গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
রাস্তায় তার কাছে কোনও একটি ঠিকানা জানতে চেয়েছিলেন কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। সে সময় মাদকজাতীয় দ্রব্যের গন্ধ শুঁকিয়ে তাকে অজ্ঞান করে দেন তাঁরা। এর পর চোখ মেলতেই দেখে, হাওড়ায় রয়েছে সে। সুযোগ বুঝে সেখান থেকে পালিয়ে পুলিশের সাহায্যে বাড়ি ফিরল বীরভূমের বোলপুরের এক কিশোরী। ওই ব্যক্তিরাই তাকে বোলপুর থেকে অপহরণ করে হাওড়া নিয়ে গিয়েছিল বলে দাবি কিশোরীর। এই ঘটনায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছে কিশোরীর পরিবার।
একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী বীরভূমের বোলপুরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কালীমোহনপল্লি এলাকার বাসিন্দা। তার দাবি, সোমবার নতুনপুকুরে বান্ধবীর বাড়ি গিয়েছিল সে। সেখান থেকেই নিজের বাড়ি ফিরছিল। পথে একটি গলিতে কয়েক জন অচেনা ব্যক্তি তার কাছে এসে একটি ঠিকানা দেখান। সেই ঠিকানাটি কোথাকার তা জানতে চান। সে সময়ই মাদকজাতীয় কোনও কিছুর গন্ধ শুঁকিয়ে অচৈতন্য করে তাকে অপহরণ করে বলে অভিযোগ।
কিশোরীর আরও দাবি, ওই ঘটনার পর আর কিছুই মনে নেই তার। জ্ঞান ফেরার পর সে দেখে, হাওড়া ব্রিজ লাগোয়া কোনও এক জায়গায় রয়েছে। এমনকি, সেখান থেকে হাওড়া ব্রিজটিও দেখা যাচ্ছে। অপরাধীদের পাল্লায় পড়েছে বুঝতে পেরে সেখান থেকে পালানোর সুযোগ খুঁজতে থাকে সে। এক সময় সুযোগ বুঝে ওই জায়গা থেকে পালাতে সফল হয়। এর পর রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের এক আধিকারিককে গোটা বিষয়টি জানিয়ে তাকে বাড়ি ফেরানোর বন্দোবস্ত করার অনুরোধ করে। ওই পুলিশকর্মীই তাকে গোলাবাড়ি থানায় নিয়ে যান।
ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মেয়ে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেছিলেন তাঁরা। সে সময় হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা থেকে একটি ফোন আসে তাঁদের কাছে। এর পর সোমবার রাতেই বোলপুর থেকে হাওড়ায় গিয়ে কিশোরীকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন তার মা-বাবা-সহ পরিবারের লোকজন।
ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘‘কী ভাবে মেয়ে হাওড়া পৌঁছল, কিছুতেই বুঝতেই পারছি না আমরা। এর পেছনে কোনও অপহরণকারী দল রয়েছে বলেই আমাদের সন্দেহ। মেয়েকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়েছে। তবে সে এখনও ঘোরের মধ্যে রয়েছে।’’ ছাত্রীটি সুস্থ হলে পুলিশের দ্বারস্থ হবে বলে জানিয়েছে তার পরিবার। বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘অপহরণের অভিযোগ জানানো হলে আমরা নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখব।’’
এই ঘটনাটি উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন স্থানীয় কাউন্সিলার তাপসী বাউড়ি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি শুনেছি। তবে বোলপুরের মতো জায়গায় এ ঘটনা বিশ্বাস করা যায় না। ঘটনাটি খুবই উদ্বেগজনক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy