Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Recruitment Scam

পরীক্ষা নেওয়ার বরাত পেতেই কারচুপি শুরু হয় অয়নের সংস্থার

নিয়োগ-দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূলের দুই যুব নেতা কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীলকে রবিবার গ্রেফতার করেছে ইডি।

Ayan Sil.

অয়ন শীল। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৩ ০৬:১৮
Share: Save:

কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়ার বরাত পাওয়ার পরেই সংস্থার তরফে কারচুপি শুরু হয়েছিল বলে অভিযোগ। যার জেরে উত্তীর্ণদের তালিকা জমা পড়লেও পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের ডিএলবি শাখা তা অনুমোদন করেনি। তাতেও অবশ্য প্রভাবশালী অয়ন শীলকে কোনও ভাবে দমানো যায়নি। দু’বছরের মধ্যেই অন্যান্য পুরসভায় নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়ার বরাত জোগাড় করে নেয় তাঁর সংস্থা। এমনকি, তাঁদের দেওয়া যে প্যানেল আজও আটকে রয়েছে, সেখানেও সম্প্রতি ৪০ জন মজদুর নিয়োগের ব্যবস্থা করেছে অয়নেরই সংস্থা।

নিয়োগ-দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূলের দুই যুব নেতা কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীলকে রবিবার গ্রেফতার করেছে ইডি। সোমবার আদালতে ইডি জানায়, বেশ কয়েকটি পুরসভায় আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ২০১৬ সালের পরে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। এবং গোটা বিষয়টির সঙ্গে অয়নের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে পানিহাটি, বরাহনগর, কামারহাটি, দমদম, উত্তর দমদম ও দক্ষিণ দমদম পুরসভায়। তার কারণ, ওই সমস্ত পুরসভার নামই বলেছে ইডি।

পানিহাটি পুরসভায় ২০১৭ সালে অয়নের সংস্থা নিয়োগের পরীক্ষার দায়িত্ব পায়। অভিযোগ, সেই পরীক্ষায় এতটাই কারচুপি হয় যে, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের ডিএলবি (ডিরেক্টরেট অব লোকাল বডিজ়) শাখা উত্তীর্ণদের তালিকার অনুমোদনই দেয়নি। সেই কারণে কেউ চাকরিও পাননি। তা সত্ত্বেও বছর দুয়েক পরে অয়নের সংস্থা উত্তর ২৪ পরগনার অন্য পুরসভায় ফের চাকরির পরীক্ষার বরাত পায়। তবে, আগের তালিকা ঝুলে থাকায় পানিহাটিতে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরুই করা যায়নি।

বিষয়টি নিয়ে এখন নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে পানিহাটিতে। আরও অভিযোগ, সম্প্রতি ফের অয়নের সংস্থার মাধ্যমে পানিহাটিতে মজদুর পদে নিয়োগের যে প্রক্রিয়া চলেছে, তারও অর্ধেক হয়েছে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে। দিনকয়েক আগেই সেই তালিকা পুরসভার এক আধিকারিক ও দুই অস্থায়ী কর্মীর মাধ্যমে জমা পড়েছে ডিএলবি-তে। সেই খবরও পেয়েছে ইডি। যদিও পানিহাটির পুর চেয়ারম্যান মলয় রায় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “২০১৩ সাল থেকে আজ পর্যন্ত এক জনেরও নিয়োগ না হওয়ায় কর্মী-সঙ্কট নিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। মজদুরের তালিকার বিষয়ে কিছু জানি না।”

সূত্রের খবর, অয়নের সংস্থার মাধ্যমে ২০১৭-য় প্রায় ১০০ জন এবং ২০১৯-এ ১২৩ জনের নিয়োগ হয়েছে কামারহাটি পুরসভায়। তবে, চেয়ারম্যান গোপাল সাহার দাবি, ‘‘চাকরিতে নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়ার পরিকাঠামো পুরসভার না থাকায় ডিএলবি-স্বীকৃত সংস্থাগুলিকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। এর বেশি কিছু জানি না।’’

২০১৭ ও ’১৯ সালে বরাহনগর পুরসভাতেও নিয়োগের পরীক্ষা অয়নের সংস্থাই নিয়েছিল। পুর চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিকের অবশ্য দাবি, “মেধা তালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। নিয়োগ সংক্রান্ত বোর্ডে থাকা আমাদের জনপ্রতিনিধিরা কেউই আর্থিক লেনদেনে যুক্ত নন।”

সোমবারই উত্তর দমদম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবোধ চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া সংস্থার নাম তাঁর মনে নেই, তবে অয়ন শীলের নাম মনে আছে। তবে তাঁর দাবি, কোনও দুর্নীতি হয়নি। আদালতে দমদম ও দক্ষিণ দমদম পুরসভারও নাম করেছিল ইডি।

সূত্রের খবর, ২০১৯ সালে উত্তর দমদম পুরসভায় ৫০-৫২ জন, দমদমে ২৫ জন এবং দক্ষিণ দমদমে প্রায় ৩০০ জন চাকরি পেয়েছিলেন। তবে, ওই তিন পুরসভা কর্তৃপক্ষেরই দাবি, সেই সব নিয়োগ বৈধ ভাবেই হয়েছে। কোনও রকম কারচুপি বা অবৈধ কিছু ঘটেনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Recruitment Scam Ayan Sil
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy