কর আর্থিক দুর্নীতি ঘটে চলেছে!’’
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও এ দিন ফের বলেছেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর মেয়ের টাকা পাওয়ার ব্যাপারটা সামনে এসেছে। তদন্ত ঠিকমতো হলে আরও অনেক কিছু বেরোবে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘চিট ফান্ডের মতো এখানেও আর একটা বড় প্রতারণার ব্যবস্থা হয়েছে। গ্রামে গ্রামে লটারির দোকান, টিকিট বিক্রি বেড়ে গিয়েছে। চিট ফান্ডে যেমন গ্রামের সাধারণ মানুষ টাকা রাখছিলেন বেশি লাভ পাবেন বলে, লটারিতেও মানুষ টাকা ঠেলেছেন আর টাকা পেয়েছে তৃণমূলের লোকজন। লটারির মাধ্যমে মানুষকে লুট করার নতুন কৌশল বার করেছে তৃণমূল!’’ রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যেরও মন্তব্য, ‘‘চিট ফান্ডের পরে নতুন কায়দায় বাংলায় দুর্নীতি হচ্ছে। বহু জায়গায় জুয়ার ঠেক চলে পাকাপাকি ভাবে। সার্বিক ভাবে লটারির মধ্যে দিয়ে সাধারণ মানুষের টাকা লুট হয়েছে। আর তৃণমূল নেতাদের কালো টাকা সাদা হয়েছে।’’
বিরোধীদের অভিযোগের জবাবে তৃণমূলের নেতা তাপস রায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘তদন্ত তো হচ্ছে। কে লটারি কিনবে, কে পাবে, তা-ও সরকার ঠিক করে? নাকি দল? আমাদের দুর্ভাগ্য এখানে বিরোধীদের না আছে সংগঠন না আছে গ্রহণযোগ্যতা। খড়কুটো ধরে ভেসে থাকতে চাইছে!’’
মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেসের ডাকে এ দিনই বৌবাজারে প্রতিবাদ-সভায় ছিলেন অধীর। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা ও মেট্রো প্রকল্পের জন্য মানুষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রতিবাদে ওই সভার আয়োজন হয়েছিল। সেখানে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, বিজেপি ও তৃণমূলের দড়ি টানাটানিতে বৌবাজারের মানুষ বিপদের মুখে পড়েছেন। জীবন-জীবিকার ক্ষতি কংগ্রেস মুখ বুজে মেনে নেবে না। প্রয়োজনে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন অধীর। সভায় ছিলেন মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি সুমন পাল, অসিত মিত্র, কৃষ্ণা দেবনাথ, আব্দুস সাত্তার, তাপস মজুমদার, আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়েরা। হাওড়ার দু’টি ওয়ার্ড থেকে কিছু তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক ওই সভায় যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। পরে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে চাকরি-প্রার্থীদের অবস্থানেও গিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy