মদন মিত্রের সঙ্গে হৈমন্তীর সেই ছবি। ছবি: সমাজমাধ্যম থেকে পাওয়া।
রবীন্দ্রনাথের মতো তাঁর ছবিও লোকে বাড়িতে বাঁধিয়ে রাখে। আর তাতে তাঁর কোনও অসুবিধা নেই। বক্তা তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তাঁর সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে পড়া ‘রহস্যময়ী’ হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের ভাইরাল নিজস্বী প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করলেন মদন। গোপাল দলপতির স্ত্রী হৈমন্তী নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত বলে দাবি করেছেন ইডির হাতে ধৃত হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। আর তার পর থেকেই হৈমন্তীকে নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। দানা বেঁধেছে রহস্যও। এই আবহে মদনের সঙ্গে সেই হৈমন্তীর ছবি প্রকাশ্যে। তবে তৃণমূল নেতার দাবি, তিনি হৈমন্তী বলে কাউকে চেনেন না। কুন্তল বা গোপালের সঙ্গেও পরিচয় নেই। তাঁর সঙ্গে রোজ বহু নারী ছবি তোলেন, নিজস্বী তোলার আবদার করেন। তিনি সেই আবদার রাখেন এবং অনেকে আবার সেই ছবি বাড়িতে বাঁধিয়ে রাখেন। যেমন বাঁধিয়ে রাখা হয় রবীন্দ্রনাথের ছবি।
মদনের কথায়, ‘‘অনেকে আমার সঙ্গে ছবি তুলে বাঁধিয়ে রেখে দেয়। লোকে যেমন রবীন্দ্রনাথের ছবি বাঁধিয়ে রাখে, তেমনই আমার ছবিও বাঁধিয়ে রাখলে অসুবিধা কোথায়?’’
তাঁর সঙ্গে যাঁর ছবি প্রকাশ্যে, তাঁর নাম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লেও তিনি যে কোনও রকম দুর্নীতিতে জড়িত নন, তা-ও স্পষ্ট করেছেন কামারহাটির বিধায়ক।
কিন্তু এই ছবি যে তাঁরই, তা অস্বীকার করেননি মদন। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতার মন্তব্য, ‘‘ছবিটা যে আমার, তা তো পরিষ্কার ভাবেই দেখা যাচ্ছে। আমি কলেজ জীবন থেকেই দেখেছি আমার ছবি বেরোলে এমনিই ভাইরাল হয়। যেমন উত্তমকুমারের ছবি স্টুডিয়োয় ঝোলানো থাকে। তেমনই আমার সঙ্গে ছবি তুললেই তা ভাইরাল হয়। মেয়েদের একটু ফর্সা দেখতে হলেই আমার সকলকে একই রকম লাগে। আলাদা করে বুঝতে পারি না। তার পর ভুলে যাই কোথায় দেখেছি, কবে দেখেছি।’’
মদনের সঙ্গে হৈমন্তী কবে এবং কোথায় এই নিজস্বী তুলেছিলেন, তা-ও তাঁর মনে নেই বলেই জানান মদন। আর সেই কথা বলতে গিয়ে আবার উঠে আসে রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ। মদনের কথায়, ‘‘রবীন্দ্রনাথও বলতে পারেননি। তিনি বলেছিলেন, ‘তুমি কি কেবলই ছবি, শুধু পটে লিখা। ওই-যে সুদূর নীহারিকা যারা করে আছে ভিড় আকাশের নীড়’। এই ছবি এখন নৈনিতাল, দিঘা না ইকো পার্কে তোলা সেটা কী করে বলব?’’
মদনের দাবি, হৈমন্তীর সঙ্গে যে ভাবে ছবিটা তোলা হয়েছে, সে ভাবে তোলা না হলে নাকি তা ‘রোমান্টিক’ হয় না। আর সেই কারণেই মেয়েরা তাঁর সঙ্গে এই ভাবে ছবি তোলে। তিনি বলেন, ‘‘আমার যে ইনস্টাগ্রাম ৭৮ শতাংশ মহিলা ফলোয়ার। তার মধ্যে ৬৯ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ২৫। এরাই আমাকে ভোট দিয়ে জেতায়। এরাই সব সময় আমাকে খোঁজে। আমার সঙ্গে ছবি তুলতে চায়।’’
মদন স্পষ্ট করেছেন, তিনি শুধু হৈমন্তী বিশ্বাস ছাড়া ওই নামে কাউকে চেনেন না।
রাজনৈতিক সূত্রে সব জেলারই তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে পরিচিতি রয়েছে মদনের। কিন্তু তিনি ‘নিচু লেভেলের’ নেতাদের খুব একটা চেনেন না বলেই দাবি করেছেন কামারহাটির বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘হৈমন্তী নয়, এই কুন্তল আর দলপতিকেও চিনি না। আমি হুগলি জেলার তপন দাশগুপ্ত, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিনি। খুব একটা নিচু লেভেলের নেতাদের চিনি না। এঁদের যাঁরা চেনেন, তাঁরাই বলতে পারবেন।’’
পাশাপাশি মদন জানান, তিনি যখন সারদাকাণ্ডে জেলে গিয়েছিলেন, তখন সারা দেশ জানতে পেরেছিল। কিন্তু এরা কারা কেউ জানে না। তবে সত্যিই যদি দুর্নীতিতে যুক্ত থাকা কুন্তল, বা গোপাল তৃণমূলের সদস্য হন, তা হলে তাঁর দল অবস্থান স্পষ্ট করবে বলেও দাবি মদনের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy