একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ড. সিভি আনন্দ বোসকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী রাজ্যপাল হিসাবে নিয়োগ করা হল। ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্যপাল হচ্ছেন সি ভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি ভবন এই ঘোষণা করেছে। একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, সি ভি আনন্দ বোসকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী রাজ্যপাল হিসাবে নিয়োগ করা হল। তিনি যে দিন থেকে দায়িত্ব নেবেন সেই দিন থেকেই এই নির্দেশ কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়েছে।
নতুন রাজ্যপালের পদবি ‘বোস’ হলেও তিনি বাঙালি নন। দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু বা কেরলে বাংলার সুভাষচন্দ্র বসু (বোস)-র নামে নাম রাখার রেওয়াজ আছে। সেই কারণেই তাঁর পদবি বোস বলেই অনেকের অভিমত। প্রাক্তন আইএএস আনন্দ মেঘালয় সরকারের উপদেষ্টা পদে ছিলেন। তাঁর জন্ম কেরলের কোট্টায়ামে— ১৯৫১ সালের ২ জানুয়ারি। দীর্ঘ দিন ধরেই প্রশাসনিক কাজের সঙ্গে জড়িত। কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যদিও তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ম্যান অফ আইডিয়া’ হিসাবেই পরিচিত। আনন্দের ভাবনা কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে কাজে লাগানো হয়েছে। বিশেষ করে দেশের সবার জন্য পাকা বাড়ির ভাবনাটি মোদী নিয়েছিলেন তাঁর কাছ থেকেই। কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর সচিব হিসাবে কাজ করেছেন আনন্দ। এ ছাড়াও কেরল সরকারের বিভিন্ন দফতরের প্রধান সচিব হিসাবে দায়িত্ব সামলেছেন। পেয়েছেন ২৯টি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কারও।
কেরল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আনন্দ নিজের শিক্ষাজীবনে একশোটিরও বেশি পদক পেয়েছেন। যার মধ্যে ১৫টিই স্বর্ণপদক। সুবক্তা হিসাবেও নাম ছিল তাঁর। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন পর পর তিন বছর সেরা বক্তার স্বীকৃতি ছিল তাঁরই দখলে। এমনকি, মুসৌরির লালবাহাদুর শাস্ত্রী আইএএস ট্রেনিং অ্যাকাডেমিতেও বিতর্ক সভায় প্রথম হয়েছিলেন আনন্দ। আনন্দ শুধু সুবক্তা নন, লেখকও। তিনটি ভাষা— ইংরেজি, হিন্দি এবং মালয়ালমে ৪০টি বই লিখেছেন বাংলার নতুন রাজ্যপাল। এর মধ্যে যেমন উপন্যাস রয়েছে, তেমনই রয়েছে ছোটগল্প সংগ্রহ, এমনকি, কবিতার বইও। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি বই ‘বেস্টসেলার’ও।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার পর এ রাজ্যের অস্থায়ী রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন লা গণেশন। তবে তাঁকে নিয়ে বিজেপির অন্দরে অসন্তোষ ছিল। সম্প্রতি বিজেপির পরিষদীয় দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীও অভিযোগ করেছিলেন গণেশনের বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে রাজ্য সরকারের মন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্য প্রসঙ্গে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি। বার বার সময় চেয়েও রাজ্যপাল তা দেননি বলেও অভিযোগ। রাজভবনে গিয়েও গণেশনের দেখা না পেয়ে তাঁর সচিবের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে আসেন শুভেন্দুরা। রাজভবন থেকে বেরিয়ে রাজ্যের অস্থায়ী রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনেই উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
একা শুভেন্দু নন, গণেশনকে নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছিলেন বিজেপির নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালও। অস্থায়ী রাজ্যপালের সঙ্গে প্রাক্তন রাজ্যপাল ধনখড়ের তুলনা টেনে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ধনখড় নিরপেক্ষ ছিলেন। কিন্তু এই রাজ্যপালের কাছে সময় পেতে সমস্যা হয়।’’
যদিও গণেশনকে নিয়ে বিরোধী বিজেপির অন্দরে অসন্তোষ থাকলেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে কালীপুজোয় গিয়েছিলেন গণেশন। আবার গণেশনের দাদার জন্মদিনে চেন্নাইয়ে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন মমতাও। নতুন রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক কোন খাতে বইবে, তা দেখার অপেক্ষায় রাজনৈতিকক মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy