—প্রতীকী ছবি।
দেশে ইতিহাসের বিকৃতি নিয়ে বারবারই সরব হয়েছেন প্রথিতযশা ইতিহাসবিদেরা।
এ বার পশ্চিমবঙ্গ ইতিহাস সংসদের বার্ষিক অধিবেশনেও কার্যত সে কথাই উঠে এল। সেই ইতিহাস বিকৃতি তথা ভুয়ো তথ্যসমৃদ্ধ ইতিহাসের দাপটের পিছনে যে সমাজমাধ্যম বা সোশাল মিডিয়ার ভূমিকাও অনস্বীকার্য, সে কথাও শুক্রবার মনে করিয়ে দিয়েছেন অধিবেশনের মূল বক্তা অধ্যাপক অমর ফারুকি। তুলে ধরেছেন ভুয়ো ইতিহাসের বিপদের কথাও।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি দেশে ভুয়ো ইতিহাস রচনার প্রয়াস দিনের পর দিনই বেড়ে চলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রথাগত গবেষণা পত্রিকার বাইরে সমাজমাধ্যমে লেখা হচ্ছে সে সব তথ্য। যার অধিকাংশেরই লক্ষ্য মুঘল শাসকদের নিন্দা। সেই প্রসঙ্গও এ দিন অধ্যাপক ফারুকির বক্তৃতায় প্রতিফলিত হয়েছে।
ইতিহাসবিদদের মতে, ইতিহাস রচনা হয় নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে। তথ্যসূত্রের উপরে ভিন্ন ভিন্ন বিশ্লেষণ ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করে। ভিন্ন মতামত জন্ম দেয় বহু সুস্থ বিতর্কেরও। যার উপরে ভিত্তি করেই ইতিহাস এগিয়ে চলে। তবে ঐতিহাসিক তথ্য বিশ্লেষণের নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। কিন্তু বর্তমানে সমাজমাধ্যমে যে ইতিহাস জন্ম নিচ্ছে সেগুলি সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে না বলেই অভিযোগ। বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের জন্যই সেগুলি লেখা হচ্ছে। এই ধরনের রচনা আদতে সমাজের বিপদই ডেকে আনে।
এ দিন অবশ্য শুধু ইতিহাসের বিকৃতির বিপদের উপরে নিজের বক্তব্যকে আবদ্ধ রাখেননি ফারুকি। বরং বিদ্যাচর্চার পরিসরে স্বীকৃত তথ্য বিশ্লেষণ পদ্ধতি অনুসারে কী ভাবে ইতিহাস রচিত হয় তা-ও দেখিয়েছেন। মুঘল আমল ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে কী ভাবে রাজনৈতির পট পরিবর্তন হয়েছিল তা-ও উঠে এসেছে তাঁর বক্তৃতায়।
নিউ ব্যারাকপুর আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র কলেজে পশ্চিমবঙ্গ ইতিহাস সংসদের ৩৯তম অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ দিন উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাজকুমার কোঠারি, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সৈয়দ রফি আহমেদ, ইতিহাস সংসদের সভাপতি অধ্যাপক অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ শিক্ষা জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বেরা। ছিলেন প্রবীণ এবং নবীন ইতিহাস গবেষকদের অনেকেই। গত অধিবেশনে পঠিত গবেষণা প্রবন্ধগুলির মধ্যে বিভিন্ন বিভাগে ‘সেরা’ হিসাবে নির্বাচিত গবেষকদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। সংসদের কর্তাদের মতে, দীর্ঘদিন ধরেই তথ্যনিষ্ঠ, অসাম্প্রদায়িক ইতিহাসচর্চার প্রতি দায়িত্ব পালন করছে তাঁদের সংগঠন। বর্তমান অধিবেশনেও সেই ধারা অব্যাহত থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy