এমনই আবেদনপত্রে তথ্য সংগ্রহ করছে তৃণমূল। — নিজস্ব চিত্র।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য গোপনীয়। তা কাউকে জানানোর আগে সতর্ক থাকতে বলে সরকারই। অথচ একশো দিনের কাজের বকেয়া মজুরি পেতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের শিবিরে যে আবেদনপত্র দেওয়া হচ্ছে উপভোক্তাকে, সেখানে জানাতে হচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খুঁটিনাটি। তাতেই সংশয়ে অনেকে। তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরাও।
১ মার্চ উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে একশো দিনের বকেয়া মজুরির টাকা ঢোকার কথা। প্রশাসনের তরফে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য যাচাই হয়েছে। সমান্তরাল ভাবে তৃণমূলও তথ্য সংগ্রহে শিবির করছে। সেই শিবির থেকে বিশেষ ফর্ম বা ‘সহায়তা পত্র’ দেওয়া হচ্ছে সম্ভাব্য প্রাপকদের। সেখানে শ্রমিকের নাম, বয়স, ঠিকানা ছাড়াও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর, আইএফএসসি কোড, জব কার্ড নম্বর ও মোবাইল নম্বর লিখতে হচ্ছে।
এ সব তথ্য জানানো নিয়ে অনেকেই সংশয়ে। বাঁকুড়ার বড়জোড়ার পবন মণ্ডল, মানিক বাউরিরা, জ্যোৎস্না বাউরি, কদম বাউরিরা বলছেন, “বাড়ি এসে প্রশাসন তথ্য নিয়ে গিয়েছে। তার পরেও কেন তৃণমূল ব্যাঙ্কের তথ্য চাইছে জানি না। এই সব ব্যক্তিগত তথ্য দিতে ভয় হচ্ছে বলেই এখনও শিবিরে যাইনি।’’ যাঁরা ফর্ম পূরণ করেছেন, সংশয়ে তাঁরাও। বাঁকুড়ার সানতোড় গ্রামের শিবিরে গিয়ে তথ্য জানিয়ে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বললেন, “হাজার ছয়েক টাকা বকেয়া রয়েছে। ইচ্ছে না থাকলেও তথ্য দিতে হল।”
সাইবার অপরাধের তদন্তকারীদের একাংশের মতে, ব্যাঙ্কের তথ্যের গোপনীয়তা প্রতিটি গ্রাহকেরই বজায় রাখা উচিত। বিশেষ করে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত মোবাইল নম্বর গোপন রাখা জরুরি। অনেকেরই তাই প্রশ্ন, যেখানে হামেশাই নানা গুরুত্বপূর্ণ নথি জাল করে প্রতারণা চলে, সেখানে এত লক্ষ উপভোক্তার জরুরি তথ্য নিরাপদে থাকবে তো?
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মানুষের তথ্য ফাঁসের অভিযোগ তুলতেন মমতা। সেই প্রসঙ্গ টেনে বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ভুয়ো অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে রাজ্যে রেশন কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে এসেছে। এখানেও যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য নিয়ে দুর্নীতি হবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? আমরা আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছি।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্রেরও মত, ‘‘এতে মানুষের তথ্যের অধিকার ভঙ্গ হচ্ছে।’’
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য বলছেন, ‘‘রাজ্য সরকারের এত কিছু করার দরকারই হত না, যদি কেন্দ্র টাকা দিয়ে দিত। আর টাকা দিতে হলে শনাক্তকরণের জন্য কিছু নির্দিষ্ট তথ্য লাগবেই। এখানে কিছু করার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy