Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Supreme Court of India

নবান্ন অভিযানে উদ্বেগ, আইন মানতে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

কপিল সিবাল বলেন, এই বিষয়টা স্পষ্ট হওয়া দরকার। প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নেবে না- তার অর্থ এই নয় যে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ক্ষেত্রে কোনও নিয়মনীতি মানা হবে না।

Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৫৭
Share: Save:

নবান্ন অভিযান নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে উদ্বেগ প্রকাশ করল রাজ্য সরকার। রাজ্যের উদ্বেগ দূর করতে আজ সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিল, আর জি কর কাণ্ডে শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেবে না। কোনও প্রতিবাদে বাধা দেবে না। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে প্রতিবাদ মিছিল, বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্য পুলিশ আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে পারবে না। আগামী ২৭ অগস্ট কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা ছাড়া নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী সেখানে ব্যক্তিগত ভাবে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন। আজ রাজ্য সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি অভিযোগ করেন, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ওই দিন গুলি চলবে বলে জানিয়েছেন!

এই নিয়ে আজ রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে একটি পৃথক হলফনামা জমা দিয়েছে। সিব্বল বলেন, 'এ'টি খুবই গুরুতর বিষয়। কী হতে যাচ্ছে। দেখুন।" সুপ্রিম কোর্ট গত মঙ্গলবার জানিয়েছিল, আর জি করের ঘটনায় সাধারণ মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করছেন। নিজের মতো মত প্রকাশ করছেন। তাঁদের উপরে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের কোপ নেমে আসতে দেওয়া যাবে না। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থ্য নেওয়া যাবে না। পুলিশ আন্দোলনকারী থেকে যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে মত প্রকাশ করেছিলেন, তাঁদের সমন পাঠাতে শুরু করেছিল। তার পরেই শীর্ষ আদালত এই নির্দেশ দেয়।

কপিল সিবাল বলেন, এই বিষয়টা স্পষ্ট হওয়া দরকার। প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নেবে না- তার অর্থ এই নয় যে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ক্ষেত্রে কোনও নিয়মনীতি মানা হবে না। নবান্ন অভিযান নিয়ে রাজ্যের হলফনামা দেখিয়ে সিকাল বলেন, "এটা খুবই গুরুতর বিষয়। ২৭ অগস্ট এর পরিকল্পনা হয়েছে। যদি কোনও প্রতিবাদ হয়, তা হলে রুট বলতে হবে। কে আন্দোলনের নেতা, তা বলতে হবে। ওরা পতাকা নিয়ে মিছিল করবে। পতাকা খুলে নিলে সেটা ডাণ্ডা হয়ে যাবে। সেখানে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মানতে হবে। এ সব পারিপার্শ্বিক অনুষ্ঠান। মূল বিষয়ের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিক যে নির্দিষ্ট নিয়ম মানতে হবে।"

সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের আইনজীবী সঞ্জয় বসু জানান, রাজ্য তার হলফনামায় জানিয়েছে, রাজ্যের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি কাজে সমাজের কিছু অংশ নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগাতে চাইছে। তার জন্য ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, হিংস্র আন্দোলনের ডাক দেওয়া হচ্ছে, পুলিশের উপরে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, পুলিশকে কোণঠাসা করতে অ্যাসিড বোমা, বন্দুক, লাঠি নিয়ে সশস্ত্র আন্দোলনের ডাক দেওয়া হচ্ছে।

সিবিআইয়ের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, এ সব সমাজ মাধ্যমে রয়েছে। তার ভিত্তিতে রাজ্য সরকার হলফনামা দিচ্ছে। তিনি অভিযোগ তোলেন, এক জন মন্ত্রী বলেছেন, নেত্রীর দিকে আঙুল তুললে আঙুল কেটে নেওয়া হবে। সিব্বল বলেন, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, গুলি চলবে!

প্রধান বিচারপতি বলেন, এই পরিস্থিতি নিয়ে রাজনীতি করবেন না। সব পক্ষকেই বুঝতে হবে। আইন নিজের পথে চলবে। তিনি লিখিত নির্দেশে বলেন, আদালত কখনও রাজ্যের আইন অনুযায়ী ক্ষমতা প্রয়োগ করতে বাধা দেয়নি। তবে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে যেন বাধা দেওয়া বা বিশৃঙ্খলা তৈরি করা না হয়। যাঁরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন যেন কোনও পদক্ষেপ না করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE