বিশ্বভারতীর বিদেশি গবেষক ছাত্র অপহরণের ঘটনায় ধৃতরা বোলপুর আদালতে শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বভারতীর অপহৃত বিদেশি গবেষক-ছাত্রকে ওড়িশার তালসারি থেকে উদ্ধার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাঁকে বোলপুরের বাড়ি থেকে অপরহরণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। শনিবার তালসারির সমুদ্র সৈকত থেকে তাঁকে উদ্ধার কর হয় বলে বীরভূম জেলা পুলিশের দাবি। অপহরণ-কাণ্ডে মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে তিন জন দুবরাজপুর, এক জন নানুর ও বাকি আট জন পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রের দাবি, মায়ানমারের ওই পড়ুয়াকে অপহরণের নেপথ্য রয়েছে কোটি কোটি টাকার লেনদেন। তদন্তে নেমে বীরভূম জেলা পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই ছাত্র বিশ্বভারতীতে পড়াশোনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কোনও চক্রের সঙ্গে সম্ভবত যুক্ত। অভিযোগ, ওই ব্যবসায় টাকা নিয়ে গণ্ডগোলের জেরেই তাঁকে বোলপুরের ইন্দিরাপল্লির ভাড়া বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল চক্রের বেশ কয়েক জন সদস্য।
পুলিশ জানতে পারে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ১২-১৪ জন যুবক দু’টি গাড়িতে এসে ওই ছাত্রকে তুলে নিয়ে যায়। একটি ছিল কালো এসইউভি, অন্যটি ছোট গাড়ি। শনিবার দুপুরে বোলপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করে জেলা পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ এবং বীরভূম জেলা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে অপহৃত ছাত্রকে উদ্ধার করার পাশাপাশি ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। যে গাড়ি দু’টি ব্যবহার করা হয়েছিল, সেগুলির পাশাপাশি একটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার হয়েছে। অবৈধ ব্যবসা সংক্রান্ত লেনদেনে এই ছাত্র জড়িয়ে পড়েছিলেন কি না, বা অন্য কোনও উদ্দেশ্যে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ সুপার খোলসা করে কিছু বলতে না চাইলেও জেলা পুলিশেরই বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে, ধৃতেরা আন্তর্জাতিক (চুল) পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত। বিদেশি ছাত্রটি তাঁদের সঙ্গে কাজ করতেন বলেও দাবি। তাঁরা সকলেই কাজ করেন পূর্ব মেদিনীপুরের এক চুলের কারবারির অধীনে। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, বিশ্বভারতীতে সংস্কৃতে পিএইচডি করার পাশাপাশি ওই ছাত্রের চুলের ব্যবসাও বেশ জমে উঠেছিল। সেই সূত্রে তিনি কয়েক কোটি টাকা ধার নিয়েছিলেন। অনেকটা টাকা মেটালেও বেশ কিছু টাকা বাকি ছিল। সেটা আদায় করতেই সম্ভবত তাঁকে অপহরণ করা হয়, ধারণা পুলিশের। ধৃতদের মধ্যে দুবরাজপুরের তিন জনকে এ দিন বোলপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক অভিযুক্তদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। বাকিদের আজ, রবিবার আদালতে পেশ করা হবে বলে খবর।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বভারতীর অভিযোগ পাওয়ার পরে দ্রুত তদন্তে নামে বোলপুর থানার পুলিশ। অপহৃত ছাত্রের ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করার পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে থাকা নজর ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করে তারা। পুলিশ সূত্রের খবর, দু’টি গাড়ির সূত্র খুঁজতে গিয়ে নানুরের এক চুলের কারবারির খোঁজ মেলে। সেই সূত্রে আসে দুবরাজপুরের নাম।
এসইউভিতে বিশ্বভারতীর পড়ুয়া অপহৃত হলেও অন্য ছোট গাড়িটি দুবারজপুর ফিরে এসেছিল। শুক্রবার গভীর রাতে সেই চুল কারবারি, ছোট গাড়ির চালক এবং এক যুবককে আটক করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই সব জানা যায়। তার পরেই এ দিন তালসারি থেকে বিদেশি ছাত্রকে উদ্ধার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy