ন্যায্য ডিএ-র দাবিতে অবস্থানরত সরকারি কর্মচারীরা। — ফাইল চিত্র।
মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) দাবিতে প্রশাসনিক ধর্মঘটে শামিল হয়েছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। সেই ধর্মঘটে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের স্কুলশিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের একাংশও। ১০ মার্চ সেই ধর্মঘটে যে সব সরকারি কর্মচারীরা শামিল হয়েছিলেন, তাঁদের তথ্য আগেই নিয়েছিল নবান্ন। এ বার স্কুলশিক্ষকদের ক্ষেত্রে আরও একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করল শিক্ষা দফতর। প্রশাসনিক ধর্মঘটে যে সমস্ত শিক্ষক যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের যাবতীয় তথ্য শিক্ষা দফতরকে জানাতে জেলার শিক্ষা আধিকারিকদের (ডিআই) নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা দফতর। নির্দেশ মতো যাবতীয় তথ্য ডিআইরা মেল করে শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু এ বার স্কুলে শিক্ষকদের উপস্থিতি জানতে হাজিরার খাতার প্রতিলিপি চাইল শিক্ষা দফতর। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্যের সমস্ত জেলার ডিআইদের এই তথ্য শিক্ষা দফতরে জমা দিতে বলা হয়েছে। ডিআইরা অবশ্য নির্দেশ পাওয়ার পরে জুন মাসের গোড়া থেকেই এই কাজে হাত লাগিয়েছিলেন। আগে ‘সফ্ট কপি’ হাতে পেলেও এ বার ‘হার্ড কপি’ জমা দিতে বলা হয়েছে।
শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহ শেষ হতেই সব জেলার ডিআইরা তথ্য জমা দেবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে শিক্ষা মহলে প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনিক ধর্মঘটের প্রায় চার মাস পর কেন স্কুলের হাজিরার খাতার প্রতিলিপি চেয়েছে শিক্ষা দফতর? বিভিন্ন স্কুলের প্রধানশিক্ষকদের তুলে দেওয়া তথ্য ডিআইরা ইতিমধ্যেই মেল মারফত পাঠিয়ে দিয়েছিলেন শিক্ষা দফতরে। তা সত্ত্বেও কেন হাজিরার খাতার প্রতিলিপি চাওয়া হল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বিকাশ ভবনের একাংশের মতে, শিক্ষা দফতর মনে করছে মেল মারফত পাঠানো তথ্যে গলদ থাকতে পারে। তাই প্রশাসনিক ধর্মঘটের দিন শিক্ষকদের হাজিরার প্রকৃত তথ্য জানতে প্রয়োজন হাজিরা খাতা। ওই দিন প্রশাসনিক ধর্মঘটে শামিল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি শিক্ষা দফতরের এই আচরণকে প্রতিহিংসামূলক বলেই ব্যাখ্যা করছেন।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডলের অভিযোগ, ডিএ-র জন্য আন্দোলনে শামিল হওয়া গণতান্ত্রিক অধিকার। সরকার সেই অধিকার হরণ করতে চাইছে। এ ভাবে সরকারি কর্মচারীদের অধিকার হরণ করা যায় না। যদি রাজ্য সরকার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করে, তা হলে শিক্ষকেরাও পাল্টা জবাব দিতে তৈরি। তবে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি মনে করছে, শিক্ষা দফতর তার অধিকারের মধ্যে থেকেই ওই দিন শিক্ষকদের উপস্থিতির কথা জানতে চেয়েছে। তাই এই আচরণ প্রতিহিংসামূলক হতে পারে না। উল্লেখ্য, গত শনিবার হাজরা মোড়ে তৃণমূল সমর্থিত সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ কর্মচারী ফেডারেশনের সভায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, ডিএ পাওয়া কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দেওয়ার কথা যিনি সবচেয়ে বেশি ভাবেন তিনি হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। তার পরেই এই নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy