অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভ্রাংশু রায় ফাইল চিত্র।
বুধবারই মুকুল রায়ের অসুস্থ স্ত্রী কৃষ্ণাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুল সেই সময় হাসপাতালে না থাকলেও ছিলেন তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু। শুভ্রাংশুর সঙ্গে কথা বলে কৃষ্ণাদেবীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নেন অভিষেক। এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে শুভ্রাংশু বলেছেন, ‘‘অভিষেকের বাড়ির লোকের সঙ্গে সম্পর্ক আজকের নয়। দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। এবং অভিষেককে আমার মা যেমন স্নেহের চোখে দেখেন, অভিষেকও আমার মাকে যথেষ্ট সম্মান দেন। যখনই দেখা হয়েছে, আমার মায়ের খোঁজ নিয়েছেন। আগেও মা যখন অসুস্থ ছিলেন, তখন খোঁজ নিতেন, কাকিমা কেমন আছেন? কালকেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। যখনই শুনেছে মায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক, চলে এসেছেন। সৌজন্য বলব না এটাকে। নিজের কাকিমা মনে করে দেখতে চলে এসেছেন।’’ শুভ্রাংশু আরও বলেন, ‘‘এই সৌজন্য দেশের রাজনীতিতে একটা অন্য মানচিত্রে নিয়ে চলে যাবে। এ রকম দেখা যায় না। তবে উনি যেটা করেছেন, সেটা রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে করেছেন। এই নিদর্শন যদি আগামী দিনে ভারতবর্ষের রাজনীতিতে আসে, তাহলে সত্যিই ভাল হবে।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও খোঁজ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শুভ্রাংশু। তিনি বলেন, ‘‘শুধু অভিষেক নয়, অনেকের মাধ্যমে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীও বাবার খোঁজ নিয়েছেন এবং আমাদের পরিবারের খোঁজ নিয়েছেন এবং মায়ের খোঁজ নিয়েছেন। তাঁর কাছেও আমি কৃতজ্ঞ। এই অতিমারি পরিস্থিতিতে এত কাজের মধ্যেও এই ভাবে একজন মানুষের খোঁজ নেওয়ার নিদর্শন পাওয়া যায় না।’’ একই সুর শোনা গিয়েছে অভিষেকের গলাতেও। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের ইয়াস বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘এটাকে রাজনৈতিক ভাবে দেখা উচিত নয়। রাজনৈতিক মত পার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু মুকুল রায়ের পরিবারকে আমি ছোটবেলা থেকে চিনি। উনি আমার মাতৃসমা।’’
প্রসঙ্গত, গত প্রায় ৩ সপ্তাহ ধরে করোনা আক্রান্ত হয়ে কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুকুল-জায়া। এখন করোনা মুক্ত হলেও অন্যান্য শারীরিক কারণে তিনি ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যায় অভিষেক যাওয়ার পরে বিজেপি-র পক্ষে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ হাসপাতালে যান। বৃহস্পতিবার সকালে মুকুলকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই প্রসঙ্গে শুভ্রাংশু বলেন, ‘‘বাবা বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি। বিজেপি-র অন্যান্যরা খোঁজ নেবেন এটা তো স্বাভাবিক। কিন্তু অন্য দলের নেতা হিসেবে অভিষেক যেটা করেছেন, তার সঙ্গে কোনও তুলনা হয় না।’’ অমিত শাহ, জেপি নড্ডারাও তাঁর মায়ের খোঁজ নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন শুভ্রাংশু। তবে তার সঙ্গে মমতা বা অভিষেককে মেলাতে চাইছেন না তিনি। শুভ্রাংশু বলেন, ‘‘কে আগে কে পরে খোঁজ নিয়েছেন, এই বিতর্কে যাব না। তবে যেটা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্যমন্ত্রী করেছেন তার তুলনা হয় না।’’
কিছুদিন আগেই শুভ্রাংশুর একটি ফেসবুক পোস্টা নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়। সরকারের নিন্দা না করে বিজেপি-র আত্মসমালোচনা করা উচিত বলে মন্তব্য করার পরে তাঁর তৃণমূলে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে নানা কথা উঠতে শুরু করে রাজ্য রাজনীতিতে। বুধবার অভিষেক হাসপাতালে যাওয়ার পরে সেই জল্পনা নতুন করে বাড়ে। তবে কি তিনি এ বার তৃণমূলে ফিরতে পারেন? এই প্রসঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে বীজপুরের বিজেপি প্রার্থী শুভ্রাংশু বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এখন মায়ের সুস্থ হওয়াটা সবার আগে। মাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার পরে বাকি সব কিছু ভাবা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy