স্বাস্থ্য ভবনের সামনে নার্সদের বিক্ষোভের ছবি। মঙ্গলবার। ফাইল চিত্র।
সংরক্ষণের আইনেই আটকে যাবে নার্সদের চাকরি পাওয়ার স্বপ্ন। কারণ যে শূন্যপদে চাকরির দাবিতে গত দু’দিন ধরে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তা আসলে সংরক্ষিত আসন। কোনও সাধারণ শ্রেণিভুক্ত বা জেনারেল ক্যটাগরির নার্সের ওই আসনে চাকরি পাওয়ার সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে।
বুধবার রাজ্যের হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের এক কর্তা এই তথ্য জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, যে তিন হাজার শূন্য আসনে নিয়োগের দাবি নার্সরা জানাচ্ছেন, তার দ্রুত এবং সহজ সমাধান কখনওই সম্ভবই নয়। কেন না পুরো প্রক্রিয়াটিই অত্যন্ত ঘোরালো আর জটিল।
স্বাস্থ্য নিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়ও বলেন, উচ্চ আদালতের যে রায়, সেই অনুযায়ী সংরক্ষিত ক্যাটাগরির জন্য যে আসন তাতে অসংরিক্ষত শ্রেণিভুক্তদের নিয়োগ করতে হলে আইনি জটিলতার মুখে পড়তে হতে পারে। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ অধিকর্তা অন্য কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, অসংরিক্ষত বা আনরিজার্ভড ক্যাটাগরিতে নিয়োগের কোনও সুযোগই নেই। নার্সের যে শূন্যপদ গুলি রয়েছে তার সব ক’টিই সংরক্ষিত। সেখানে শুধুমাত্র সংরক্ষিত শ্রেণির প্রার্থীরাই চাকরি পাবেন। এ ব্যাপারে শীঘ্রই উদ্যোগ নেবে হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড। তবে যাঁরা বাকি থাকবেন তাঁরা পরের বছর পরীক্ষা দিতে পারবেন এবং পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও অংশ নিতে পারবেন।
সোমবার থেকেই স্বাস্থ্যভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন নার্সিং পরীক্ষার কৃতকার্যরা। শূন্যপদে আরও নার্স নিয়োগের দাবি ছাড়াও বিক্ষোভ তালিকা তৈরির ব্যাপারে দুর্নীতির অভিযোগও এনেছেন তাঁরা। নার্সদের ওই অভিযোগ প্রসঙ্গে হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের নিয়োগ কর্তা জানিয়েছেন, টোটাল নোটিফিকেশন বা নার্সদের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল ৬১১৪ জনের জন্য। এর মধ্যে ৩০৮১ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বাকি আছে ৩০৩৩। নিয়োগ বোর্ডের কর্তার দাবি, এই বাকি থাকা পদের পুরোটাই সংরক্ষিত আসন। সেখানে কোনও জেনারেল ক্যাটাগরির নার্স চাকরি পাবেন না।
নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনকারী নার্সদের অভিযোগ ছিল, ৩০৮১ জনের নিয়োগের যে প্রথম তালিকাটি প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দুর্নীতি হয়েছে। সেখানে নির্ধারিত সংখ্যার থেকে বেশি সংরক্ষিত শ্রেণির নার্স রয়েছেন। অনেকের রেজিস্ট্রেশনই নেই। তার পরও নাম উঠেছে তালিকায়। এই অভিযোগের জবাবে ওই নিয়োগ কর্তার দাবি, প্রথম তালিকায় সংরক্ষিত এবং অসংরক্ষিত দুই শ্রেণিরই নার্স রয়েছেন । তালিকাটি প্রস্তুত করা হয়েছে মেধার ভিত্তিতে। নম্বরের বিচারে যদি কোনও সংরক্ষিত শ্রেণির নার্স সেই তালিকাভুক্ত হয়ে থাকেন তবে তা হয়েছে তাঁর মেধার কারণেই। নিয়োগকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, সংরক্ষিত শ্রেণিভুক্ত বলে তো তাঁর মেধাকে অস্বীকার করা সম্ভব নয়। তা করা উচিতও নয়। তবে রেজিস্ট্রেশন না থাকার অভিযোগটি নিয়ে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করা হয়েছএ বলে জানিয়েছেন ওই কর্তা। তিনি জানিয়েছেন, বুধবার থেকেই তালিকাভুক্তদের রেজিস্ট্রেশন যাচাই করার কাজ শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনে ডেকে পাঠানো হয়েছে তাঁদের।
তবে কি শূন্যপদে চাকরির যে দাবি নার্সরা জানাচ্ছেন, তা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়? ওই কর্তার মতে, ‘‘তার অত্যন্ত ক্ষীণ সুযোগ রয়েছে। প্রথমে এই তিনহাজার সংরক্ষিত আসনের জন্য তিন বার বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। প্রথমে সুযোগ পাবেন সংরক্ষিত বা রিজার্ভড ক্যাটাগরির নার্সেরাই। তারপরও যদি আসন শূন্য থাকে তবে অসংরক্ষিত শ্রেণিভুক্তরা সুযোগ পেতেও পারেন।’’ ফলে একেবারে সুযোগ নেই, এমনটা ভেবে নেওয়াও ঠিক নয়। তবে বিষয়টিতে অনেক জটিলতা রয়েছে। অনিশ্চয়তাও রয়েছে।
প্রসঙ্গত গত দু’দিনের নার্সদের বিক্ষোভেক ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বুধবার সকাল থেকেই আঁটোসাঁটো নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় সল্টলেকে স্বাস্থ্যভবনের চারপাশ। বিক্ষোভের কথা ভেবে আগাম জলকামানও প্রস্তুত রাখতে দেখা যায় নিরাপত্তাকর্মীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy