Advertisement
E-Paper

কেরামতের প্রথম পক্ষের ছেলে রবিউল আর কলেজ যাবেন না, বাজি বানালেই হাতখরচ দিতেন বাবা

আর কিছুদিন গেলেই গ্রাজুয়েট হত রবিউল। মধ্যমগ্রামের বিবেকানন্দ কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সে। পড়াশোনায় খারাপ নয়। বহুবার বারণ করেও তার বাজি কারখানার কাজের নেশা কাটাতে পারেননি মা রুবি বিবি।

এই বুটে আর কেউ পা গলাবে না। দত্তপুকুরে বিস্ফোরণ স্থল। রবিবার।

এই বুটে আর কেউ পা গলাবে না। দত্তপুকুরে বিস্ফোরণ স্থল। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৩ ২৩:১০
Share
Save

একটা গোটা দিন বাজি কারখানায় কাজ করলেই হাতে আসত ২৩০টি টাকা। সেই টাকা বাবা কেরামত আলিই গুঁজে দিতেন বড় ছেলে রবিউল আলির হাতে। কলেজ পড়ুয়া ছেলে। প্রথম সন্তান। হাত খরচের সূত্রেই নিয়মিত যোগাযোগের সুতো জুড়ে থাকত পিতা-পুত্রের। যদিও ব্যাপারটা একেবারেই পছন্দ করতেন না রবিউলের মা। বারণ করতেন। রবিবারও ছেলে বাজি কারখানায় যাচ্ছে বুঝে বারণ করেছিলেন। রবিউল শোনেনি। তার পর অবশ্য আর সে ফিরেও আসেনি মায়ের কাছে।

বয়স বছর কুড়ি। আর কিছুদিন গেলেই গ্রাজুয়েট হত ছেলে। মধ্যমগ্রামের বিবেকানন্দ কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সে। পড়াশোনায় খারাপ নয়। কিন্তু বহুবার বারণ করেও তার বাজি কারখানার কাজের নেশা কাটাতে পারেননি মা রুবি বিবি। কেরামতের প্রথম পক্ষের স্ত্রী। রবিবার দত্তপুকুর বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে কাঁদতে কাঁদতেই রুবি বললেন, “বহুবার বারণ করেছি। বললেই বলত বাবাকে সাহায্য করতে যাচ্ছি কাজে। কথা শুনত না।”

প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং দুই সন্তান কে ছেড়ে নতুন সংসার পেতেছিলেন কেরামত। তাও বেশ কয়েক বছর হল। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীরও তিন সন্তান। তবে তিন জনেই খুব ছোট। বড় ছেলে রবিউল আর মেয়ে সাবিনাকে নিয়ে আলাদা থাকতেন রুবি। তাঁর বাবা নুর মোহাম্মদ মণ্ডল বলেছেন, “আগে মাটি কাটার কাজ, জোগাড়ের কাজ করত কেরামত। কিন্তু দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই একদম বদলে যায়। দ্বিতীয় বিয়ের পর হঠাৎ বাজি কারখানার কাজ ধরে সে। পরিবারের খেয়াল রাখত না একেবারেই। কোনও যোগাযোগ রাখত না এই পরিবারের সঙ্গে।”

তবে কিসের টানে বাবার কাছে যেত রবিউল? তা স্পষ্ট নয় রুবির কাছে। তিনি শুধু জানেন যে গিয়েছে সে আর ফিরবে না। বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর নিখোঁজ কেরামতও। অনেকেই বলছেন, হয়ত বিস্ফোরণের সময় সেও ছিল কারখানার ভিতরে ছেলের সঙ্গেই। তবে উদ্ধার হওয়া এবং চিহ্নিত না হওয়া দেহগুলি মধ্যেও কেরামতকে খুঁজে পাওয়া যায়নি এখনও।

Duttapukur

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}