—ফাইল চিত্র।
উল্টোডাঙা থেকে কেষ্টপুর যেতে গাড়িতে সময় লাগে বড়জোর মিনিট ২০-২৫। দূরত্ব মেরেকেটে সাড়ে ছয় কিলোমিটার। অথচ এটুকু দূরত্বেই দু’টি বাজারের আনাজের দামে আকাশপাতাল তফাত। উল্টোডাঙার পাইকারি বাজারে যে পটল বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা কিলো দরে, কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লির বাজারে সেই পটলই ৫০ টাকা কিলো দরে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের! অভিযোগ পেয়ে বাজারে হাজির হয়েছিল সরকারের টাস্ক ফোর্স। তাদের বক্তব্য, অভিযানের পরে বহু বাজারেই সব্জির দাম কমেছে। কিন্তু কিছু কিছু বাজারে এমন সমস্যা এখনও রয়েছে।
অগ্নিমূল্য বাজারে আনাজপাতির দাম নিয়ন্ত্রণ করতে টাস্ক ফোর্স গঠন করতে বলেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশই রাজ্যের সমস্ত বাজারে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে টাস্ক ফোর্স। কিন্তু তাতে বাজারদরে কোনও সুরাহা হচ্ছে কি? বিভিন্ন জেলার ক্রেতারা বলছেন, কিছু কিছু বাজারে হয়তো সামান্য কমেছে দাম। কিন্তু তা ওই পরিদর্শন অভিযানের সময়ে বা সেই দিনটিতেই। তার পরেই আবার ফিরে আগুন ঝরাচ্ছে আলু-পটল-কুমড়ো-বেগুন-টম্যাটো-লঙ্কার মতো নিত্যব্যবহার্য সব্জি।
মঙ্গলবার যেমন উত্তর ২৪ পরগনার হৃদয়পুর বাজারে অভিযান চালিয়েছিলেন জেলা আধিকারিকেরা। ক্রেতাদের অভিযোগ, অভিযান শুরু হয়েছে জানা মাত্রই বিক্রেতারা দাম কমিয়ে বলতে শুরু করেন। এক ঘণ্টা আগেও যে আলু ৩৫ টাকা কিলো দরে বিক্রি হয়েছে, তার দাম কমিয়ে ৩০-৩২ টাকা কিলো বলা শুরু হয়। ক্রেতারা উদ্যোগী হয়ে বিষয়টি আধিকারিকদের জানাতে তাঁরা বিক্রেতাদের পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেন ঠিকই। কিন্তু ক্রেতারা নিশ্চিত নন, পর দিন সকালে যখন টাস্ক ফোর্স থাকবে না, তখন বাজারে গিয়ে তাঁরা কী শুনবেন!
পশ্চিম বর্ধমানের ক্রেতারা যেমন অভিযোগ করেছেন, অভিযানের পরদিনই বাজারদর আবার আকাশ ছুঁয়েছে। সোমবার আসানসোল সদরের মহকুমা শাসক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়েছিল আসানসোলের বিভিন্ন খুচরো ও পাইকারি বাজারে। কিন্তু তার পর দিনই আবার আগের অবস্থায় ফিরেছে কিছু কিছু বাজারের শাকসব্জির দাম। দুর্গাপুর শহরেও একই পরিস্থিতি। যদিও টাস্ক ফোর্সের তরফে জানানো হয়েছে, এ ব্যাপারে এ বার বাজার কমিটিগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে ‘অসাধু’ ব্যবসায়ীদের আটকাতে হবে তাদেরই। তার পরেও যদি একই পরিস্থিতি থাকে, তবে ধরা পড়লে নেওয়া হবে কঠোর পদক্ষেপ।
মঙ্গলবার টাস্ক ফোর্স অভিযান চালিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, কোচবিহারেও। এর মধ্যে কিছু জেলায় ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, বাজারে নিয়মিত নজরদারি চোখে পড়ছে না তাঁদের। সব্জির দামও বিশেষ কমেনি। বাকি জেলাগুলির ক্রেতারা জানাচ্ছেন, টাস্ক ফোর্সের নজর বাঁচিয়ে ব্যবসায়ীরা সেই বেশি দামেই বিক্রি করছেন সব্জি। কোচবিহার, পূর্ব বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনায় যেমন লঙ্কার দাম কিলো প্রতি ১৫০-১৮০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। আদা-রসুন ২০০ টাকা কিলো। পেঁয়াজ ৪৫ টাকা, টম্যাটো ৮০-১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হচ্ছে। রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতেও হরেদরে পরিস্থিতি একই।
ক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারের সঙ্গে খুচরো বাজারে দামের কতটা ফারাক, তার খোঁজখবর করছেন টাস্ক ফোর্সের আধিকারিকেরা। সতর্কও করছেন ব্যবসায়ীদের। কিন্তু সরকারি আধিকারিকেরা বাজার পরিদর্শন করলেও দাম নিয়ন্ত্রণ হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। কারণ, সাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত তেমন ইঙ্গিত দিচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy