সাগরদিঘির কংগ্রেস বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। ফাইল চিত্র।
শূন্যের গেরো কাটিয়ে রাজ্য বিধানসভায় কংগ্রেস ফের খাতা খুলেছে তাঁরই দৌলতে। শাসক তৃণমূল কংগ্রেসকে হারানো তো বটেই, বিজেপিকে পিছনে ঠেলে হারানো জমি পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে বাম ও কংগ্রেসকে বড় রসদ দিয়েছে তাঁর জয়। কিন্তু রাজ্য রাজনীতির বহুচর্চিত উপনির্বাচনের ফলের পরে আর কোনও কর্মসূচিতে দেখাই যাচ্ছে না সাগরদিঘির কংগ্রেস বিধায়ক বাইরন বিশ্বাসের। রাজ্যে দলের কোনও কর্মসূচিতে এখনও নতুন বিধায়কের আত্মপ্রকাশ ঘটেনি। মুর্শিদাবাদ জেলায় ইদানিং কালের আন্দোলন-কর্মসূচিতেও তিনি অনুপস্থিত।
উপনির্বাচনে জেতার পরেও বিধায়ক হিসেবে কেন বাইরনের শপথ হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলে আসরে নেমেছিল কংগ্রেস। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছে বাইরনকে নিয়ে গিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তারও কিছু দিন পরে রাজ্যপাল বোসকে অধীরের ফোনের সূত্রে শপথের জট খুলেছিল। বিধানসভা সূত্রের খবর, সেই সময়েও শপথের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যাওয়ার পরে বাইরনের তরফে অনুরোধ এসেছিল শপথ গ্রহণ আরও একটু পিছিয়ে দেওয়ার। কারণ, তিনি অসুস্থ। স্পিকারের ব্যস্ততার জন্য পরে আবার কখন সময় দেওয়া যাবে, তার ঠিক নেই— বিধানসভার সচিবালয়ের এই বার্তা পেয়ে শেষমেশ নির্দিষ্ট দিনেই শপথ নিতে হাজির হয়েছিলেন বাইরন। তার পর থেকে বিধানসভার কোনও কমিটির বৈঠক বা কোনও কারণের জন্যই আর দেখা মেলেনি কংগ্রেস বিধায়কের। তাঁর ফোনও ক্রমাগত বন্ধ। তবে কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, তিনি এখনও অসুস্থ।
সাগরদিঘিতে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীর জয়ের পরে সরকারি বেশ কিছু প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। সরকার অবশ্য এর পিছনে প্রক্রিয়াগত কারণ দেখিয়েছে। সমস্যা কাটিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও সরকারি সূত্রের বক্তব্য। কিন্তু এই অভিযোগকে সামনে রেখে কয়েক দিন আগে স্থানীয় বিডিও কার্যালয়ের বাইরে প্রতিবাদ-অবস্থানে গিয়েছিলেন স্বয়ং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর। সেখানেও বিধায়ককে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। কংগ্রেসের একটি সূত্রের বক্তব্য, প্রদেশ সভাপতিকে বিধায়ক বলেছিলেন অসুস্থতার জন্য অবস্থানে শামিল হতে পারেননি।
আদানি-কাণ্ডে যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ে তদন্তের দাবিতে এবং রাহুল গান্ধীর সাংসদ-পদ খারিজের প্রতিবাদে এআইসিসি-র নির্দেশে এখন দেশ জুড়ে কংগ্রেসের সত্যাগ্রহ কর্মসূচি চলছে। সচরাচর যাঁদের দলের কর্মসূচিতে দেখা যায় না, সেই কংগ্রেস নেতারাও দল বা কোনও না কোনও শাখা সংগঠনের ডাকা সত্যাগ্রহে শামিল হয়েছেন। রোজ়া রেখেও বর্ষীয়ান নেতা আব্দুল মান্নান সত্যাগ্রহে গিয়েছেন, অম্বেডকর জয়ন্তীতেও অংশগ্রহণ করেছেন। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক পুলওয়ামার হামলা নিয়ে যা দাবি করেছেন, তা নিয়েও সরব কংগ্রেস এবং দলের মুখপাত্রেরা। কিন্তু এই পর্বের কোথাওই বাইরন নেই। রমজানের মধ্যেই নানা জায়গায় কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে আইএসএফের একমাত্র বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীকে। যেখানে সংগঠন আছে, সেখানে গিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে কর্মী সম্মেলনও করছেন তিনি। বিধানসভায় এসে এর মধ্যেই নওসাদ খোঁজ করেছেন বাইরনের। কারণ, তৃণমূল ও বিজেপির বাইরে বিরোধী শিবিরের প্রতিনিধি হিসেবে নওসাদের সঙ্গী হওয়ার কথা বাইরনেরই।
বাইরনের অনুপস্থিতি নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা না পাওয়া গেলে নানা রকম জল্পনা যে বাড়বে, দলের অন্দরে মেনে নিচ্ছেন কংগ্রেস নেতাদের অনেকেই। এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়ের বক্তব্য, ‘‘উনি অসুস্থ। মাঝে কিছু দিন হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন বলে শুনেছি। অসুস্থতার জন্যই কর্মসূচিতে থাকতে পারছেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy