Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Kamduni Case

অর্ধেকের বেশি সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি, মামলার মূল সাক্ষীকে খুন করা হয়েছে, অভিযোগ তুলল কামদুনি

কামদুনির পরিস্থিতিও ধীরে ধীরে তাতছে। মঙ্গলবার যখন কলকাতা শহরের রাজপথে মিছিলে হাঁটছেন কামদুনির মানুষ, তখনই সেখানকার বিজেপি কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

kamduni.

কলকাতায় নাগরিক মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৪৭
Share: Save:

মামলার প্রধান সাক্ষীকে খুন করা হয়েছে, অভিযোগ তুলল কামদুনিতে মৃতার পরিবার। একই অভিযোগ শোনা গেল কামদুনি আন্দোলনের অন্যতম প্রতিবাদী মুখে মৌসুমী কয়ালের মুখেও। তাঁদের আরও অভিযোগ, অর্ধেকের বেশির সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণই হয়নি।

কলকাতার রাজপথে মঙ্গলবার তপ্ত দুপুরে প্রতিবাদী মিছিলে এই সব কথা বলতে গিয়ে কেউ কাঁদলেন, কেউ হাঁটতে হাঁটতে অসুস্থও হয়ে পড়লেন। কোথাও বিদ্রোহ, কোথাও হামলার অভিযোগ ঘিরে মঙ্গলবার সকাল থেকে সারাটা দিন উতপ্ত হয়ে থাকল কামদুনি থেকে কলকাতা।

সুপ্রিম কোর্ট, হাই কোর্টের আগে আরও দু’টি আদালতে চলে কামদুনি মামলার বিচার। মৌসুমী কয়াল এ দিন অভিযোগ করেন, ‘‘নগর দায়রা আদালতে বিচার চলার সময় পুলিশের ধাক্কা, লাঠির ঘায়ে জখম হন এই মামলার মূল সাক্ষী, মৃতার কাকা। মারাও যান। দশটা বছর ধরে এ ভাবেই খুন করা হয়েছে কামদুনির তদন্ত, সাক্ষী ও মামলাকে। তাই দোষীরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে।’’ কলেজ থেকে ফেরার পথে কামদুনি মোড়ে এই কাকার সঙ্গেই ‘শেষ’ দেখা হয়েছিল মৃত ছাত্রীটির। মৃতার ভাইও বলেন, ‘‘আমার মা-বাবা বা এ ঘটনার প্রতিবাদীদের নাম থাকলেও কারও সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি। অর্ধেক সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণই হয়নি।’’

কামদুনি ঘটনার সময়ে বারাসতে কর্মরত ছিলেন, এমন এক পুলিশকর্তা এ দিন বলেন, ‘‘নগর দায়রা আদালতে কামদুনি মামলার শুনানির সময়ে ভিড় ঠেকাতে কলকাতা পুলিশ কিছু ব্যবস্থা নেয়। ওই সাক্ষী (কাকা) অসুস্থও ছিলেন। ফলে পুলিশ মূল সাক্ষীকে নিশানা করে খুন করেছে, এই অভিযোগ কখনওই ঠিক নয়।’’

এ দিন দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদ থেকে মিছিল শুরুর আগে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৌসুমী ও টুম্পা কয়াল। মিছিল শেষে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অসুস্থও হয়ে পড়েন। টুম্পার কথায়, ‘‘বিচারের দাবিতে ১০ বছর ধরে ছুটছি। আর শরীর চলছে না। তবে বিচার চাইতে আমরা দিল্লি যাবই।’’ মৃতার দাদাও একই কথা বলেন।

কামদুনির পরিস্থিতিও ধীরে ধীরে তাতছে। মঙ্গলবার যখন কলকাতা শহরের রাজপথে মিছিলে হাঁটছেন কামদুনির মানুষ, তখনই সেখানকার বিজেপি কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। জোর করে এলাকায় দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ ওঠে।

মঙ্গলবার কামদুনিতে মিছিল করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির ২২ জন বিধায়ক। বিজেপির কর্মসূচি উপলক্ষে সকালে এলাকায় দলের পতাকা লাগান বিজেপি কর্মীরা। লোকজন নিয়ে পাল্টা পতাকা লাগাতে দেখা যায় তৃণমূলের স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য একেএম ফারহাদকেও। বিকেলে কামদুনি থেকে শুভেন্দু ফিরে যাওয়ার পরে দু’পক্ষের গোলমাল বাধে। কামদুনি হাই স্কুলের পাশেই রয়েছে পুলিশ ক্যাম্প। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় সাদা পোশাকের পুলিশ, রাজ্য গোয়েন্দারাদেও টহল দিতে
দেখা যায়।

এর মধ্যে চার জন আসামী হাই কোর্টের রায়ে সোমবার সংশোধনগার থেকে বেরোলেও গ্রামে ফেরেনি। কামদুনি সংলগ্ন পাশের তিনটি গ্রামের বাসিন্দা তারা। ওই এলাকায় অচেনা মুখ দেখলে বাধা দিচ্ছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। সব মিলিয়ে এই পরিস্থিতিতে তাঁরাও আতঙ্কে রয়েছেন বলে এ দিন জানান কামদুনিবাসীরাও। মৌসুমী বলেন, ‘‘চার জনকে মুক্তি দেওয়ায় গ্রামবাসীরা ভয় পেয়েছেন। মেয়েরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে।’’ টুম্পার কথায়, ‘‘আমাদেরও গ্রেফতার করে রেখে দিক। না হলে যারা ছাড়া পেয়েছে, তারাই মেরে ফেলবে।’’

(সহ-প্রতিবেদন: অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য, মেহবুব কাদের চৌধুরী, ঋষি চক্রবর্তী)

অন্য বিষয়গুলি:

Kamduni Case kamduni Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy