Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Suvendu Adhikari

ভোটে ‘বঞ্চিত’দের নিয়ে রাজভবনে শুভেন্দু, কটাক্ষ তৃণমূলের

শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি দেশের নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছি। যদি তারা আবেদন মঞ্জুর করে, তা হলে আমি ভোট দিতে পারেননি, এমন অন্তত পাঁচ জনকে সঙ্গে করে নিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করব।’’

শুভেন্দু অধিকারী।

শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৫
Share: Save:

রাজভবনের সামনে ধর্না দিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা করেছিলেন, উপনির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি, এমন ১০০ জন নাগরিককে নিয়ে এসে জমায়েত করবেন। ঘোষণা মতো মঙ্গলবার ১০০ জনকে নিয়ে তিনি দেখা করলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে। বিরোধী দলনেতার দাবি, ‘‘রাজ্যপালকে বলে এসেছি, এঁদের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি দেশের সাংবিধানিক প্রধান। আপনাকে এঁদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির দেখা করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করিয়ে দিতে হবে।’’ সেই সঙ্গে তিনি বিষয়টি নিয়ে আইনি লড়াই করবেন বলেও জানিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য বিরোধী দলনেতার এই উদ্যোগকে ‘পরাজিতের আর্তনাদ’ বলে কটাক্ষ করেছে।

শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি দেশের নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছি। যদি তারা আবেদন মঞ্জুর করে, তা হলে আমি ভোট দিতে পারেননি, এমন অন্তত পাঁচ জনকে সঙ্গে করে নিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করব।’’ রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার-সহ ৩৭১ জন ভোটকর্মীর তালিকা প্রকাশ্যে আনার পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা উপনির্বাচনে রায়গঞ্জে গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া, চোপড়া থেকে লোক নিয়ে গিয়ে তৃণমূল ভোট লুট করেছে। বাকি বিধানসভাগুলিতেও প্রকৃত ভোটারদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর মন্তব্য, “শুধু তৃণমূলের প্রতীক বাদে ইভিএমে বাকি প্রতীক ঢেকে দেওয়া, তৃণমূলের প্রতীকে সুগন্ধী ঢেলে রাখা, ভোটারেরা ভোট দিয়ে বেরোনোর পরে তাঁদের আঙুলের গন্ধ পরীক্ষা করা—এইগুলো কোনও সভ্য সমাজে হয়? ভারতের কোথাও এই ভাবে ভোট হয়?”

নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের দাবি তুলে তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাত-পা বাঁধা। তাঁদের বুথের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। তাঁদের সচিত্র পরিচয়পত্র পরীক্ষা করার অনুমতি দিতে হবে। ওয়েব কাস্টিং দেখতে পাওয়ার সুযোগ সব প্রার্থীকে দিতে হবে। গণনা প্রক্রিয়া সরাসরি সম্প্রচার করতে হবে। না হলে প্রতিটা ভোটে তৃণমূল এই একই পদ্ধতিতে ভোট করবে।” তৃণমূলের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের অবশ্য পাল্টা মন্তব্য, ‘‘হারতে হারতে হারাধন হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী! এখন রাজ্যপালের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করে হাওয়া গরমের চেষ্টা করছেন! রাজ্যপাল কী করবেন? নির্বাচন পরিচালনায় তাঁর কোনও ভূমিকা আছে?’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘জাতীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্য বিজেপির সমস্ত অভিযোগ ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। তার পরেও শুভেন্দুর এই গলাবাজি শুধু পরাজিতের আর্তনাদ এবং অতি নিম্ন রাজনীতি।’’

উপনির্বাচন নিয়ে এই তরজার মধ্যেই লোকসভা নির্বাচনের পরে আজ, বুধবার প্রথম বারের জন্য বৈঠকে বসছে রাজ্য বিজেপি। সায়েন্স সিটি প্রেক্ষাগৃহে রাজ্য কার্যনির্বাহী সভায় উপস্থিত থাকার কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরের। উপস্থিত থাকতে পারেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষের। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে তীক্ষ্ণ করতে দলের বৈঠকে নবান্ন অভিযানের প্রস্তাব দিতে পারেন বিরোধী দলনেতা। আগামী দিনে রাজ্য বিজেপি কোন পথে চলবে, সেই নিয়ে বৈঠকে যেমন আলোচনা হবে, তেমনই লোকসভা নির্বাচনের কাটাছেঁড়ায় বৈঠকে একাধিক নেতার তোপের মুখে পড়তে হতে পারে রাজ্য নেতৃত্বকে। তার আগে আইসিসিআর-এ মঙ্গলবার বিস্তারকদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দিলীপ। সেই সময়েই বিধাননগরে দলের পদাধিকারীরা বৈঠকে বসেছিলেন কার্যনির্বাহী বৈঠকের প্রস্তুতি নিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suvendu Adhikari C V Ananda Bose
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE