প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে টেট-উত্তীর্ণ প্রশিক্ষিতেরাই অগ্রাধিকার পাবেন। বুধবার সংশ্লিষ্ট মামলার রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাইকোর্ট এ কথা জানিয়ে দিল। টেট (টিচার্স এলিজিবিটি টেস্ট)-এর ফল প্রকাশের উপরে বলবৎ থাকা যাবতীয় স্থগিতাদেশও এ দিন তুলে নিয়েছে হাইকোর্ট। এবং রায় ঘোষণার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ওই পরীক্ষার ফলাফল বেরিয়েও গিয়েছে।
প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে ২০১৫-র ১১ অক্টোবর রাজ্য জুড়ে ‘টেট’ নেওয়া হয়েছিল। তা বাতিলের আবেদন জানিয়ে প্রশিক্ষিত কয়েক জন প্রার্থী এ বছর হাইকোর্টে মামলা করেন। আবেদনকারীদের বক্তব্য— প্রশিক্ষণহীনদের পরীক্ষায় বসার সুযোগ দিতে রাজ্য গত বছরের গোড়ায় কেন্দ্রের কাছে আবেদন করে। গত বছরের ১ এপ্রিল কেন্দ্র তা মঞ্জুর করলেও শর্ত দেয়, চলতি বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে নিয়োগ-প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে হবে। রাজ্য সে শর্ত পূরণ করতে পারেনি।
এই যুক্তিতে ২০১৫-র টেট বাতিল করার জন্য আদালতে প্রশিক্ষিতেরা আর্জি জানান। ওঁদের আরও অভিযোগ— পশ্চিমবঙ্গে যথেষ্ট সংখ্যক প্রশিক্ষিত প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও তাঁদের সংখ্যাটা কেন্দ্রের কাছে গোপন করে প্রশিক্ষণহীনদেরও টেটে বসার সুযোগ দিয়েছে রাজ্য। মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত টেটের ফল প্রকাশ স্থগিত রাখার আবেদনও করেছিলেন তাঁরা।
এ দিন হাইকোর্টের বিচারপতি চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনান মামলার রায় ঘোষণা করে জানিয়ে দেন, প্রাথমিকে টেটের ফল প্রকাশ সংক্রান্ত সব স্থগিতাদেশ তুলে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকার বিধি-নিয়ম মেনে ফল বার করবে। পাশাপাশি হাইকোর্টের নির্দেশ— প্রশিক্ষিত যে সব প্রার্থী টেটে পাশ করবেন, প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার থাকবে তাঁদেরই। ওঁদের নিয়োগ করার পরে যদি পদ খালি থাকে, তা হলে টেট-উত্তীর্ণ তালিকার প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীদের দিয়ে সেগুলো পূরণ করা যাবে। তবে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে দু’বছরের মধ্যে প্রয়োজনীয় তালিম নিয়ে নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে বিচারপতি কারনানই মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত টেটের ফল প্রকাশে স্থগিতাদেশ বসিয়েছিলেন। এ দিন বেলা বারোটা নাগাদ কারনান-এজলাসে রায় ঘোষণার পরে রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল লক্ষ্মী গুপ্তের দাবি: প্রশিক্ষিতদের অগ্রাধিকারদানের নীতিগত সিদ্ধান্ত সরকার আগেই নিয়েছে। আর সে কথা রাজ্যের তরফে কোর্টকে একাধিক বার জানানোও হয়েছে। ‘‘মামলার জন্য রেজাল্টে দেরি হল। না-হলে আগেই শিক্ষক নিয়োগ হয়ে যেত।’’— আক্ষেপ লক্ষ্মীবাবুর। রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষক পর্ষদের কৌঁসুলি সুবীর সান্যালের মন্তব্য, ‘‘রাজ্যে প্রশিক্ষিত প্রার্থীর সংখ্যা পর্যাপ্ত। টেট-উত্তীর্ণ প্রশিক্ষিতদের নিয়োগের পরে শূন্য পদ থাকলে বাকিদের নেওয়া হবে।’’
মামলাকারীদের কী প্রতিক্রিয়া? ওঁদের কৌঁসুলি সৌমেন দত্তের বক্তব্য, রায়ের প্রতিলিপি এখনও হাতে পাননি। ‘‘তবে টেট-উত্তীর্ণ প্রশিক্ষিতেরা বঞ্চিত হলে কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা হবে।’’— বলেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy