Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Suvendu Adhikari

স্পিকার ডাকলে আবার এসে তাঁর হাতেই ইস্তফা দিয়ে যাবেন ‘মুক্ত’ শুভেন্দু

শুভেন্দুর ইস্তফাপত্রের বয়ান নিয়েও আপত্তি তোলা হচ্ছে বলে বিধানসভা সূত্রের খবর। ইস্তফাপত্রে তারিখ দেওয়া নেই বলেও প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।

স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (বাঁ-দিকে) অনুপস্থিতিতে শুভেন্দুর ইস্তফপত্র দেওয়া কি বৈধ? উঠেছে প্রশ্ন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (বাঁ-দিকে) অনুপস্থিতিতে শুভেন্দুর ইস্তফপত্র দেওয়া কি বৈধ? উঠেছে প্রশ্ন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:৫০
Share: Save:

স্পিকারের হাতে সরাসরি তাঁর ইস্তফাপত্র জমা না দেওয়া নিয়ে যে ‘জটিলতা’ তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে একেবারেই মাথা ঘামাচ্ছেন না শুভেন্দু অধিকারী বা তাঁর শিবির। বুধবার বিকালে শুভেন্দু যখন বিধানসভা ভবনে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দিতে যান, তখন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় ছিলেন না। তাঁর অনুপস্থিতিতে শুভেন্দু স্পিকারের সচিবের কাছে তাঁর ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে সেটির একটি প্রতিলিপি ‘রিসিভ’ করিয়ে নিয়ে আসেন। তার পরেই ওই ইস্তফপত্রের ‘বৈধতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু হয়।

নিয়মানুযায়ী, কোনও আইনসভা থেকে কোনও জনপ্রতিনিধিকে ইস্তফা দিতে হলে তাঁকে সশরীরে সেই আইনসভার স্পিকার (লোকসভা এবং বিধানসভার ক্ষেত্রে) বা চেয়ারম্যানের (রাজ্যসভার ক্ষেত্রে) কাছে গিয়ে ইস্তফা দিতে হয়। না হলে তা ‘গ্রাহ্য’ না-ও করতে পারেন সংশ্লিষ্ট স্পিকার বা চেয়ারম্যান। বুধবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন বলেছেন, ‘‘শুভেন্দু আমার কাছে তাঁর ইস্তফা দেননি। আমি বিধানসভায় গিয়ে শুভেন্দুর ইস্তফাপত্র দেখব। তবে এটা রীতি নয়।’’ বস্তুত, ইস্তফাপত্রের বয়ান নিয়েও আপত্তি তোলা হচ্ছে বলে বিধানসভা সূত্রের খবর। ইস্তফাপত্রে তারিখ দেওয়া নেই বলেও প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।

তবে শুভেন্দুর তা নিয়ে কোনও হেলদোল নেই বলেই তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি। বুধবার সন্ধ্যায় এক শুভেন্দু-অনুগামী বলেন, ‘‘স্পিকার ডাকলে দাদা আবার গিয়ে তাঁর সামনে বসে ইস্তফাপত্রে সই করে দিয়ে আসবেন। উনি তো এখন মুক্ত মানুষ। ফলে তাতে আর অসুবিধার কী আছে। মোদ্দা কথা হল, উনি নীতির পথে অটল থেকে বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছেন। মানুষের কাছে দাদা দায়বদ্ধ। রাজনীতির কাছেও উনি নীতি এবং আদর্শের দিক দিয়ে দায়বদ্ধ। তাই রাজনৈতিক দিক দিয়ে অবস্থান বদলের আগে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। ঠিক যেমনটা তিনি আগে বলেছিলেন।’’ ওই অনুগামীর আরও বক্তব্য, ‘‘স্পিকার নিশ্চয়ই চিঠি দিয়ে দাদাকে ডাকবেন। সেই চিঠি পেলে দাদা নিশ্চয়ই আবার গিয়ে তাঁর হাতে ইস্তফা দিয়ে আসবেন। স্পিকারও তখন দাদার ইস্তফা আবার র্গহণ করার জন্য বিধানসভায় তাঁর দফতরে থাকবেন।’’ পাশাপাশিই ওই অনুগামীর ‘গর্বিত’ মন্তব্য, ‘‘দাদা মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দিয়েছেন। এবার বিধায়ক পদেও ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁকে দেখে অন্য রাজনীতিকদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।’’

আরও পড়ুন: ষড়যন্ত্র হচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে, হস্তক্ষেপ চেয়ে রাজ্যপালকে চিঠি দিলেন শুভেন্দু

প্রশ্ন হল, শুভেন্দু কি এবার তৃণমূলের সঙ্গেও আনুষ্ঠানিক ভাবে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করবেন? তাঁর শিবিরের বক্তব্য, বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার আগে তিনি তৃণমূল থেকেও ইস্তফা দিতে চান। তাঁর শিবিরের এক নেতার কথায়, ‘‘অন্য দলে যাওয়ার আগে শুভেন্দু অধিকারী নিজেকে সম্পূর্ণ মুক্ত করেই যাবেন। যে সমস্ত রাজনৈতিক নেতা বিধানসভার নথিতে একটি দলের সদস্য আর বাইরে অন্য দলের, শুভেন্দু অধিকারী তাঁদের মধ্যে পড়েন না!’’

আরও পড়ুন: ইচ্ছে করছে দল ছেড়ে চলে যাই, মমতার মূল মঞ্চে জায়গা না পেয়ে ক্ষুব্ধ ভূষণ

শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ সূত্রের আরও দাবি, বৃহস্পতিবার শুভেন্দুর দিল্লি যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা বুধবার রাত পর্যন্ত নেই। বৃহস্পতিবার তাঁর পূর্ব মেদিনীপুরের নিমতৌড়িতে একটি ‘অরাজনৈতিক’ কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরদিন সেখানে গেলে তিনি কী বলেন, তা নিয়েও কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy