প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। এমনটাই অভিযোগ করলেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। শনিবার তিনি জানিয়েছেন, হলদিয়ায় অবৈধ পথে কয়লা চুরির ঘটনার প্রতিবাদ জানাতেই তাঁকে এমন হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ঘটনায় প্রকাশ, ২৪ জানুয়ারি রাতে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে অবৈধ ভাবে কয়লা চুরির ঘটনা নজরে আসে কর্মরত সিআইএসএফ জওয়ানদের। কয়লা চোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে শুরু হয় পাল্টা প্রতিরোধ। কয়লা চোরদের ছোড়া পাথরে আহত হন সিআইএসএফ জওয়ানরা। তবে কয়লা চোরদের দু’টি বাইক আটক করে সিআইএসএফ। আটক করার পর তা তুলে দেওয়া হয় হলদিয়া থানার হাতে। সাংসদ হিসাবে সেই ঘটনার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে জানান দিব্যেন্দু। তারপর থেকেই তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘আমি হলদিয়ার ঘটনাটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছিলাম। সঙ্গে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। সেই সময় এই ঘটনা এবং আমার পদক্ষেপের কথা আমি প্রেসকে জানাই। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি মনে করি, রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সমন্বয়ের প্রয়োজন আছে, সমন্বয় থাকলেই এই ধরনের চুরি-ডাকাতির ঘটনা রোখা সম্ভব। সাংসদ হিসাবে নিজের দায়িত্ব পালন করেছি। আর সে কথা বলার পরেই আমাকে অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, প্রাণে মেরে ফেলা হবে। বলা হচ্ছে আমার গতিবিধির ওপর নজর রাখা হচ্ছে।’’ এমন হুমকি পেলেও যে তিনি ভীত নন, তাও জানিয়েছেন তমলুকের সাংসদ। তাঁর কথায়, ‘‘যত দিন সাংসদ থাকব তত দিন হলদিয়া গিয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করব।’’
আরও পড়ুন:
এমন হুমকি পেলেও, পুলিশে অভিযোগ জানাতে নারাজ তমলুকের সাংসদ। তাঁর কথায়, ‘‘আগেও অনেক বিষয় নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। কোনও ক্ষেত্রেই সুরাহা মেলেনি। তাই এ বার আর পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাব না।’’ তাঁর অভিযোগ পাওয়ার পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে বলেও দাবি দিব্যেন্দুর। এই বিষয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘আগে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে, বুকে হাত রেখে বলতে বলুন তিনি এখন কোন দলে আছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিকে ব্যবহার করে জিতে সাংসদ হয়ে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন তিনি। আগে বলুন কেন তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন না? যে কোনও প্রতীকে দাঁড়িয়ে কেন তিনি নিজেকে প্রমাণ করছেন না? তার পর তাঁর মুখের কোনও কথা আমরা শুনব।’’
তৃণমূলের প্রতীকে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে দ্বিতীয় বার জয়ী হয়েছেন দিব্যেন্দু। তাঁর পিতা শিশির অধিকারীও কাঁথি থেকে তৃণমূলের প্রতীকে তিন বারের সাংসদ। কিন্তু দিব্যেন্দুর দাদা শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগদান করেন। নন্দীগ্রাম থেকে জিতে তিনিই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। স্বাভাবিক কারণেই তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে অধিকারী পরিবারের। তাই দিব্যেন্দুর মতামতকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল।