রবিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪২ মিনিটে মাচ্ছু নদীর উপর মোরবীতে আচমকা ভেঙে পড়ে ব্রিটিশ আমলের তৈরি এই ঝুলন্ত সেতু। পিটিআই।
গুজরাটের মোরবীতে সেতু ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে শতাধিক মানুষের। আর এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পূর্ত দফতর। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার মন্ত্রী পুলক রায় রাজ্যের সেতু সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জরু্রি ভিত্তিতে এক বৈঠকের ডাক দিয়েছেন। সেই বৈঠকে হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দফতরের সমস্ত শীর্ষ আধিকারিকদের। এই মূহূর্তে রাজ্যের পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন পুলক। মঙ্গলবারই জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাজ পর্যালোচনার জন্য একটি বৈঠক আগেই ডেকে রেখেছেন তিনি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতে সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনার পরেই মঙ্গলবারই পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মন্ত্রী বৈঠকের ডাক দিয়েছেন ঠিক। কিন্তু বৈঠক প্রসঙ্গে আমাদের বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে গুজরাতে সেতু ভেঙে পড়ার পর রাজ্যের সেতুগুলির অবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা করতেই যে তিনি বৈঠক ডেকেছেন, তা আমাদের কাছে স্পষ্ট। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে ভেঙে পড়ে পোস্তা সেতু। তখনও রাজ্যে চলছিল বিধানসভা নির্বাচন। তাই গুজরাতের এমন পরিস্থিতির সঙ্গে ২০১৬ সালের বাংলার অনেকেই মিল খুঁজে পাচ্ছেন। তবে পোস্তায় নির্মিয়মান সেতু ভেঙে পড়ায় কোনও প্রাণহানি ঘটেনি।
প্রসঙ্গত, রবিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪২ মিনিটে মাচ্ছু নদীর উপর মোরবীতে আচমকা ভেঙে পড়ে ব্রিটিশ আমলের তৈরি ওই ঝুলন্ত সেতু। সেই সময় ওই সেতুতে শতাধিক মানুষ ছিলেন বলে দাবি করা হয়। কিছু দিন বন্ধ রেখে সংস্কারের পর গত ২৬ অক্টোবর আবার ওই সেতু জনগণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। তার ৫ দিনের মধ্যেই এই বিপর্যয় ঘটে। অভিযোগ, এই সেতু জনসাধারণের জন্য চালু করার আগে প্রশাসনের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত নেওয়া হয়নি। সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে কোনও ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ নেওয়া হয়নি। রবিবার সন্ধ্যার বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হিসাবে কর্তৃপক্ষের এই গাফিলতিকে দায়ী করছেন কেউ কেউ।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে যখন মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়েছিল, ঠিক এ ভাবেই প্রশ্নের মুখে পড়েছিল রাজ্য পূর্ত দফতর। যদিও, সেই সময় দফতরের দায়িত্বে ছিলেন না পুলক। কিন্তু মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরেই একের পর রাজ্যের সব সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছিলেন সেতু বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের পরামর্শেই ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হয়েছেন নতুন টালা সেতু। যা পুজোর আগেই উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মঙ্গলবারের বৈঠকের পর রাজ্যের সেতুগুলির স্বাস্থ্য বা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয় কি না, সে দিকেই তাকিয়ে পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy