স্যালাইন-কাণ্ডে শুভেন্দু অধিকারীদের প্রতিবাদ। কলকাতায়। —নিজস্ব চিত্র।
স্যালাইন-কাণ্ড ও প্রসূতি মৃত্যুর প্রতিবাদে ফের পথে নামলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ওই ঘটনায় চিকিৎসকদের ‘বলির পাঁঠা’ না-করে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে দোষী শনাক্ত করার দাবি জানিয়ে এলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছেও। এ বারও অবশ্য মূল দলের ‘সংস্রব’ ছাড়াই নিলেন পৃথক কর্মসূচি।
আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদী আন্দোলনে দাগ কাটতে পারেনি বিজেপি। এখন স্যালাইন-কাণ্ডে শুভেন্দুরা যখন সক্রিয়তা দেখানোর চেষ্টা করছেন, সেই সময়েই ফের তাঁদের ‘বিড়ম্বনা’ বাড়াচ্ছে আর জি কর মামলা। সূত্রের খবর, মামলার রায় ঘোষণার পরে নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করে পরিবারের সেই পরিস্থিতির আঁচ পেয়ে এসেছেন বিরোধী দলনেতা। সিবিআই যে ভাবে ঘটনার তদন্ত করেছে, তাতে নির্যাতিতার পরিবার প্রবল ক্ষুব্ধ। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ‘প্রত্যাশা’ রেখে যে কোনও লাভ হয়নি, সে কথাও তাঁরা বলছেন। সূত্রের খবর, রাজ্যে কী পরিস্থিতির মুখোমুখি তাঁদের হতে হচ্ছে, সেই রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নজরে এনেছেন বিরোধী দলনেতা। এখনও পর্য্ত যা ঠিক আছে, আগামী সপ্তাহের গোড়ায় শুভেন্দু দিল্লি যাচ্ছেন। আগামী ২৮-২৯ জানুয়ারি দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে তাঁর থাকার কথা। একটি সূত্রের ইঙ্গিত, সেই সময়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে দেখা করে আর জি কর-সহ বাংলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার চেষ্টা করতে পারেন তিনি।
প্রসূতি মৃত্যুর প্রতিবাদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিবের গ্রেফতারির দাবিতে আগেই বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্য ভবন ‘অভিযান’ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। একই জায়গায় তিন দিন পরে অবস্থানের কর্মসূচি নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, “আগের কর্মসূচি ছিল পরিষদীয় দলের। এই কর্মসূচি হবে দলীয় সংগঠনের।” যদিও সেই কর্মসূচিতে সামান্য লোক হয়েছিল। এর পরে শুক্রবার ‘সচেতন নাগরিক সমাজে’র ডাক সামনে রেখে, চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়ে শুভেন্দু ফের পথে নেমেছিলেন। কলেজ স্কোয়ার থেকে কলেজ স্ট্রিট, মহাত্মা গান্ধী রোড, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ হয়ে মহম্মদ আলি পার্ক পর্যন্ত মিছিলে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল, বিজেপির উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ, শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, আইনজীবী-নেতা কৌস্তভ বাগচী, চিকিৎসক শাখার নেতা শারদ্বত মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। বিরোধী দলনেতার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছে দাবিপত্রও দিয়েছে। প্রতিনিধিদলে ছিলেন স্যালাইন-কাণ্ডের অন্যতম ভুক্তভোগী মাম্পি সিংহের স্বামী কার্তিক সিংহ।
মিছিলের শুরু ও শেষে সংক্ষিপ্ত সভা ছিল। সভায় শুভেন্দু বলেন, “চারটে দাবি নিয়ে পথে নেমেছি। রাজ্য সরকার ভেজাল স্যালাইনের বিষয়ে গত ১০ ডিসেম্বর জেনেছিল। তার পর থেকে কয়েক হাজার প্রসূতি, নবজাতককে এই স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। কিডনিতে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাঁদের নামের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।” বিরোধী দলনেতার আরও দাবি, “চিকিৎসকেরা জাতীয় সম্পদ। তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর, সাসপেনশন প্রত্যাহার করতে হবে।” রাজ্য সরকারের দেওয়া ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “পাঁচ লক্ষ টাকায় হবে না। যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা এবং যাঁরা এখনও চিকিৎসারত আছেন, তাঁদের অন্তত ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে।” সেই সঙ্গে তিনি ফের দাবি তুলেছেন, “সব দায় নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিবের জেল চাই!”
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘‘স্যালাইনে সমস্যা থাকলে তদন্ত হবে। পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, সিনিয়র চিকিৎসকেরা ছিলেন না। জুনিয়রদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হল। মৃত্যু হল। তারও তদন্ত হচ্ছে। পুলিশের সেই তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। তাতে রাজনৈতিক দল বাধা দেবে কেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy