অ্যাপ ক্যাব ট্যাক্সির সমস্যা মেটাতে বৈঠকে বসছে পরিবহণ দফতর। — ফাইল চিত্র।
অ্যাপ ক্যাব নিয়ে সমস্যার অন্ত নেই কলকাতায়। যাত্রীরা যেমন ক্যাব নিয়ে সমস্যায় পড়ছেন, তেমনই ক্যাব চালক ও বাণিজ্যিক ট্যাক্সির মালিকেরাও একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। সেই সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে এ বার তাঁদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছে পরিবহণ দফতর। আগামী মঙ্গলবার বিকেলে অ্যাপ ক্যাব চালক ও গাড়ি মালিকদের নিয়ে পরিবহণ দফতরের ময়দান টেন্টে বৈঠকে বসবেন পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। ওই দিনই শেষ হচ্ছে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। সেই অধিবেশন শেষ করেই বৈঠকে যোগ দিতে পারেন মন্ত্রী।
ওই বৈঠকে ডাকা হয়েছে, অনলাইন ক্যাব অপারেটার্স গিল্ড, জয়েন্ট কাউন্সিল অফ লাক্সারি ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন, কলকাতা অ্যাপ ক্যাব অপারেটার্স ফোরাম, ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান রোড ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কাস, কলকাতার ওলা, উবর অ্যাপ ক্যাব অপারেটার্স অ্যান্ড ড্রাইভার্স ইউনিয়ন এবং অল ইন্ডিয়া রোড ট্রান্সপোর্ট ওয়াকার্স ফেডারেশন। পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘অ্যাপ ক্যাব নিয়ে মূলত কোন কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে, তা দফতরের তরফে জানতে চাওয়া হবে। সেই সমস্যার সমাধানে ইউনিয়নগুলির কাছে পরামর্শও চাওয়া হতে পারে। কারণ গত কয়েক মাসে অ্যাপ ক্যাব সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগের কথা জেনেছে পরিবহণ দফতর। তাই সেই সব সমস্যার সমাধান করতেই এই বৈঠকটি ডাকা হয়েছে।’’
বৈঠকে আমন্ত্রিত অনলাইন ক্যাব অপারেটার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বড় বড় নামজাদা অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলি রাজ্য সরকারের ঠিক করে দেওয়া গাইডলাইন মানছে না। যেমন পরিবহণ দফতর অ্যাপ ট্যাক্সির জন্য একটি নির্দিষ্ট নীতি ঠিক করে দিয়ে জানিয়েছে, প্রতিটি জেলায় সেই সংস্থার অফিস থাকতে হবে। যেখানে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে গাড়ির মালিক ও চালকেরা তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন। অথচ সরকারি নির্দেশ পুরোপুরি উপেক্ষা করা হচ্ছে।’’ পরিবহণ দফতর ‘অন ডিমান্ড ট্রান্সপোর্টেশন টেকনোলজিস এগ্রিগেটার’ তৈরি করে অ্যাপ ক্যাবের জন্য নীতি ঠিক করে দিয়েছে। কিন্তু ওলা, উবরের মতো বৃহৎ অ্যাপ ক্যাব সংস্থা সেই নীতি মানছে না বলেই অভিযোগ উঠেছে। তাই বৈঠকে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে।
তবে পরিবহণ দফতরের আরও একটি সূত্র জানাচ্ছে, ওই বৈঠকে অ্যাপ ক্যাব গাড়ির মালিকদের ‘ভেহিকল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস’ (ভিএলটিডি) বসানো নিয়েও নির্দেশ দিতে পারেন পরিবহণ মন্ত্রী। কারণ, পরিবহণ দফতর থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়িতে ১ ডিসেম্বর থেকে ‘ভিএলটিডি’ বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে আগের সিদ্ধান্ত বদল করতে হচ্ছে। নতুন জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১ এপ্রিল থেকে ভিএলটিডি ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে। ৩১ মার্চের মধ্যে বেসরকারি গাড়ির মালিকদের এই ডিভাইসটি নিজেদের গাড়িতে বসাতে হবে। নতুন এই সিদ্ধান্তটি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে গাড়ির ‘ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট’ (সিএফ) দেওয়া হবে। সঙ্গে যত দিন না গাড়িতে ভিএলটিডি লাগানো হচ্ছে, তত দিন দৈনিক ৫০ টাকা করে জরিমানা করা হবে। এ নিয়ে নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন বেসরকারি পরিবহণ মাধ্যমের মালিকরা। বৈঠকে আমন্ত্রিত জয়েন্ট কাউন্সিল অফ লাক্সারি ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত (শঙ্কর) ঘোষ বলেন, ‘‘পরিকাঠামো ছাড়া আমাদের গাড়িতে ভিএলটিডি লাগাতে বলা হচ্ছে। কিন্তু এত বৃহৎ সংখ্যায় গাড়িতে ভিএলটিডি লাগাতে যে সময়ের প্রয়োজন, তা দেওয়া হচ্ছে না। বৈঠকে যদি পরিবহণ দফতরের তরফে এ বিষয়ে আমাদের কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়, তা হলে আমরাও আমাদের মত স্পষ্ট জানিয়ে দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy