সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। —ফাইল চিত্র ।
কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন। তার পরে অনুমতি নিয়ে হাসপাতালের অসহযোগিতার অভিযোগ। এবং সব শেষে ৪ জানুয়ারি এসএসকেএমের শয্যা থেকে প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মধ্যরাতে নমুনা সংগ্রহের জন্য ‘কাকু’কে জোকা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। এত কাঠখড় পুড়িয়ে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের প্রায় সাড়ে তিন মাস পরে কলকাতা হাই কোর্টে তার ফরেন্সিক রিপোর্ট পেশ করতে পারে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির সূত্রে দাবি, আদালতের কাছে ওই কণ্ঠস্বরের নমুনার ফরেন্সিক রিপোর্ট ২২ এপ্রিল, সোমবারই জমা দিতে পারে তারা।
ইডি সূত্রে এই সম্ভাবনার কথা শোনা গেলেও মাঝে সাড়ে তিন মাসেরও বেশি সময় এই ‘রিপোর্ট’ নিয়ে প্রশ্নের মুখে তদন্তকারী সংস্থাটির ‘শীতঘুম’। আমজনতার জটলা থেকে সমাজমাধ্যম— অনেক জায়গাতেই জিজ্ঞাসা, অত ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, অমন নাটকীয় ভাবে মধ্যরাতে কণ্ঠস্বরের যে নমুনা সংগ্রহ করা হল, তা ‘কাকু’রই কি না, শুধু সেই রিপোর্ট দাখিলে এত সময় লাগল কেন?
একই কথা বলছেন আইনজীবীদের একাংশও। নিয়োগ দুর্নীতি-মামলার আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘তদন্তের ক্ষেত্রে ওই রিপোর্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ইডির তরফে সেই রিপোর্ট সংগ্রহ করে আদালতে জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘ কয়েক মাস তৎপরতার অভাব দেখা যাচ্ছে। তদন্তের গাফিলতি কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা ফুটে উঠছে এতে। মামলার দ্রুত শুনানি এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরুর জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশ রয়েছে। (তা সত্ত্বেও) ইডির এই ভূমিকা লজ্জাজনক।’’ তবে আর এক মামলাকারী আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “আগের শুনানিতে ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি ও ইডির তদন্তকারীদের মধ্যে সমন্বয়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। পরবর্তী শুনানিতে ওই রিপোর্ট পেশ করার জন্য আবেদন করা হয়েছে। তখন ওই রিপোর্টের বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করা হবে।’’
একই দাবি ইডি সূত্রেরও।
দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ায় বেসরকারি সংস্থা লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের। ইডি-র বিবৃতি জানিয়েছিল, তার সিইও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সংস্থার সূত্রে নাম উঠে আসে ‘কাকু’র। গ্রেফতারের পরে মাসের পর মাস ধরে এসএসকেএমে ভর্তি থাকার পরে এখন তিনি জেলে রয়েছেন। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, তাঁর ফোন থেকে এমন কিছু অডিয়ো ক্লিপ পাওয়া গিয়েছিল, যা ‘প্রভাবশালীদের’ বিরুদ্ধে মামলায় গুরুত্বপূর্ণ নথি হতে পারে। সেই কারণেই ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা। পরে তা পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে।
অনেকেরই প্রশ্ন, যে ‘কণ্ঠের’ এ হেন গুরুত্ব, তার রিপোর্ট পেশে সাড়ে তিন মাস কেন? শেষমেশ ২২ তারিখ সত্যিই তা আদালতের কাছে জমা পড়বে তো? উত্তরের খোঁজে নজর সোমবারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy