Advertisement
E-Paper

রাজুর খুনিদের গাড়ির মালিক পাটুলির মহিলা? পরিত্যক্ত যানের ছবি দেখেই ‘উদ্বেগে’ পরিবার

রবিবার সকালে শক্তিগড় রেল স্টেশনের রাস্তায় সেই নীল গাড়িটি খুঁজে পেয়েছে পুলিশ, যেখান থেকে গুলি ছুড়েছিলেন আততায়ীরা। নম্বর ৩৪৫৪। দেখা গিয়েছে, গাড়ির মালিকানা কলকাতার এক মহিলার নামে।

image of car

কলকাতার পাটুলির বাসিন্দা এক যুবকের দাবি, গাড়িটি তাঁর মায়ের। গত বছর সেপ্টেম্বরে একটি সংস্থাকে তাঁরা গাড়ি বিক্রি করেছিলেন। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৩ ১৮:১৯
Share
Save

একটি নীল গাড়ি থেকে গুলি করা হয়েছিল কয়লা ব্যবসায়ী রাজু ঝাকে। তার পর সেই নীল গাড়ি রাস্তাতেই ফেলে পালিয়ে গিয়েছিলেন অভিযুক্তেরা। এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। সেই গাড়ির বিষয়েই নতুন তথ্য প্রকাশ্যে এল। কলকাতার পাটুলির বাসিন্দা এক যুবকের দাবি, গাড়িটি তাঁর মায়ের। গত বছর সেপ্টেম্বরে একটি সংস্থাকে তাঁরা গাড়ি বিক্রি করেছিলেন। যদিও নীতির জটিলতার কারণে মালিকানা এখনও বদল হয়নি।

রবিবার সকালে শক্তিগড় রেল স্টেশনের রাস্তায় সেই নীল গাড়িটি খুঁজে পেয়েছে পুলিশ, যেখান থেকে গুলি ছুড়েছিলেন আততায়ীরা। গাড়ির নম্বর ৩৪৫৪। দেখা গিয়েছে, গাড়ির মালিকানা রয়েছে কলকাতার এক মহিলার নামে। ওই মহিলার নাম শাশ্বতী চক্রবর্তী। তাঁর ছেলে সোহম চক্রবর্তী জানিয়েছেন, গাড়িটি তাঁর মায়েরই। ২০১৭ সালে তাঁরা গাড়িটি কিনেছিলেন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর তাঁরা নীল মারুতি গাড়িটি বিক্রি করেছেন। সোহমের কথায়, ‘‘গাড়ি বিক্রির জন্য অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম। অনেক সংস্থা গাড়ি দেখতে এসেছিল। যে সংস্থা সর্বোচ্চ দর দিয়েছিল, তাদেরই দিয়েছিলাম।’’

প্রশ্ন উঠছে, গাড়ি বিক্রির পরেও কেন মালিকানা বদলায়নি। এই প্রসঙ্গে সোহম জটিল প্রক্রিয়ার কথাই তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‘একটি নির্দিষ্ট সংস্থাকে গাড়ি বিক্রি করি। গাড়ি বিক্রির পরেই আমার মায়ের অ্যাকাউন্টে টাকা চলে আসে। শুধু ১০ হাজার টাকা বাকি ছিল। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, যখন নতুন মালিক মিলবে, তখন খাতায়-কলমে মালিকানা পরিবর্তন করা হবে। সেই সময়ই বাকি ১০ হাজার টাকা সরাসরি আমার মাকে দেবে। কসবা আরটিওতে গিয়ে আমার মাকে কিছু প্রক্রিয়া সম্পাদন করতে হবে।’’

যদিও নীল গাড়ির মালিক এখনও শাশ্বতীই। সোহম জানালেন, বাকি প্রক্রিয়া এখনও হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘গাড়ির মালিকের নাম পরিবর্তন হয়নি। গাড়ির মালিক এখনও মা। ঝামেলা হল। এজেন্ট সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কী হবে জানি না। এক জন মহিলা এজেন্টকে গাড়ি হস্তান্তরিত করেছিলাম। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যাচ্ছে না। থানাতেও যোগাযোগ করছি।’’ গাড়ি তিনি বিক্রি করে দেওয়ার পর কোথায় গেল সেটি? সোহম বলেন, ‘‘যখন গাড়ি বিক্রি করেছি, শুনেছিলাম, রাজারহাটের একটি মলের পাশে গাড়ি রাখা থাকে।’’ সেই গাড়ি কোথায় গেল, প্রশ্ন তুলেছেন সোহম। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ভিতরের কেউ এ সবের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। নয়তো গাড়ি কী ভাবে এই অন্যায়ের কাজে ব্যবহার করা হল?’’

গাড়ির বিক্রির এই প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সোহম। তিনি দাবি করেছেন, দ্রুত এই প্রক্রিয়া পাল্টানো দরকার। তিনি আরও জানিয়েছেন, গাড়ি বিক্রির পর যে টাকা তাঁর মায়ের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল, সেই লেনদেনের নথি নিয়ে পাটুলি থানায় যোগাযোগ করছেন।

একটি নীল রঙের গাড়ি থেকে শনিবার রাতে রাজুকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন কয়েক জন দুষ্কৃতী। রাজুদের গাড়ি সে সময় শক্তিগড়ের আমড়া মোড়ের কাছে একটি ল্যাংচার দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিল। গাড়িতে চালকের আসনে ছিলেন রাজু। গুলিতে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর এক সঙ্গীও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

রবিবার সকালে শক্তিগড় রেল স্টেশনের রাস্তায় সেই নীল গাড়িটি খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। তারা মনে করছে, গাড়ির নম্বরপ্লেটটি ভুয়োও হতে পারে। সড়কপথে কলকাতার দিকে না গিয়ে রেলপথকেই বেছে নিয়েছেন আততায়ীরা। পুলিশের অনুমান, প্রথমে তাঁদের সড়কপথেই কলকাতার দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু রাস্তার মোড়ে মোড়ে নাকা চেকিংয়ের সময় ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে তাঁরা পরিকল্পনা বদল করেন। রেলস্টেশনের রাস্তায় গাড়িটি ফেলে রেখে রাজুর আততায়ীরা ট্রেনে উঠে পালিয়ে গিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ওই নীল গাড়ির মধ্যে থেকে বেশ কয়েকটি মদের বোতল উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুষ্কৃতীদের শীঘ্রই ধরে ফেলা যাবে বলে তাদের অনুমান।

Shaktigarh Shootout Coal Business

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy