Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Partha Chatterjee

‘পার্থ নির্দোষ, অভিযোগ কাল্পনিক’! নিয়োগ মামলায় ইডির যাবতীয় যুক্তি ‘নস্যাৎ’ করলেন নতুন আইনজীবী

পার্থের নতুন আইনজীবী এসেছেন দিল্লি থেকে। নাম শামসুদ্দিন শামস। তাঁর যুক্তি শোনার পর আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২৭ জুলাই।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৩ ২০:১২
Share: Save:

শিক্ষক নিয়োগ মামলায় তাঁকেই মূল দোষী বলে চিহ্নিত করেছে তদন্তকারীরা। কিন্তু আদালতে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ‘নির্দোষ’ বলে জানালেন তাঁর নতুন আইনজীবী শামসুদ্দিন শামস। দিল্লির এই আইনজীবী বৃহস্পতিবারই প্রথম পার্থের হয়ে সওয়াল করলেন কলকাতার নগর দায়রা আদালতে। সেখানে তিনি একটি উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন, কেন পার্থকে আর্থিক তছরুপের মামলায় বন্দি করা যায় না। কেনই বা ইডি তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে, তার সব ক’টিরই ভিত নড়বড়ে।

গত ২৩ জুলাই আর্থিক তছরুপের অভিযোগে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তার পর প্রায় এক বছর গড়িয়েছে। বার বার তাঁর সম্মানহানির কথা, অসুস্থতার কথা, এমনকি তাঁর বাড়ি থেকে কিছু পাওয়া যায়নি এই ওজরে জামিন চেয়েছেন পার্থ। কিন্তু সেই আবেদন মঞ্জুর হয়নি আদালতে। প্রত্যেক বারই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডি নানা যুক্তিতে পার্থের আইনজীবীর যুক্তি নস্যাৎ করেছে।বৃহস্পতিবার পার্থের নতুন আইনজীবী শামসুদ্দিন বলেছেন, পার্থের বিরুদ্ধে ইডি যা যা অভিযোগ এনেছে, তার পুরোটাই কাল্পনিক। আদালতে ইডির দাবির প্রেক্ষিতে যা যা যুক্তি দিয়েছেন শামসুদ্দিন, সেগুলি হল—

  • পার্থের বাড়িতে যখন ইডি তল্লাশি করতে যায় প্রথমে তারা কোনও নথি দেখায়নি। ৩২ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চলে। ওই দীর্ঘ সময় ‘দেখাচ্ছি দেখাচ্ছি’ বলে টালবাহানা করে অনেক পরে নথি দেখিয়ে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা।
  • পার্থের বাড়ি থেকে কোনও নগদ অর্থ বা গহনা উদ্ধার হয়নি।
  • যে সাক্ষীদের আনা হয়েছিল, তাঁদের ব্যাঙ্ক থেকে আনা হয়েছিল, তাঁদের স্বতন্ত্র ব্যক্তি বলা যায় না।
  • ইডি দাবি করেছিল, উনি সিজার মেমো স্বাক্ষর করতে চাননি। আইনজীবীর দাবি, তল্লাশির ক্ষেত্রে নিয়মই মানা হয়নি।
  • পার্থের বাড়ি থেকে অ্যাডমিট কার্ড ইত্যাদি পাওয়া গিয়েছে বলে ইডির তল্লাশির নথিতে লেখা আছে। আইনজীবীর বক্তব্য, উনি মন্ত্রী ছিলেন। অনেকেই কাগজ দিয়ে যেত। এটার ভিত্তিতে কী করে বলা যায় যে, উনি আর্থিক দুর্নীতিতে যুক্ত।
  • ইডি কিছু ফোটোকপি ইত্যাদির উপর নির্ভর করছে। তাদের পুরো মামলাটাই বক্তব্য নির্ভর। সে ক্ষেত্রে পিএমএল-এর ৫০ নম্বর ধারা অনুয়ায়ী অভিযুক্তকে স্বেচ্ছায় বয়ান দিতে হবে। কিন্তু এখানে মামলা হয়েছে সহ-অভিযুক্তদের বক্তব্যের ভিত্তিতে। আইনজীবী জানাতে চেয়েছেন, পার্থ বুদ্ধিমান, শিক্ষিত মানুষ। উনি তো নিজের বক্তব্য নিজেই লিখতে পারেন।
  • পার্থ কোনও দোষ করেননি। আইনজীবীর দাবি, কোনও এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে, সে সব পার্থের বলে জানানো হচ্ছে। পুরোটাই কাল্পনিক।
  • এফআইআর-এ পার্থর নাম নেই। যথোপযুক্ত প্রমাণ নেই। যা আছে, তা আইনজীবীরাই নস্যাৎ করতে পারেন।
  • তৃতীয় ব্যক্তি বা সহ-অভিযুক্তদের বক্তব্য, জাল সংস্থার ডিরেক্টর পার্থ নিয়োগ করেছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে সে সব উড়ো অভিযোগ।
  • এক বছরে তদন্তে কোনও অগ্রগতি নেই। পার্থের কাছ থেকে কিছু পাওয়া যায়নি। কোনও প্রমাণও নেই। সবই ইডির অনুমান।

পার্থের আইনজীবী শামসুদ্দিনের এই বক্তব্য শোনার পর আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, এই মামলা পরবর্তী শুনানি হবে আগামী বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২৭ জুলাই। সে দিন কি পার্থের জামিন নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হবে আদালত? তা অবশ্য সময়ই বলবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Partha Chatterjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE