Advertisement
E-Paper

চৈত্র গেল, বৈশাখ অর্ধেক পার, কালবৈশাখী নেই কলকাতায়, কারণ খুঁজল আনন্দবাজার অনলাইন

আবহাওয়া দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিলে গড়ে দুটি তো বটেই, কখনও কখনও তিনটি বা তার বেশি কালবৈশাখী হয় কলকাতায়। এ ছাড়া ছ’সাত দিন ঝড়বৃষ্টি হয়।

কালো মেঘের আশায় চাতক মহানগর।

কালো মেঘের আশায় চাতক মহানগর। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:০৭
Share
Save

পুড়ছে কলকাতার মাটি। অথচ সেই জ্বলন শান্ত করার যে ‘দাওয়াই’, সেই কালবৈশাখীর চিহ্নমাত্র নেই। চৈত্র শেষ। শেষ অর্ধেক বৈশাখও। অন্য বছরে এই সময়ে অন্তত দু’টি আকাশ আঁধার-করা কালবৈশাখী বয়ে যায় শহরের বুকে। কিন্তু এ বছর তার দেখা নেই কেন? কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা গেল, একটি নয়, গোল বেধেছে দু’টি। আর তার জন্যই পথ ভুলেছে কালবৈশাখী।

কালবৈশাখীর কাল

নামে বৈশাখী থাকলেও কলকাতায় ঝড়বৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হয় চৈত্রের শেষ থেকেই। এপ্রিল মাস অর্থাৎ বাংলা ক্যালেন্ডারে চৈত্রের শেষার্ধ আর বৈশাখের প্রথমার্ধই কালবৈশাখীর অনুকূল সময়। কিন্তু এ বছর এপ্রিলে কালবৈশাখী তো দূর, চাতক মহানগরের জ্বালাজুড়োনো সামান্য ঝড় কিংবা ছিটেফোঁটা বৃষ্টির শিকেও ছিঁড়ছে না।

আগে কী ছিল, এখন কী?

আবহাওয়া দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিলে গড়ে দু’টি তো বটেই, কখনও কখনও তিনটি বা তার বেশি কালবৈশাখী হয় কলকাতায়। এ ছাড়া ছ’সাত দিন ঝড়বৃষ্টি হয়। মৌসম ভবনের হিসাব বলছে, এপ্রিলের কলকাতায় গড়ে অন্তত তিন দিন বৃষ্টি হয়। গড় বৃষ্টির পরিমাণ থাকে ৫৫ মিলিমিটার। তুলনায় এ বছরের এপ্রিলের হিসাব চমকে দেওয়ার মতো। কালবৈশাখী হয়নি। ছোটখাটো ঝড় হয়নি। বজ্রগর্ভ মেঘের দেখা নেই। ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হয়েছিল ৭, ৮ এবং ১১ এপ্রিল। এর মধ্যে ৭ তারিখই মাপার মতো। ০.৫ মিলিমিটার। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ৮ এবং ১১ তারিখ শুধু বোঝা গিয়েছে যে, বৃষ্টি হয়েছে। তার পর থেকে আর বৃষ্টির মুখ দেখেনি কলকাতা। ১১ তারিখের পর থেকে মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত শুধুই গরম আর দাবদাহ। প্রতি দিন ঊর্ধ্বমুখী তাপমাত্রার নতুন নতুন রেকর্ড ভাঙছে কলকাতা।

কোথায় গন্ডগোল?

আবহাওয়াবিদেরা জানাচ্ছেন, গোল পেকেছে দু’টি জায়গায়— এক, বঙ্গোপসাগর এবং দুই, ঝাড়খণ্ড-বিহার।

কালবৈশাখীর জন্মবৃত্তান্ত

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের কথায়, বঙ্গে চৈত্র-বৈশাখে কালবৈশাখী বা ঝড়বৃষ্টি হয় বঙ্গোপসাগর থেকে আসা ‘অ্যান্টি সাইক্লোন’ বা বিপরীত ঘূর্ণাবর্তের কারণে। বঙ্গোপসাগর থেকে ওই ঘূর্ণাবর্ত আমাদের রাজ্যে ঢোকে। অন্য দিকে, ঝাড়খণ্ড-বিহারেও একটি শুষ্ক এবং তপ্ত বলয় তৈরি হয়, যা বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প টানে। এর ফলে বঙ্গোপসাগরের ওই বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত রাজ্যের উপর দিয়ে ঝাড়খণ্ড-বিহারে ঢুকে আবার রাজ্যের দিকে ফিরে আসে। ফলে এই সময় দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ায় একটা অস্থিরতা তৈরি হয়। সন্ধ্যার দিকে দমকা হাওয়া বইতে শুরু করে। তখনই হয় কালবৈশাখী। সঙ্গে বজ্রগর্ভ মেঘ আর বৃষ্টিও নামে।

কোথায়, কেন থমকে?

আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, এ বছর বঙ্গোপসাগরে ওই বিপরীতমুখী ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হচ্ছে না। যেটুকু হচ্ছে, তার সবটাই চলে যাচ্ছে পড়শি দেশ বাংলাদেশের দিকে। ফলে বিপরীত ঘূর্ণাবর্তের লাভ পাচ্ছে বাংলাদেশ। অন্য দিকে, ঝাড়খণ্ড বা বিহারেও শুষ্ক বলয় তৈরি হয়নি। ফলে বঙ্গোপসাগর থেকে আর্দ্রতা টেনে আনার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি সেখানেও। গোলমাল বেধেছে সেখানেই।

ফলে যা হচ্ছে

এর ফলে বঙ্গে আর্দ্রতা প্রবেশ করছে না। অন্য দিকে, পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম থেকে শুষ্ক এবং তপ্ত হাওয়া সাহারা মরুভূমির দিক থেকে ক্রমেই ঢুকছে রাজ্যে। ফলে বাংলার চিরচেনা প্যাচপেচে আর্দ্র গরম হারিয়ে দক্ষিণ এবং উত্তরবঙ্গে চলছে দিল্লির মতো গরম আর শুষ্ক আবহাওয়া।

আশা

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী রবিবার থেকে এই বিপরীতমূখী ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বঙ্গে। সে ক্ষেত্রে আর্দ্রতা বেশি হলে বাংলার কপালে কালবৈশাখীর শিকে ছিঁড়তে পারে কি? বৈশাখের অর্ধেক এখনও বাকি। আপাতত তাই হাওয়া অফিসের ভবিষ্যদ্বাণীর দিকেই তাকিয়ে দিন গুনছে তিলোত্তমা।

Kalbaisakhi Kolkata

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।