অপরাধে ‘হাতেখড়ি’ হয়েছিল আগেই। কয়েক দিনের জন্য জেলেও ছিল মধ্যমগ্রামে খুন-কাণ্ডে ধৃত ফাল্গুনী ঘোষ। ২০২১ সালে সোনার গয়না, নগদ টাকা চুরির অভিযোগে শিলিগুড়িতে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে সে। পুলিশ জানায়, সে বছর শিলিগুড়িতে মামাশ্বশুরের বাড়িতে ঘুরতে এসে সেই বাড়ি থেকেই চুরির অভিযোগে ফাল্গুনীকে গ্রেফতার করা হয়।
পিসিশাশুড়ি সুমিতা ঘোষকে খুন করে ট্রলি ব্যাগে দেহ ভরে গঙ্গার ঘাটে এলেও মঙ্গলবার স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় ফাল্গুনী ও তার মাকে ধরে পুলিশ। আর সেই খবর শুনে ও টিভিতে মা-মেয়ের ছবি দেখেই চমকে উঠেছে শিলিগুড়িতে ফাল্গুনীর মামাশ্বশুরের পরিবার।
২০১৮-এ অসমের জোড়হাটের বাসিন্দা শুভঙ্কর ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয় ফাল্গুনীর। ২০২১ সালের জুলাইয়ে স্বামীর সঙ্গে শিলিগুড়ির সুভাষপল্লিতে মামাশ্বশুরের বাড়িতে এসেছিল সে। প্রায় এক মাস সেখানে থেকে জোড়হাটে ফিরে যায়। অভিযোগ, এর পরে দেখা যায়, প্রায় ২৫ হাজার টাকা নগদ ও কিছু সোনার গয়না চুরি গিয়েছে। ফাল্গুনীর মামাশ্বশুর সুব্রত ঘোষ থানায় অভিযোগ দায়ের করলে ওই তরুণীকে ধরে পুলিশ। পুলিশি জেরায় সে চুরির কথা স্বীকারও করে বলে দাবি। আদালতের নির্দেশে কয়েক দিন জেলে কাটিয়েও ছিল সে। পরে জামিন পায়।
বুধবার ফাল্গুনীর বিষয়ে কথা বলতে চাননি তার মামাশ্বশুর। পরিবার সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছিল ফাল্গুনী। বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলাও চলছে তার। ফাল্গুনীর ভাশুর সপ্তক ঘোষ বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই ওকে কেমন যেন লাগত! পরে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করে।’’ খুনের প্রসঙ্গে সপ্তক বলেন, ‘‘পিসি (সুমিতা) জোড়হাটে থাকতেন। চার মাস আগে কলকাতায় গিয়েছিলেন। কিন্তু কী ভাবে ফাল্গুনীর সঙ্গে দেখা হল ও কেন ওদের কাছে গিয়েছিলেন, জানতাম না। মঙ্গলবার খুনের ব্যাপারে জানতে পারি।’’
২০২১-এ শিলিগুড়ি থানার এক সাব-ইনস্পেক্টর গ্রেফতার করেন ফাল্গুনীকে। তিনি বলেন, ‘‘ধরা পরেও ওই মহিলা মুখ খুলতে চায়নি। অপরাধমূলক মানসিকতা ছিল। চুরি করে ধরা পড়েও অনুশোচনা ছিল না।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)