Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Teachers

Education: মাধ্যমিক স্তরে বিভাজন নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা

স্কুল স্তরের পঠনপাঠন আরও সুচারু ভাবে চালানোর জন্য শিক্ষা প্রশাসন মাধ্যমিক স্তরে এই ভাগাভাগি করছে কি না, সেই প্রশ্ন তো উঠছেই।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:২৪
Share: Save:

তাঁদের সকলেরই নিয়োগ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে। কিন্তু নতুন ব্যবস্থায় ‘নর্মাল সেকশন’ বা মাধ্যমিক স্তরে তাঁদের দু’ভাগে ভাগ করার নির্দেশিকাকে ঘিরে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। প্রথমটি হল, ‘আপার প্রাইমারি সেকশন’ বা উচ্চ প্রাথমিক। তার মধ্যে পড়ছে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি। দ্বিতীয়টি হল, ‘সেকেন্ডারি সেকশন’ বা মাধ্যমিক বিভাগ। নবম ও দশম শ্রেণি এই বিভাগের অন্তর্গত। সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দুই-তৃতীয়াংশ পড়াবেন উচ্চ প্রাথমিকে। মাধ্যমিকের দু’টি শ্রেণিতে পড়াবেন বাকি এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষক।

স্কুল স্তরের পঠনপাঠন আরও সুচারু ভাবে চালানোর জন্য শিক্ষা প্রশাসন মাধ্যমিক স্তরে এই ভাগাভাগি করছে কি না, সেই প্রশ্ন তো উঠছেই। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আপত্তি, আশঙ্কা এবং অভিযোগ। তাঁরা এটাকে দেখছেন ‘অবাঞ্ছিত বিভাজন’ হিসেবে। তাঁদের বক্তব্য: প্রথমত, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপত্র পাওয়ার পরে তাঁদের একাংশকে এ ভাবে উচ্চ প্রাথমিকের তকমা দেওয়ায় মর্যাদাগত অবনমনের আঘাত দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, অদূর ভবিষ্যতে উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষকদের বেতনে কোপ পড়ার আশঙ্কা প্রবল হচ্ছে। তৃতীয়ত, বদলির ক্ষেত্রে নতুন জটিলতার আশঙ্কা বাড়ছে।

মাধ্যমিক স্তরের স্কুলশিক্ষকদের কে কোন স্তরে পড়াবেন, জেলার শিক্ষা আধিকারিকেরা সম্প্রতি ভিডিয়ো সম্মেলনের মাধ্যমে সেই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মৌখিক নির্দেশিকা দিয়েছেন। কত শিক্ষক উচ্চ প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত পড়াবেন আর কত শিক্ষক পড়াবেন নবম ও দশম শ্রেণিতে, সেই ব্যাপারে একটি ভাগাভাগির ব্যবস্থা হয়েছে। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ২:১ অনুপাতে ভাগ করতে হবে। অর্থাৎ কোনও স্কুলে মাধ্যমিক স্তরে যদি ৩০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা থাকেন, তা হলে ২০ জনকে উচ্চ প্রাথমিকে এবং ১০ জনকে নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়াতে হবে। শিক্ষকেরা জানান, জেলার শিক্ষা আধিকারিকেরা এই নিয়ে ইতিমধ্যে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে নির্দেশিকাও পাঠিয়ে দিয়েছেন।

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বড় অংশের অভিযোগ, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে এই বিভাজন ঘটিয়ে অহেতুক জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদারের অভিযোগ, কিসের ভিত্তিতে স্কুল-প্রধানেরা এই ২:১ অনুপাতে তাঁদের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দু’ভাগ করবেন, তার কোনও গাইডলাইন বা নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি। অনিমেষবাবু বলেন, “উচ্চ প্রাথমিক এবং নবম-দশম শ্রেণি, এই দুই ভাগে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকেরা ভাগ হয়ে গেলে ভবিষ্যতে তাঁদের বেতনের ক্ষেত্রেও বৈষম্য তৈরি হতে পারে। এমনকি বদলির ক্ষেত্রেও অসুবিধার সৃষ্টি হবে। তখন হয়তো উচ্চ প্রাথমিকের কোনও শিক্ষককে আপস-বদলির জন্য উচ্চ প্রাথমিক স্তরের ‘ম্যাচিং’ শিক্ষক খুঁজতে হবে। যা এখন করতে হয় না।” অনিমেষবাবু জানান, এই বিভাজন যাতে না-হয়, সেই দাবি জানিয়ে তাঁরা ইতিমধ্যেই জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছেন।

শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর অভিযোগ, কোনও লিখিত নির্দেশিকা ছাড়াই এ ভাবে বিভাজনের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে স্কুলে বিভিন্ন দিক থেকে উচ্চ প্রাথমিক এবং নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে বিভাজনী দূরত্বের সৃষ্টি হবে। কিঙ্করবাবু বলেন, “আমরা এই বিভাজনের তীব্র বিরোধিতা করছি। প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে অনুরোধ, এই বিভাজন-নীতির বিরোধিতা করুন এবং এই ধরনের নির্দেশ পালন থেকে বিরত থাকুন।”

তবে বিকাশ ভবনের কর্তাদের একাংশের দাবি, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রে এই বিভাজন বলবৎ হলেও তাঁদের বেতন কমবে না। এই নিয়ে এখনই তাঁদের শঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Teachers Education Recruitment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy