কলকাতার ঘাটগুলিতে চলছে বিসর্জনের প্রস্তুতি। ফাইল চিত্র
রাত পোহালেই বিজয়া দশমী! হিন্দু বাঙালিদের সেরা পার্বণের সমাপ্তি তিথি। মা উমা মর্ত্য ছেড়ে পাড়ি দেবেন কৈলাসে। আর মৃন্ময়ী মূর্তির বিসর্জন হবে নদী,জলাশয়ে। এই রীতি যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়, নবমী তিথি থেকেই বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল কলকাতা পুরসভা। প্রতি বছর কলকাতার গঙ্গায় সব মিলিয়ে হাজার চারেক প্রতিমার নিরঞ্জন হয়। কলকাতায় গঙ্গার সবক’টি ঘাটের মধ্যে বেশি বিসর্জন হয় জাজেস ঘাট, বাজা কদমতলা ঘাট এবং নিমতলা ঘাটে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই তিনটি ঘাটে মোট চারটি ক্রেন থাকবে। বাজা কদমতলা ঘাটে গঙ্গার জলে ভাসমান বার্জের উপর একটি ক্রেন থাকবে এবং পাড়েও একটি ক্রেন থাকবে। নিমতলা এবং জাজেস ঘাটে পাড়ের উপরে একটি করে ক্রেন থাকবে। জলে প্রতিমা পড়লেই সেই ক্রেন দিয়ে কাঠামো টেনে তোলা হবে।
গত বছরের মতোই করোনা সংক্রমণের সতর্কতা ও বিধি মেনেই হবে বিসর্জন। গঙ্গার জল যাতে দূষিত না হয়, তার জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের গাইডলাইন মেনে ফুল,মালা এবং পুজোর অন্যান্য সামগ্রী গঙ্গার তীরেই একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা হবে। এ জন্য কলকাতা পুরসভার পর্যাপ্ত কর্মী, পর্যাপ্ত পুলিশ এবং পর্যাপ্ত পরিকাঠামো রাখা হবে গঙ্গার ঘাটগুলিতে। শহরের ভিতরে যে জলাশয়গুলি রয়েছে, সেখানো যাতে নিরঞ্জন প্রক্রিয়া সুষ্ঠ ভাবে হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হবে বলে জানিয়েছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ।
বিসর্জন সংক্রান্ত বিষয় দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন কলকাতা পুর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য দেবাশিস কুমার। গত শনিবার ঘাট পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তিনি জানতে পারেন, জাজেস ঘাট লাগোয়া যে রেল লাইন রয়েছে, সেটি ভেঙে গিয়েছে। ফলে ওই ঘাটে বিসর্জন প্রক্রিয়া সমস্যার মুখে পড়তে পারে। কলকাতা পুরসভা রেলকে চিঠি দিয়ে বিসর্জন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে ওই ট্র্যাকটিকে মেরামত করে দেওয়ার আর্জি জানায়। কিন্তু বিষয়টিতে দীর্ঘসূত্রিতার সম্ভাবনা থাকায় পুরসভার পক্ষ থেকেই ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। প্রতিমা নির়ঞ্জন নিয়ে গত কয়েক বছরে দূষণ সংক্রান্ত অনেক অভিযোগ উঠেছে। তাই কলকাতা পুরসভা হেস্টিংস এলাকার একটি গঙ্গার ঘাটে পরীক্ষামূলক ভাবে হোসপাইপ দিয়ে প্রতিমা গলাতে উদ্যোগী হয়েছে। ডিজি (জল) মৈনাক মুখোপাধ্যায়কে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর তত্ত্বাবধানেই কলকাতা বন্দর এলাকার তক্তাঘাট এলাকায় বাছাই করা চার পাঁচটি প্রতিমা নিয়ে বিজয়া দশমীর দিন এই নতুন পদ্ধতিতে নিরঞ্জন হবে।
নতুন এই পদ্ধতি প্রতিমার গায়ে থাকা রং ও রাসায়নিক পদার্থের গঙ্গায় মিশে যাওয়া রোধ করবে। পাশাপাশি এই পদ্ধতিতে প্রতিমার মাটিও পৃথক করে দেওয়া যাবে। প্রতিমা নিরঞ্জনে ব্যবহৃত জল গঙ্গায় পাঠানো হবে। নতুন এই পদ্ধতি পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকায় বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি পুরসভার কোনও কর্তা। তবে কলকাতা পুরসভার কর্তৃপক্ষের আশা, শুক্রবার বিজয়া দশমীর দিনে বেশিরভাগ বিসর্জন হবে বাড়ির প্রতিমাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy