শনিবার পুরভোট নিয়ে কমিশন ও মুখ্যসচিবের আলোচনা হওয়ার কথা। নিজস্ব চিত্র।
কোভিড আবহে পুরভোট হবে কি না রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তা একক ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে কলকাতা হাই কোর্ট। কিন্তু কমিশন আটকে সেই অন্যের উপরই! কারণ, এর পিছনেও কাজ করছে নানা বিষয়। সেগুলি খতিয়ে দেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ। কমিশন সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে। পুরভোট এখনই বন্ধ বা স্থগিত হবে কি না শনিবার সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তারা। অর্থাৎ আসন্ন চার পুরসভার ভোট হবে কি না তার উত্তর পাওয়া যেতে পারে শনিবারই।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে রাজ্যের আসন্ন চার পুরসভার ভোট চার থেকে ছ’সপ্তাহ পিছনো যায় কি না, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিশনকে তা বিবেচনা করে দেখতে বলেছে উচ্চ আদালত। এমনকি এ ব্যাপারে তারা ‘স্বাধীন’ সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। সূত্রের খবর, আদালতের ওই নির্দেশ পাওয়ার পরই আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন কমিশনের কর্তারা। জানা গিয়েছে, ওই আলোচনায় আইনজীবীরা আদালতের পরামর্শ মেনে ভোট পিছনোর পক্ষেই মত দেন। কিন্তু তার পরও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি কমিশন! পরোক্ষে তারা চেয়ে রয়েছে রাজ্যের দিকেই! কমিশন সূত্রে খবর, শনিবার ওই বিষয়ে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। আলোচনায় থাকতে পারেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
প্রশ্ন উঠছে, আদালত ভরসা দেওয়ার পরও কেন রাজ্যের সঙ্গে আলোচনার দরকার পড়ছে কমিশনের। তারা তো নিজেরাই ভোট নিয়ে সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে দিতে পারে। তবে তাতে বিবিধ সমস্যার কথা বলছে কমিশন। কমিশনের এক কর্তার কথায়, ‘‘কমিশন স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে ঠিকই। কিন্তু রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার। স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে এই কমিশনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের অনেক পার্থক্য রয়েছে। অনেকে তা গুলিয়ে ফেলেন।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘এখানে পঞ্চায়েত বা পুরভোটের নির্ঘণ্ট জারি করার ক্ষেত্রে রাজ্যের সুপারিশ প্রয়োজন। ভোটে কোথায়, কত বাহিনী লাগবে কমিশনের চাহিদা মতো তা তারা জোগায়। ফলে সব মিলিয়ে তাদের তো মতামত নেওয়া প্রয়োজন। আমরা যদি বলি এক মাস পর ভোট করাব, আর রাজ্য যদি বলে সে সময় পরীক্ষা রয়েছে, অন্য অনুষ্ঠান রয়েছে প্রয়োজনীয় বাহিনী দেওয়া সম্ভব নয় তখন কী হবে। তাই যা সিদ্ধান্তই নিই, তা জানাতে হবে।’’
আবার অন্য এক কর্তার যুক্তি, ‘‘আদালত আমাদের বিবেচনা করতে বলেছে। এর আগে কলকাতা পুরভোটের সময়ও এমন একটি রায় দিয়েছিল উচ্চ আদালত। কিন্তু আমরা নিজেদের সিদ্ধান্তেই অটল ছিলাম। আদালত অবমাননা হয়নি। ফলে এ বারেও তার পুনরাবৃত্তি হলেও হতে পারে!’’ তবে এই মুহূর্তে ভোট পিছনোই যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে মনে করছেন এই মামলার সঙ্গে যুক্ত কমিশনেরই এক আইনজীবী। তাঁর কথায়, ‘‘কমিশন কলকাতা হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে না। ফলে এই রায়কে তারা মান্যতা দিচ্ছে। আর রায়ে যে হেতু নির্দিষ্ট করে বলা রয়েছে, জনস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে চার থেকে ছ’সপ্তাহ ভোট পিছনোর বিবেচনা করা হোক। ফলে বলাই যায়, আদালত ঘুরিয়ে এখন ভোটগ্রহণের বিপক্ষেই সায় দিয়েছে।’’
আবার অন্য একটি সূত্রের খবর, এখন শাসকদল তৃণমূলও ভোট পিছতে চাইছে। তারা চাইছে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি চার পুরসভার ভোটগ্রহণ হোক। তবে আপাতত নজর থাকবে শনিবার কমিশন ও মুখ্যসচিবের আলোচনার দিকে। কারণ, তার পরই জানা যেতে পারে আগামী ২২ জানুয়ারি আসানসোল, শিলিগুড়ি, বিধাননগর ও চন্দননগরে ভোট হবে কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy