Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Teacher

শিশুশ্রমিক স্কুলের শিক্ষকেরাই আজ শ্রমিক

উত্তর দিনাজপুরে ৪৫টি শিশুশ্রমিক স্কুলে চুক্তিভিত্তিক এমন শিক্ষক, শিক্ষকা ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে সংখ্যাটা প্রায় দেড়শো। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে তাঁদের ভাতা দেওয়া হত।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মেহেদি হেদায়েতুল্লা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২২ ০৬:২০
Share: Save:

কাজ ছেড়ে আসা শিশুশ্রমিকদের স্কুলে পড়ানোই ছিল তাঁদের পেশা। কিন্তু সে বাবদ প্রাপ্য কেন্দ্রীয় অনুদান বন্ধ হওয়ায় পেশা বদলাতে হয়েছে শিশুশ্রমিক-স্কুলের বহু শিক্ষককে। তাঁরা নিজেরাই অনেকে এখন শ্রমিক। চারিদিকে যখন উৎসবের আলো জ্বলছে, তখন শিক্ষক থেকে শ্রমিকের পেশায় পর্যবসিত সেই মানুষগুলোর ঘরে অন্ধকার। কেউ টোটো চালাচ্ছেন, কেউ বা আনাজের দোকান খুলেছেন। বিড়িও বাঁধছেন কেউ।

অভাবের জেরে অনেক পরিবারই ছোট ছেলেমেয়েকে কাজে পাঠাতে হয়। পেটের ভাত জোগাড় করতে দোকান-বাজার, ইটভাটায় শিশুশ্রমিক হিসেবে কাজ করতে দেখা যায় নাবালক ছেলেমেয়েদের। এই সব শিশুদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রেরজাতীয় শিশুশ্রমিক প্রকল্পে একাধিক শিশুশ্রমিক স্কুল তৈরি হয়। প্রতিটি রাজ্যে জেলাভিত্তিক এই স্কুলে ৬-১৪ বছর বয়সী শিশুশ্রমিকদের বিনামূল্যে শিক্ষা ও মিড-ডে মিলের খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

উত্তর দিনাজপুরে ৪৫টি শিশুশ্রমিক স্কুলে চুক্তিভিত্তিক এমন শিক্ষক, শিক্ষকা ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে সংখ্যাটা প্রায় দেড়শো। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে তাঁদের ভাতা দেওয়া হত। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের অক্টোবর মাস থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সেই ভাতা বন্ধ হওয়ার পরে আর তা চালু হয়নি। বন্ধ মিড-ডে মিল। করণদিঘি ব্লকে রয়েছে এমন ৩০টি স্কুল। তারই একটি স্কুলের শিক্ষক হেমন্ত সিংহ এখন দিনমুজরি করছেন। শিক্ষিকা ঊর্মিলা সিংহ বিড়ি বাঁধার কাজে নিযুক্ত। আর এক শিক্ষক আনাজের দোকান দিয়েছেন।

ঊর্মিলা বলেন, ‘‘ভাতা বন্ধ থাকায় সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে বিড়ি বাঁধাই শুরু করেছি।’’ তাঁর খেদ, ‘‘শিশু শ্রমিকদের এক সময়ে বিড়ি বাঁধার কাজ থেকে ছাড়িয়ে স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলাম। এখন নিজেই বিড়ি বাঁধছি। না হলে সংসার চালাব কী করে?’’ দুর্গোৎসব তাই ধরাছোঁয়ার বাইরেই আজ তাঁদের। ছেলে মেয়েদের জন্য নতুন জামা কিনবেন নাকি পেটের ভাত জোগাড় করবেন, এই প্রশ্নের উত্তর মেলে না।

জেলার অন্য শিশু-শ্রমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও একই হাল। ব্লক থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে একাধিক বার দরবার করা হলেও আজ পর্যন্ত ভাতা মেলেনি বলে অভিযোগ তাঁদের। ইসলামপুর সহকারী শ্রম দফতরের আধিকারিক ডালটন বিশ্বাস বলেন, ‘‘শিশু শ্রমিক স্কুলের অনুমোদন ও শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের ভাতার অর্থ দেয় কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক। এ ক্ষেত্রে আমাদের কার্যত কিছু করার নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Teacher Labor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy