তাপসের দাবির পর এ বার ডিএলএড-এর অফলাইন ভর্তিপ্রক্রিয়া ইডি-র আতশকাচের নীচে। নিজস্ব চিত্র।
ডিএলএড কোর্সে ভর্তির জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে অফলাইনে ভর্তির ১৬ গুণ বেশি টাকা নেওয়া হয়েছিল, ইডি-র কাছে এমনটাই দাবি করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ তাপস মণ্ডল। বুধবার সিজিও কমপ্লেক্সে তাপসকে প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সূত্রের খবর, সেখানেই তিনি দাবি করেছেন, ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মোট ৪১ হাজার পড়ুয়ার কাছ থেকে অফলাইনে ভর্তির জন্য বাড়তি টাকা নেওয়া হয়েছে। সেই টাকা গিয়েছে মানিকের কাছেই।
তাপসের দাবির পর এ বার ডিএলএড-এর অফলাইন ভর্তিপ্রক্রিয়া ইডি-র আতশকাচের নীচে। অভিযোগ, টেটের জন্য ডিএলএড প্রশিক্ষণ নিতে ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্ধারিত ছিল ৩০০ টাকা। কিন্তু অফলাইনে যাঁরা ভর্তি হন, তাঁদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ৪ হাজার ৭০০ টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে, যা ভর্তি মূল্যের প্রায় ১৬ গুণ বেশি। এ ভাবে ৪১ হাজারের বেশি সংখ্যক পড়ুয়ার কাছ থেকে মোট ২০ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছিল।
তাপস জানান, তাঁর মহিষবাথানের অফিসে এই টাকার লেনদেন হয়েছে। অফলাইনে ভর্তির বিলম্বের জন্য লেট ফি বাবদ ওই টাকা নেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের থেকে। টাকার লেনদেন সবটাই হয়েছে নগদে। পড়ুয়াদের থেকে নেওয়া এই টাকা পর্ষদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন ‘মানিক-ঘনিষ্ঠ’ তাপস। তিনি জানিয়েছেন, নগদ টাকা সব সরাসরি গিয়েছে মানিকের কাছেই।
বুধবারের পর বৃহস্পতিবার ফের ইডি দফতরে হাজিরা দিতে যান তাপস। সেখান থেকে তিনি বলেন, ‘‘পর্ষদের সভাপতি ছিলেন উনি। স্বাভাবিক ভাবে উনিই সব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অনিয়ম হয়েছে কি না, বোর্ড বলতে পারবে।’’
তাপসের দাবি, ২০১৮ সালে ডিএলএড কলেজে অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর দেখা গিয়েছিল, অনেক আসন ফাঁকা পড়ে আছে। কী ভাবে সেই আসনগুলি ভর্তি করা যায়, সে বিষয়ে তৎকালীন পর্ষদ সভাপতি মানিকের কাছে তিনি দরবার করেন বলে জানিয়েছেন। তখনই মানিকের সঙ্গে কথা বলে পড়ুয়াদের থেকে ‘লেট ফি’ বাবদ নগদ ৫ হাজার টাকা নিয়ে অফলাইন রেজিস্ট্রেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দাবি তাপসের।
ইডি সূত্রে খবর ছিল, ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত তিনটি শিক্ষাবর্ষে টেটের জন্য ডিএলএড প্রশিক্ষণ নিতে ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের থেকে নিয়মিত ভাবে টাকা নেওয়া হয়েছে। মূলত ডিএলএড প্রশিক্ষণের যে ৬০০টি কলেজ রয়েছে, সেখানে অফলাইনে ভর্তির জন্যই নেওয়া হত ওই অর্থ। ইডি জানিয়েছিল, প্রশিক্ষণ নিতে ইচ্ছুক যে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্ধারিত তারিখে রেজিস্ট্রেশন করাতে পারতেন না, তাঁদের নামই অফলাইনে নথিভুক্ত করার ব্যবস্থা করে দিতেন মানিক। বিনিময়ে মাথাপিছু নেওয়া হত ৫ হাজার টাকা। এ ভাবে আনুমানিক ২০ কোটি টাকা তোলা হয়েছে বলে মনে করছে ইডি। সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়ে সেই টাকার হিসাব দিয়েছেন তাপস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy