বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে মিড ডে মিলের পরিস্থিতি দেখতে সোমবারই আসছে কেন্দ্রীয় দল। তার আগে নতুন বিতর্ক উস্কে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি শনিবার সকালে টুইট করে দাবি করেন, মিড ডে মিলের জন্য কেন্দ্রের বরাদ্দ অর্থের একাংশ বগটুই কাণ্ডে ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যবহার করা হয়েছে। বিকেলে এই অভিযোগের জবাবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা প্রশ্ন করেন, গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানো কি অর্থনৈতিক অপরাধ? যদিও এই প্রশ্নের জবাবে শুভেন্দু সন্ধ্যায় বলেন, অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি তিনি কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন। আরও দাবি করেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আশ্বাস, কেন্দ্রীয় দল ঘুরে গেলেই বিষয়টি দেখতে অডিটের দল আসবে। প্রশাসনিক সূত্রে কিছু বলতে চাওয়া হয়নি। তবে একটি সূত্রের দাবি, কোন খাত থেকে টাকা খরচ হয়েছে জানা নেই, কিন্তু মিড ডে মিলের টাকা এ ভাবে খরচ করা যায় না।
রাজ্য সরকার এক তহবিলের টাকা অন্য খাতে খরচ করছে— শনিবার এমন অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষও। জলপাইগুড়ি জেলায় মাল নদীতে হড়পা বানে মৃতদের পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা স্বাস্থ্য দফতরের বরাদ্দ থেকে দেওয়া হয়েছে— এমন দাবি তোলেন দিলীপ। তিনিও রাজ্যের বিরুদ্ধে আর্থিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং কোষাগার শূন্য করে ফেলার অভিযোগ এনেছেন। একই প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দুও। এ দিন চেকের ছবি দিয়ে টুইট করে শুভেন্দুর দাবি, ‘‘মনে হচ্ছে রাজ্য সরকার আর্থিকভাবে এমন দেউলিয়া যে, রাজ্য সরকার বা মুখ্যমন্ত্রীর আপৎকালীন তহবিলে কোনও টাকা নেই।’’ মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব ও বীরভূমের জেলাশাসকের এই ‘আর্থিক অপরাধে’র বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে তিনি কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কাছে দাবি জানাবেন বলেও লেখেন শুভেন্দু। সন্ধ্যা তিনি বলেন, ‘‘(এর ফলে) বিডিও, জেলাশাসকেরা সাসপেন্ড হবেন। মুখ্যমন্ত্রী কেন চেক দিয়েছেন, সেই তদন্ত হবে।’’
বিকেলে অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, ‘‘উনি কি বলতে চাইছেন, গ্রামবাসীদের সাহায্য করা উচিত হয়নি?’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘মিড ডে মিলের টাকা, না কোথাকার টাকা, সেটা প্রশাসন দেখবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, উনি কি বলতে চাইছেন যে, এই সাহায্য করা উচিত নয়? যেখান থেকেই যাক, সরকারের টাকা।’’ অভিষেকের আরও দাবি, ‘‘আমি মিড ডে মিল থেকে দিই, অর্থ দফতর থেকে দিই বা সেচ দফতর থেকে দিই। টাকা তো রাজ্য সরকার দিচ্ছে।’’ এর পরেই তিনি বিজেপিকে বিঁধে বলেন, ‘‘২০ হাজার কোটির সেন্ট্রাল ভিস্তা করে বা ৮ হাজার কোটির বিমান কেনা তো সব থেকে সব থেকে বড় অর্থনৈতিক অপরাধ।’’ নোটবন্দি ও লকডাউনের প্রসঙ্গ টেনেও বিজেপির সমালোচনা করেন অভিষেক। তাঁর মন্তব্য, ‘‘একটা মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো অপরাধ হলে, আমাদের সরকার সেই অপরাধ একশো বার করবে।’’
অভিষেকের কথার জবাবে শুভেন্দু সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সামনে বলেন, ‘‘আমার টুইট না বুঝে অর্ধ-শিক্ষিতের মতো মন্তব্য করেছেন। উনি ক্ষতিপূরণ ৫ লক্ষই দিন বা ২৫ লক্ষ, টাকাটা কোথা থেকে দেওয়া হয়েছে? শিশুদের পুষ্টিকর খাদ্য মিড-ডে মিলে দেওয়ার জন্য কেন্দ্র টাকা দেয়। সেই টাকা বিডিওদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। এই ভাবে মিড-ডে মিলের টাকা, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের (বিপর্যয় মোকাবিলার) টাকা খরচ করা যায় না।’’ দাবি, এই টাকা অ্যাকাউন্টে থাকলে সুদ জমে। তাতেও সুবিধা হয়।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে কিছু বলতে চাওয়া হয়নি। তবে বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘কোন তহবিল থেকে টাকা খরচ হয়েছে, সেটা আমার জানা নেই। তবে যে কোনও তহবিল থেকে টাকা নেওয়া হলেও সেটা নিয়মমাফিক যথারীতি পূরণ করে দেওয়া হয়েছে।’’ জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘‘বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের তহবিল থেকে যথাযথ অনুমোদন ও প্রক্রিয়া মেনেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy