কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
স্ত্রীকে আটকে রেখেছেন কন্যা। মাসখানেক ধরে স্ত্রীর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। কন্যার দাবি না মানার কারণে ওই প্রতিশোধ। স্ত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক— এই আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ ৭৫ বছরের স্বামী। পেশায় তিনি দন্ত চিকিৎসক। তাঁর বক্তব্য, মেয়েকে ২০ লক্ষ টাকা দিতে না পারায় স্ত্রীকে লুকিয়ে রেখেছেন। বাড়িতে ফিরিয়ে দিচ্ছেন না। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও কাজ হয়নি। এই বয়সে স্ত্রীকে ছাড়া একদম চলে না। তাই স্ত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করুক আদালত। অন্য দিকে, পুলিশের দাবি, ওই দম্পত্তির ৪২ বছরের দীর্ঘ দাম্পত্য জীবন। অথচ এই বৃদ্ধ বয়সে এসে স্ত্রীর উপর অত্যাচার করছেন ওই চিকিৎসক। তাঁর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ রয়েছে। চিকিৎসক বৃদ্ধকে মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে হাই কোর্ট। আগামী ১৬ জানুয়ারি বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি রয়েছে।
স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে কসবার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন ওই চিকিৎসক। ২০১২ সালে তিনি অবসর নেন। তাঁর কন্যাও পেশায় চিকিৎসক। হাই কোর্টে মামলাকারী জানান, কয়েক বছর আগে কন্যার প্রথম বিয়ে হয়। তা স্থায়ী না হওয়ায় তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তার পর থেকেই কন্যার আচরণে পরিবর্তন দেখা যায়। সম্প্রতি ডাক্তারি চেম্বার করতে চেয়ে তিনি বাবার কাছে ২০ লক্ষ টাকা দাবি করেন। বৃদ্ধের দাবি, বসবাসের ফ্ল্যাট বিক্রি করে ওই টাকা নিতে চান কন্যা। তাতে রাজি না হওয়াতেই হুমকি দেন কন্যা। কন্যা জানিয়েছিলেন, বাবার কাছ থেকে মাকে তিনি লুকিয়ে রাখবেন। পরবর্তী সময়ে তেমনটাই ঘটে বলে অভিযোগ মামলাকারী বাবার।
গত বছর ৩ ডিসেম্বর বাবার বাড়ি থেকে মাকে নিয়ে যান কন্যা। বৃদ্ধের দাবি, সেই থেকে আর মাকে ফিরিয়ে দেননি তিনি। ফোনেও যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তাঁর অভিযোগ, স্ত্রীকে আটকে রাখা হয়েছে। গত ২৪ ডিসেম্বর কসবা থানায় কন্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। হাই কোর্টে তিনি জানান, স্ত্রীর সঙ্গে মানসিক মিল রয়েছে। তাঁদের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই।
মামলাকারীর আইনজীবী অনুপম হাইত জানান, স্বামী এবং স্ত্রী দু’জনেই প্রাপ্তবয়স্ক। সংবিধান অনুযায়ী স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর থাকার অধিকার রয়েছে। সেখানে কন্যা বাধা দিতে পারেন না। যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বৃদ্ধ মামলায় একতরফা ভাবে যে সব দাবি করেছেন তার সব সঠিক নয়। অভিযোগ পাওয়ার পর পদক্ষেপ করা হয়েছিল। অনুসন্ধান করে দেখা গিয়েছে, স্ত্রীর উপর অত্যাচারের অভিযোগ রয়েছে ওই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। আপাতত চিকিৎসক বৃদ্ধের মামলা গ্রহণ করেছে হাই কোর্ট। এখন আইনি যুদ্ধ পিতা ও কন্যার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy