হাওড়ার নেতাদের নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৈঠক করেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে আসা হাওড়ার নেতাদের নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৈঠক করেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। ওই নেতাদের কেউ কেউ বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হলেও জিততে পারেননি। তাঁদের সঙ্গে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা কেন বৈঠক করলেন, তা নিয়ে রাজ্য বিজেপি-তেই নানা জল্পনা। অনেকের বক্তব্য, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া নেতাদের দলীয় কাজে ‘সক্রিয়’ করতেই এই উদ্যোগ শুভেন্দুর। কারণ, রাজীব সম্প্রতি ‘বেসুরে’ বাজছেন।
ওই বৈঠকে হাওড়া পুরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে খবর। তবে ওই বৈঠকে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ উপস্থিত ছিলেন না। যদিও সেই বিষয়টিকে বিজেপি-র অন্দরে খুব আমল দেওয়া হচ্ছে না। দলের একাংশের বক্তব্য, শুভেন্দু বিরোধী দলনেতা হিসেবে পরিষদীয় বা ভোটের রাজনীতিতেই বেশি সক্রিয়। সেটাই তাঁর কাজ। সেই লক্ষ্যেই তাঁর ওই বৈঠক। ফলে দিলীপ সেখানে না থাকলেও পরিস্থিতির কিছু রদবদল হয় না বা তা নিয়ে জল্পনারও কোনও অবকাশ নেই।
মঙ্গলবারের বৈঠকে ছিলেন হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র তথা গত বিধানসভা নির্বাচনে শিবপুর আসনের বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তী, বালি আসনের প্রার্থী তথা প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। তাঁরা ছাড়াও ছিলেন নির্বাচনের আগে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া তৃণমূলের দুই প্রাক্তন বিধায়ক জটু লাহিড়ি ও শীতল সর্দার। প্রসঙ্গত, এঁরা সকলেই গত ডিসেম্বরে বিজেপি-তে যোগ দেন। নেতৃত্বে ছিলেন ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব। চার্টার্ড বিমানে চেপে রাজীবের সঙ্গেই দিল্লিতে অমিত শাহর বাড়ি গিয়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন রথীন ও বৈশালী। শুভেন্দুর বৈঠকে ছিলেন একদা হাওড়া জেলা তৃণমূলের নেতা সুপ্রীতি চট্টোপাধ্যায়ও।
সম্প্রতি রাজীবের বিভিন্ন ফেসবুক পোস্টে বিজেপি-তে তাঁর থাকা নিয়েই সংশয় এবং জল্পনা তৈরি হয়েছে। নেটমাধ্যমে প্রথমে বিজেপি এবং পরে শুভেন্দুকে আক্রমণ করে পোস্ট, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেই জল্পনা আরও জোরাল করেছে। ভোটের পর থেকেই বিজেপি-র সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করা এবং সম্প্রতি দলের কার্যকারিণী বৈঠকে ডাক পেয়েও যোগ না দিয়ে সেই জল্পনা আরও কয়েক ধাপ বাড়িয়েছেন খোদ রাজীব। এরই প্রেক্ষিতে অনেকের মনে প্রশ্ন, রাজীবের সঙ্গে যাঁরা বিজেপি-তে এসেছিলেন তাঁদের অবস্থান কী? মঙ্গলবারের বৈঠকে শুভেন্দু কি তা জানতে চেয়েছেন? রথীনের বক্তব্য, ‘‘আমরা কোনও ভাবেই দল পরিবর্তনের কথা ভাবছি না। হাওড়ার আমরা যাঁরা বৈঠকে ছিলাম তাঁরা একসঙ্গেই থাকতে চাই।" তবে রথীন এটা মানতে রাজি নন যে, তাঁরা রাজীবের হাত ধরেই বিজেপি-তে গিয়েছিলেন। বুধবার আনন্দবাজার অনলাইনেক রথীন বলেন, "রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় হয়তো সেই সময়ে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তবে শুধু রাজীব বলেই নয়। অনেকেই সেই সময় আমাদের বিজেপি-তে চেয়েছিলেন।"
রথীন আরও জানিয়েছেন, শুভেন্দু তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। সেই মতো তাঁর বাড়িতেই হয় বৈঠক। রথীন বলেন, "উনি প্রাথমিক ভাবে বলেছিলেন, হাওড়ার সকলের সঙ্গে একটু কথা বলতে চান। আগামী দিনে আমরা কী ভাবে চলব আর উনি কী চাইছেন, সেটা নিয়েই প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে।" বিজেপি সূত্রে খবর, রথীন চান হাওড়া পুরসভা নির্বাচনে বিজেপি তাঁকেই ‘মুখ’ করে লড়ুক। তা নিয়েও মঙ্গলবার তাঁর একপ্রস্ত কথা হয়েছে শুভেন্দুর সঙ্গে। তবে রথীন বলছেন, ‘‘এটা নিয়ে আগামী দিনে দলে আলোচনা হবে। তার পরেই বিষয়টা ঠিক হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy