এই বাড়ি ঘিরেই দানা বেঁধেছে রহস্য। ফাইল চিত্র
দোতলা সমান উঁচু ঘর, চওড়া ৩০ ফুট, অথচ তাতে একটিও জানলা নেই। এমন ঘরটি যিনি তৈরি করেছিলেন, তাঁকে খুঁজে বার করে জিজ্ঞাসাবাদ করল পুলিশ। কালিয়াচকের আলিনগর গ্রামের বাসিন্দা ওই মিস্ত্রি। এ দিন পুলিশি জেরায় তিনি জানান, ঘরটি তৈরির সময়ে মনে খটকা লাগলেও তিনি কিছু বলেননি। কিন্তু এই নিয়ে পরে পাড়ার বা আত্মীয়বন্ধুদের কারও সঙ্গে তিনি কেন কথা বলেননি, সেই প্রশ্ন উঠেছে। তারই জবাব খুঁজছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, সম্ভবত ওই মিস্ত্রিকেও টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করতে বলেছিল কালিয়াচক হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মহম্মদ আসিফ।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই ঘরেই বাবা, মা, বোন ও ঠাকুমাকে পুঁতে রেখেছিল আসিফ। এ দিন পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে আসিফের দাদা মহম্মদ আরিফও জানান, ভাই আসিফই চার জনকে খুন করেছিল। তাঁকেও খুনের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ওই ঘরে জলের চৌবাচ্চায় ডোবানোর পরেই তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে। পাশাপাশি আসিফদের মামা ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা শিস মহম্মদেরও জবানবন্দি নেওয়া হয় এ দিন। তিনি জানান, তাঁর কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল আসিফ। ১৪ জুন তিনি টাকা ফেরত চাইতে আসিফের বাড়িতে গেলে তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। তখনই তাঁর প্রথম সন্দেহ জাগে, জানিয়েছেন মামা শিস মহম্মদ।
পুরাতন ১৬ মাইল গ্রামেই বাড়ি খাগড়াগড় কাণ্ডে ধৃত জিয়াউল হকের। তাঁর ভাই আবদুল্লা শেখের প্লাইউডের কারবার। তাঁর কাছ থেকেই আসিফ প্লাইউড কেনে বলে চাউর হয়ে যায় গ্রামে। আবদুল্লা বলেন, ‘‘আমার কাছ থেকে কোনও প্লাইউড কেনা হয়নি। আমাদের বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ এমন তথ্য অবশ্য পুলিশের কাছেও নেই, জানিয়েছে পুলিশ সূত্র। পুলিশ আরও জানায়, ফেব্রুয়ারির শুরুতেই আসিফ প্লাইউড কিনেছে। কোথায় থেকে কিনেছে, তা নিয়ে সে
কিছু বলেনি।
পুলিশকে সব থেকে বেশি ভাবাচ্ছে পরিবারের চুপ থাকার বিষয়টি। আসিফ এমন ঘর বানাল, আগ্নেয়াস্ত্র কিনল, প্লাইউড কিনল, কিন্তু বাবা-মা বা নিদেন পক্ষে বোনও কিছু বললেন না। কেন? পুলিশ জানিয়েছে, আসিফ পরিবারের কাছে দাবি করত, সে বড় বিজ্ঞানী হবে। সে হ্যাক করে বিমানও নামিয়ে দিতে পারে বলে দাবি করত। তা হলে কি সে সবই বিশ্বাস করে নিয়েছিলেন পরিবারের সকলে? মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে।”
অস্ত্র মজুতের অভিযোগে ধৃত আসিফের দুই বন্ধু সাবির আলি ও মহম্মদ মাফুজকে এ দিন ফের জেলা আদালতে তোলা হয়। যদিও এদিন আর তাদের হেফাজতে নেয়নি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, টাকার বিনিময়ে বাড়িতে অস্ত্রগুলি লুকিয়ে রেখেছিল সাবির ও মাফুজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy